গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এসে মোহাম্মদ সিরাজ ‘আশ্বস্ত’ করেছিলেন, ‘চিন্তার কিছু নেই’। তৃতীয় দিন শেষেও মিরপুর টেস্ট ছিল ‘ফিফটি-ফিফটি’ই। কিন্তু আজ সকালে প্রথম আধা ঘণ্টার মধ্যেই ৩ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় ভারত।
সে সময় ভারতের ড্রেসিংরুমেও চাপ আর নার্ভাসনেস টের পাচ্ছিলেন অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। টেস্ট সিরিজেও বাংলাদেশ ভারতকে নিয়মিত চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল বলেও মনে করেন রাহুল।
ভারতের অন্যতম ভরসা ঋষভ পন্ত যখন ফেরেন, জয়ের জন্য শেষ ৩ উইকেটে তাদের প্রয়োজন ছিল ৭১ রান। তবে সফরকারীরা এরপর আর কোনো উইকেট হারায়নি। রোহিত শর্মার চোটে ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়া রাহুল স্বাভাবিকভাবেই তাই ফেলেছেন স্বস্তির নিশ্বাস।
ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে এসে বললেন, ‘কঠিন ম্যাচ, খুশি যে কাজ শেষ করতে পেরেছি। আমরা ঝামেলায় ছিলাম, ড্রেসিংরুমে চাপ আর নার্ভাসনেসও ছিল। অশ্বিন ও শ্রেয়াসের জুটিতে জয় পাওয়াতে আসলেই অনেক খুশি।’
মিরপুরের এ উইকেটে প্রায় সবার জন্যই কিছু না কিছু ছিল। পেসাররা একেবারে অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়েননি, স্পিনাররা তো দাপটই দেখিয়েছেন। এমন কন্ডিশনে এমন টেস্ট জয় বাড়তি আনন্দই দিচ্ছে রাহুলকে, ‘কন্ডিশন কঠিন ছিল, টেস্ট ক্রিকেটের মজাটাই এখানে। যখন কন্ডিশন কঠিন, তখনই আপনার চারিত্রিক দৃঢ়তা বোঝা যাবে। আমরা এভাবে ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি। কঠিন ম্যাচ, তবে এটিই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জয়টাও তাই মধুর হয়েই থাকবে।’
ওয়ানডে সিরিজে হার দিয়ে সফর শুরু করেছিল ভারত। রাহুল বলছেন, বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ হারের শিক্ষা আগামী বছর তাঁদের দেশের মাটিতে হতে যাওয়া বিশ্বকাপে কাজে লাগবে, ‘সত্যিই ভালো সিরিজ। দারুণ অভিজ্ঞতা, অনেক কিছু শেখার ছিল। অবশ্যই ওয়ানডে সিরিজ হারটা তেমন সুখকর অভিজ্ঞতা নয়। তবে সিরিজ হারও আপনাকে অনেক কিছু শেখায়, বিশেষ করে ব্যক্তিগত ও দলীয় দিক দিয়ে আপনার অবস্থানটা কোথায় আর এটা ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
পুরো সফরেই বাংলাদেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে ভারতকে, মনে করেন রাহুল। টেস্ট সিরিজেও বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের প্রশংসাই করলেন তিনি, ‘টেস্ট সিরিজেও কঠিন লড়াই হয়েছে। বাংলাদেশ সত্যিই খুব খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছে। আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। এমনকি আজও। সিরিজের শেষটাও দারুণ হলো। তারা আমাদের কাজটা কঠিন করে তুলেছিল। প্রথম ৩০-৩২ ওভারে তো ম্যাচ তাদের হাতেই ছিল। অশ্বিন ও শ্রেয়াস এগিয়ে এসে আমাদের কাজটা শেষ করেছে।’
২০১৫ সালের পর এই প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে ভারত। এর আগে সর্বশেষ সফরে ওয়ানডে সিরিজে হেরেছিল তারা, তবে একমাত্র টেস্টটি বৃষ্টির কারণে হয়েছিল ড্র। এবার অবশ্য দুটি টেস্টেই ভারতের সঙ্গে লড়াই করেছে বাংলাদেশ। রাহুল বলছেন, আবার যখন আসবেন, কাজে লাগবে এবারের শিক্ষা, ‘দুর্দান্ত একটা সফর। পরবর্তী সময়ে যখন খেলতে আসব, যারাই এখানে এবার খেলে যাক না কেন, এ শিক্ষাটা কাজে লাগবে। আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হয়ে আসতে পারব।’