ভারতকে রেকর্ড লক্ষ্য তাড়ার আশা দেখাচ্ছেন বিরাট কোহলি
ভারতকে রেকর্ড লক্ষ্য তাড়ার আশা দেখাচ্ছেন বিরাট কোহলি

শেষ দিনে ভারতের দরকার ২৮০ রান, অস্ট্রেলিয়ার চাই ৭ উইকেট

রোহিত শর্মার উইকেটটাই কি অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে রাখল? বোধ হয়। কারণ, চতুর্থ ইনিংসে ৪৪৪ রানের পাহাড় ছুঁতে রোহিতের উইকেটে থাকাটা ভারতের জন্য বিশেষ প্রয়োজন ছিল। নাথান লায়নের বলে আউট হয়ে যেটা আর করতে পারেননি ভারতীয় অধিনায়ক।

রেকর্ড গড়ার লক্ষ্যে নেমে লন্ডনের ওভালে আজ চতুর্থ দিন শেষে ভারত তুলেছে ৩ উইকেটে ১৫৬ রান। দুই বছরের জন্য টেস্ট শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পেতে আগামীকাল পঞ্চম তথা শেষ দিনে ভারতের দরকার ২৮০ রান, অস্ট্রেলিয়ার চাই ৭ উইকেট।

কাল শেষ দিনের শুরুটা করবেন অজিঙ্কা রাহানে (২০*), সঙ্গে বিরাট কোহলি (৪৪*)। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, লন্ডনে কাল পুরো দিন আকাশ মেঘলা থাকবে। তবে বৃষ্টি নামার সম্ভাবনা কম।  

ওভালে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি ১২১ বছরের পুরোনো। ১৯০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৬৩ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ১ উইকেটে জিতেছিল ইংল্যান্ড। আর শুধু ওভালে কেন, ভারতকে জিততে হলে ১৪৬ বছরের টেস্ট ইতিহাসে নতুন এক রেকর্ড লিখতে হবে।

এর আগে টেস্টে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০০৩ সালের মে মাসে অ্যান্টিগায় অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৪১৮ রানের লক্ষ্য ছুঁয়েছিল তারা ৩ উইকেট হাতে রেখে।

রেকর্ড গড়ার লক্ষ্যে ভারতের শুরুটা হয়েছিল ওয়ানডে মেজাজে। প্রথম ৭ ওভারে দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল করেন ৪১ রান। গ্রিনের বিতর্কিত এক ক্যাচে বোল্যান্ডের বলে গিল আউট হলেও খেলার ধরন পাল্টাননি রোহিতরা।

১৯ ওভারে ৯১ রান তোলা ভারত ২০তম ওভারে হারায় রোহিতকে। এই ইনিংস খেলার পথে ওপেনার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৩ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন রোহিত।

নাথান লায়নের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েছেন রোহিত শর্মা

রোহিতের আউটের পর যখন সবাই ভাবছিলেন, উইকেটে থাকা চেতেশ্বর পূজারা তাঁর চিরাচরিত ধরন মেনে রয়েসয়ে ব্যাটিং করবেন। তবে পূজারা আউট হন নিজের চরিত্রের বাইরে গিয়ে কামিন্সের বলে আপার কাট খেলতে গিয়ে।

এর আগে ৪ উইকেটে ১২৩ রান তুলে গতকাল তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। আজ চতুর্থ দিন সকালটা দুর্দান্ত শুরু করেন ভারতের পেসাররা। কাল ৪১ রানে অপরাজিত থাকা লাবুশেন চতুর্থ দিনে কোনো রান যোগ না করেই আউট হন উমেশ যাদবের দলে। স্লিপে চেতেশ্বর পূজারার হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১২৬ বলে ৪ চারে ৪১ রান করেছেন লাবুশেন।

এরপর গ্রিনের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দেন ছন্দে থাকা অ্যালেক্স ক্যারি। দুজনে গড়েন ৪৩ রানের জুটি। মধ্যাহ্নবিরতির আগেই রবীন্দ্র জাদেজার বলে ফেরেন গ্রিন। স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে গ্রিনই ছিলেন ক্যারির সর্বশেষ সঙ্গী।

গ্রিনের এই ক্যাচ নিয়ে বিতর্ক চলছে

১৬৭ রানে ৬ উইকেট তুলে নেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়াকে তাই দ্রুত অলআউটের সুযোগ পেয়েছিল ভারত। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় জুটিটা হয়েছে সপ্তম উইকেটেই। মিচেল স্টার্ককে সঙ্গে নিয়ে ৯১ রান যোগ করেন ক্যারি। ভারতীয় বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি। স্টার্কও ব্যাট চালান ওয়ানডে ঢঙে, ৫৭ বলে করেন ৪১ রান।

দলীয় ২৬০ রানে এই জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ শামি। কিছুক্ষণ পর অধিনায়ক প্যাট কামিন্সেও ফেরান শামি। অস্ট্রেলিয়ার লিড ততক্ষণে ৪৫০ ছুঁই ছুঁই। এ রানই যথেষ্ট মনে হয়েছে কামিন্সের। নিজে আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাই ইনিংসের সমাপ্তিও ঘোষণা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক।