‘ফিফটি ফিফটি’ ম্যাচে চাপ পাকিস্তানের ওপর

যে আগ্রহ নিয়ে এশিয়া কাপের এ পর্বের ম্যাচগুলো আমরা বাংলাদেশ থেকে দেখছিলাম, গত পরশুর ম্যাচে সেটি শেষ হয়ে গেছে। শ্রীলঙ্কার কাছে ভারত হারলে তবুও একটা সুযোগ থাকত বাংলাদেশের। ফলে এই প্রথম একটা ম্যাচ দেখব, যেখানে বাংলাদেশের কোনো সম্ভাবনার সমীকরণ নেই। আমাদের কতটুকু আকর্ষণ করবে, সেটি প্রশ্ন।

কিন্তু ম্যাচটা শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এ নিয়ে সংশয় নেই। পাকিস্তান এশিয়া কাপে এসে যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলছিল, সেখানে শ্রীলঙ্কাকে খুব কঠিন প্রতিপক্ষ না মনে করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকত না। কিন্তু এখন শ্রীলঙ্কা যেভাবে খেলছে এবং ভারতের কাছে এমন হারের পর পাকিস্তান আস্থাহীনতায় ভুগতেই পারে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দুই পেসার নাসিম শাহ ও হারিস রউফের চোট।

এরপরও পাকিস্তান এখনো শক্তিশালী। কিন্তু শ্রীলঙ্কাকে কখনোই হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। ওদের হয়তো আলাদা করে তেমন বড় মাপের খেলোয়াড় নেই; কিন্তু যাঁরাই আছেন, তাঁরা এত গুছিয়ে খেলেন, রিসোর্সের এত ভালো ব্যবহার করেন, এত ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলেন—এটিই বোধহয় সবচেয়ে বড় শক্তি। পাকিস্তানকে ভারত ওভাবে হারিয়েছে, এরপরও সেই ভারতের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা কিন্তু একইভাবে খেলেছে জেতার জন্যই। সুযোগ পেলেই ভারতকে চাপে ফেলেছে। ওদের ইতিবাচক মানসিকতা আজও দেখতে পাব বলে মনে হয়। আলাদা করে নজর থাকবে ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত করা দুনিত ভেল্লালাগের ওপরও। অন্যদিকে পাকিস্তান কিছুটা চাপের মুখে কেমন খেলে, সেটি দেখা যাবে।

ওদের ইতিবাচক মানসিকতা আজও দেখতে পাব বলে মনে হয়।

আমার ধারণা, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো দল। বিশ্বকাপেও যেমন ওরা বাছাইপর্বে পেরিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ সরাসরি। দলীয় শক্তি, ব্যক্তিগত রেকর্ডেও শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশ ভালো; কিন্তু মাঠে শ্রীলঙ্কা সুযোগ কাজে লাগায়, খেলাটা পক্ষে না থাকলেও নিজেদের দিকে নিয়ে আসে, এমন অনেক উদাহরণ দেখি। এটিই বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার পার্থক্য গড়ে দেয়। এটি দল–সংশ্লিষ্ট সবারই খেয়াল করা উচিত। কেন শ্রীলঙ্কা মাঠে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো খেলে।

আজ সম্ভবত আগের ম্যাচের মতোই একটা উইকেট দেখব। এ ধরনের উইকেটে শ্রীলঙ্কার অনেক খেলার অভিজ্ঞতা, ওদের বোলিং শক্তিমত্তার সঙ্গেও স্বাভাবিকভাবেই যায়। অন্যদিকে পাকিস্তানের বোলিং পেস নির্ভর, স্পিন সেভাবে কার্যকর হতে দেখিনি। এ ধরনের উইকেটে শ্রীলঙ্কাই বাড়তি সুবিধা পাবে।

আরও একটি কথা বলা যায়, এ টুর্নামেন্ট থেকে শ্রীলঙ্কা অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপে যাবে। সে সুযোগ বাংলাদেশেরও ছিল; কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। অনেক চাপে থেকে শ্রীলঙ্কা বাছাইপর্ব পেরিয়ে এসেছে অনেকগুলো ম্যাচ জিতে। এ টুর্নামেন্টেও যে ক্রিকেট খেলেছে, সেটি ইতিবাচক।

পাকিস্তান চাপে থাকবে

আমার মনে হয়, এ ম্যাচের ফল অনুমান করা বেশ কঠিন। কাগজে-কলমে পাকিস্তান শক্তিশালী, সন্দেহ নেই। কিন্তু শ্রীলঙ্কার ডিসিপ্লিনড ক্রিকেটকে অনেক সম্মান করি আমি। প্রতিপক্ষ দলের ওপর যেভাবে চাপ তৈরি করে, সুযোগ পেলেই সেটি কাজে লাগায়। এ কারণে তাদের কোনোভাবেই পিছিয়ে রাখার সুযোগ নেই। তবে চাপ একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হতে যাচ্ছে। এ দল নিয়েও ফাইনালে যেতে পারবে না, সেই মানসিকতা নিয়ে হয়ত পাকিস্তান আসেনি। ফলে তারা চাপে থাকবে। ভালো একটা শুরু দিয়ে যদি সে চাপ উতরে যেতে পারে, তাহলে ভিন্ন কথা। নাহলে এটা ফিফটি-ফিফটি ম্যাচই।