রবিচন্দ্রন অশ্বিন যতটা ক্রিকেটার, ততটাই একজন ইউটিউবারও। যেকোনো ম্যাচ নিয়ে বিশ্লেষণ, প্রিভিউ তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে দেখা যায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেও দলগুলোর শক্তিমত্তা, দুর্বলতা নিয়ে কথা বলেছেন এই অলরাউন্ডার।
বাংলাদেশ দল নিয়ে বিশ্লেষণে অশ্বিনের সঙ্গে ছিলেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষক প্রসন্ন অগোরাম আর সাবেক ক্রিকেটার রবিন উথাপ্পা। এই বিশ্লেষকদের কারও মতে, বাংলাদেশের এই দলে কিছুই নেই। আবার কেউ মনে করেন, বিশ্বকাপে মোস্তাফিজুর রহমান ‘এক্স ফ্যাক্টর’ হতে পারেন।
বর্তমানে বাংলাদেশ দলে তিন নম্বরে ব্যাটিং করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। সব মিলিয়ে ৩৯টি ম্যাচের মধ্যে ২০টিতেই তিন নম্বরে খেলেছেন নাজমুল, যার বেশির ভাগই গত এক বছরের মধ্যে। তবে সংখ্যা বলছে, তিন নম্বরে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান।
নাজমুলের আগে অধিনায়ক থাকার সময় সাকিবও তিনে ব্যাট করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। আর এ কথা তিনি সংবাদমাধ্যমে কয়েকবার বলেছেন। টি-টোয়েন্টিতে তাঁর ব্যাটে সবচেয়ে বেশি রানও এ পজিশনেই—৪২ ইনিংসে ১০৮৫। ক্যারিয়ারের ১২ ফিফটির ৭টিও করেছেন তিনে নেমে। সাকিব তিনে খেলে হাজারের বেশি রান করেছেন ২৯.৩২ গড় আর ১২৩.১৫ স্ট্রাইক রেটে।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও সাকিবের কলকাতা নাইট রাইডার্সের পুরোনো সতীর্থ উথাপ্পাও মনে করেন, তিন নম্বরে ভালো খেলতেন সাকিবই। তবে নাজমুলের সীমাবদ্ধতার কারণেই সাকিব তিনে খেলতে পারছেন না। তিনি বলেছেন, ‘সাকিব তিন নম্বরে ভালো করত। কিন্তু যেহেতু শান্ত (নাজমুল) আছে, তাকে তিন নম্বরে খেলাতে হবে। কারণ, চার নম্বরে সে তেমন কিছু করতে পারবে না। মনে হয় না ওর ব্যাটিংয়ের দুটো গিয়ার আছে।’
এই দলে সব বিভাগের ঘাটতি আছে বলে মনে করেন উথাপ্পা, ‘তাওহিদ হৃদয় দারুণ একজন ব্যাটসম্যান। জাকেরের ব্যাটিং দেখা হয়নি। সব মিলিয়ে নিখুঁত ব্যাটিং লাইনআপ। বোলিংয়ের ক্ষেত্রে শেষ করতে হবে তাসকিন ও ফিজকে। তবে তাদের সব জায়গায় ঘাটতি আছে। এখনো নিজেকে প্রমাণ করতে পারেনি, এমন ক্রিকেটার আছে। জানি না তারা বিশ্বকাপে কেমন করবে। তারা কীভাবে আমাদের ভুল প্রমাণ করবে, আমি জানি না।’
এবারের বিশ্বকাপের উইকেট কিছুটা ধীরগতির হতে পারে। এমন ধারণা থেকেই অশ্বিন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার গ্রুপে পড়েছে। তাদের সুযোগ আছে। তবে আমার মতে দলটা এমন, যার ৬ নম্বর বোলার নিয়ে সীমাবদ্ধতা আছে। আমার মনে হয়, শেষ দিকে মোস্তাফিজ এক্স ফ্যাক্টর হবে, বিশেষ করে ক্যারিবিয়ান পিচে।’
বাংলাদেশ দলকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে শুধু দুর্বলতাই চোখে পড়েছে প্রসন্নর, ‘এই ব্যাটিং লাইনআপের ৪ থেকে ১১ নম্বরের দিকে যদি তাকাই, কে খেলা প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারেন, আমি জানি না। বোলিংয়ের ক্ষেত্রে মিডল ওভারে কে উইকেটশিকারি হবে? বাংলাদেশের টপ থ্রিতে খেলবে তানজিদ, লিটন, শান্ত (নাজমুল), এরা কি শক্তিশালী? না। মিডল অর্ডারে তাদের ইনিংসের গতি বাড়ানোর মতো কেউ আছেন? না। তাদের কি ফিনিশার আছে? না।’
প্রসন্নর কথা শুনে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ দলের আসলে কিছুই নেই। এর মধ্যেও কি অশ্বিনের কথা সত্য প্রমাণ করে ‘এক্স ফ্যাক্টর’ হতে পারবেন মোস্তাফিজ! বিশ্বকাপে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, ৮ জুন ডালাসে। সেদিন থেকেই এসবের উত্তর পাওয়া শুরু হবে।