নিজেদের সেরাটা থেকে ‘অনেক দূরে’ দাঁড়িয়ে আছেন ইংলিশ খেলোয়াড়েরা—এমন মনে করেন জস বাটলার। ঠিক কী কারণে এমন পরিস্থিতি, এর সোজাসাপটা কোনো উত্তর নেই ইংল্যান্ড অধিনায়কের কাছেও। শ্রীলঙ্কার কাছে বেঙ্গালুরুতে ৮ উইকেটের হারে বিশ্বকাপ থেকে অনেকটাই ছিটকে যাওয়ার পর এমন বলেছেন বাটলার। অধিনায়ক হিসেবে এমন পারফরম্যান্সের দায়টা শুরুতে গিয়ে তাঁর ওপর পড়ে বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচ খেলে শুধু বাংলাদেশকেই হারাতে পেরেছে ইংল্যান্ড। বাকি ৪ ম্যাচেই তারা হেরেছে বেশ বাজেভাবে, যার সর্বশেষটি আজ এসেছে বেঙ্গালুরুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আগে ব্যাটিং করে ১৫৬ রানেই গুটিয়ে গেছে একসময় আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দাপট দেখানো ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ। শ্রীলঙ্কা ম্যাচ জিতেছে ২৪.২ ওভার বাকি থাকতেই।
নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রথম ম্যাচে ৯ উইকেটে হারলেও বাংলাদেশকে ১৩৭ রানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড, তখন মনে হয়েছিল ঠিক পথে ফিরেছিল তারা। তবে আফগানিস্তানের কাছে ৬৯ রানে হেরে বড় ধাক্কা খাওয়া ইংল্যান্ড পরের দুই ম্যাচে উড়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার কাছে।
এমন পারফরম্যান্সের কারণ খুঁজতে গিয়ে আজ ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীতে অসহায়ত্বই ফুটে উঠল বাটলারের কণ্ঠে, ‘অনেক কঠিন আর হতাশার এক টুর্নামেন্ট যাচ্ছে। নিজের ওপর, আর সবার ওপরই হতাশ, কেউই নিজেদের সেরাটা দেখাতে পারিনি। (কেন এমন হচ্ছে), এর কোনো সোজাসাপটা উত্তর এই মুহূর্তে নেই।’
আত্মবিশ্বাস নেই কি না—সাবেক অধিনায়ক মাইকেল আথারটনের এমন এক প্রশ্নের জবাবে বাটলার বলেছেন, ‘সত্যি বলতে কি, তেমন নয়। ড্রেসিংরুমে অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছে, যারা অনেক কিছুর ভেতর দিয়ে গেছে, যারা অভিজ্ঞ। আপনি রাতারাতি বাজে খেলোয়াড় হয়ে যাবেন না, রাতারাতি বাজে দলও হয়ে যাবে না। আমার মনে হয়, সবচেয়ে বড় হতাশার এটিই। আমরা নিজেদের সেরা থেকে এতটা পিছিয়ে এবং সেটি নির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই। কোনো দিকে আসলে আঙুল তুলতে পারছি না এখন।’
এমন হওয়ার কারণটা না জানলেও বাজে পারফরম্যান্সের দায়টা ঠিকই নিচ্ছেন বাটলার, ‘দলের খেলোয়াড়দের চেষ্টার ত্রুটি দেখি না আসলে, তবে আমরা নিজেদের সেরা খেলাটা থেকে অনেক পিছিয়ে। এটি সামনে থেকেই শুরু হয়, অধিনায়ক হিসেবে আপনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চাইবেন এবং আমি নিজেই আমার সেরা পারফরম্যান্স থেকে অনেকটাই পিছিয়ে।’
২০১৯ বিশ্বকাপে পুরো টুর্নামেন্ট মিলিয়ে ১৩ জনকে খেলিয়েছিল ইংল্যান্ড, এবার নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে এসেই তারা ১৫ জনকে খেলিয়ে ফেলেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগেও দলে এনেছে তিনটি পরিবর্তন। তবে দল নির্বাচনে এ অধারাবাহিকতা নিয়ে সমস্যা দেখেন না বাটলার, ‘(হ্যাঁ) দল নির্বাচন এমন কিছু, যাতে আপনি ধারাবাহিক হতে চাইবেন, আস্থার জায়গাটি গড়ে তুলতে চাইবেন। তবে এই মুহূর্তে দল নির্বাচন নয়, পারফরম্যান্সই সমস্যা। মাঠে যারা নেমেছে, তারা কেউই নিজেদের মানটা ধরে রাখতে পারেনি। আমরা যে ভুল করছি, সাধারণত এমন খুব বেশি দেখবেন না। মৌলিক বিষয়গুলোই ঠিকমতো করতে পারছি না।’
এ হারের পর সেমিফাইনালের স্বপ্ন যদি টিকে থাকেও ইংল্যান্ডের, নিজেদের হাতে আর নেই সেটি। এখন পরের ম্যাচগুলো জিততে তো হবেই, সঙ্গে বেশ কিছু যদি-কিন্তুর ওপরও নির্ভর করতে হবে তাদের। পরের ম্যাচগুলোতে কিসের আশায় তাঁরা খেলবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে বাটলার বলেছেন, ‘সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে ব্যক্তিগত গর্ব। টুর্নামেন্টের পরের অংশে যা-ই ঘটুক না কেন, সামনে আমরা নিজেদের ভালো একটা পারফরম্যান্স দিতে চাই।’
এমন হারের পর খুব বেশি সময়ও পাবে না ইংল্যান্ড, ২৯ তারিখেই পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা ভারতের মুখোমুখি হবে তারা। ইংল্যান্ডের পরের ম্যাচগুলো অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।