‘স্যার এটা কী বললেন!’—কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের মন্তব্যে হতবাক এক ক্রিকেটারের প্রতিক্রিয়া।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে প্রায় সব ক্রিকেটারই ‘স্যার’ সম্বোধন করেন। জাতীয় দলের সাবেক সহকারী কোচ সালাউদ্দিন এবারের বিপিএলে একাধিকবার স্থানীয় ক্রিকেটারদের কড়া সমালোচনা করেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন তাঁদের ক্রিকেট–জ্ঞান নিয়েও। স্থানীয় ক্রিকেটারদের ‘কাণ্ডজ্ঞান নেই’, বেশির ভাগ ক্রিকেটার ‘মাথাছাড়া’—স্থানীয় ক্রিকেটারদের সম্পর্কে এই হলো সালাউদ্দিনের মূল্যায়ন।
কোচের মুখে এমন কথা শুনে অনেক ক্রিকেটারই মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। অনেকে সালাউদ্দিনের কাছ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা শোনার অপেক্ষায় আছেন। এক ক্রিকেটার বলছিলেন, ‘স্যারের কথাটা ঠিক বুঝতে পারিনি। তিনি নিশ্চয়ই ম্যাচের নির্দিষ্ট কোনো মুহূর্ত নিয়ে কিছু একটা বোঝাতে চেয়েছেন। তবে সেটা তাঁর কথায় পরিষ্কার হয়নি।’
আরেক ক্রিকেটার সালাউদ্দিনের উদ্দেশে বলেছেন, ‘এমন মন্তব্য প্রত্যাশিত নয়। আমি খুব অবাক হয়েছি। ম্যাচের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে একেক ক্রিকেটার একেক রকম প্রতিক্রিয়া দেখায়। সেটা সেই ক্রিকেটারের স্কিলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এভাবে বললে ক্রিকেটাররাও একটা পর্যায়ে কোচদের দিকে আঙুল তুলবে। খেলোয়াড় তো তাদের হাত ধরেই তৈরি হয়।’
বিপিএল দলগুলোর সেরা পারফর্মারদের তালিকায় বরাবরই বিদেশি ক্রিকেটারদের ভিড়। তবে এবার ভিন্ন চিত্র। এখন পর্যন্ত বিপিএলের সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে চারজনই স্থানীয়। সেরা পাঁচ বোলারের তালিকায়ও দুজন স্থানীয় ক্রিকেটার আছেন।
জাতীয় দলের আরেক ক্রিকেটার সালাউদ্দিনের মন্তব্যের জবাবে সামনে নিয়ে এলেন এ প্রসঙ্গ, ‘এবারের বিপিএলের পারফরম্যান্সের বিষয়েই হয়তো কথাটা হচ্ছে। কিন্তু এবার তো স্থানীয়রা ভালো করছে! ব্যাটসম্যানরা তো কমবেশি সবাই ভালো করছে। এটা অন্য সময় দেখা যায় না। অনেক নতুন পেসারও বেরিয়ে এসেছে। তারাও ভালো করছে।’
সালাউদ্দিনের সঙ্গে দ্বিমত আছে ফরচুন বরিশালের কোচ নাজমূল আবেদীনেরও, ‘আমার মনে হয়, খুব হতাশ হয়ে ও কথাটা বলেছে। আমি নিশ্চিত, যেভাবে বলেছে, ব্যাপারটা সে রকম নয়।’
ক্রিকেটারদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার দায় যে কোচদেরও আছে, সেটাও স্বীকার করেছেন নাজমূল আবেদীন, ‘এটা ঠিক যে আমরা ক্রিকেটারদের কাঁধের ওপর যে অংশটা থাকে, সেটার প্রতি খুব কম গুরুত্ব দিই। আমরা তাদের শারীরিকভাবে ফিট ও দক্ষ করে তোলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকি। খেলার মধ্যে যে মানসিক দক্ষতার ব্যাপারটা থাকে, আত্মবিশ্বাসী হওয়া বা ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকা, নেতৃত্বগুণ—আমরা খেলোয়াড়দের এসব শেখানোরই চেষ্টা করি না। যে কারণে খুব জটিল মুহূর্তে ওরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।’