আবরার আহমেদকে লং অফ দিয়ে ছয় মেরে ফিফটি পূর্ণ করলেন। টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তাঁর দ্বিতীয় ফিফটি, তাও মাত্র ২৮ বলে। তবে চোখেমুখে কোনো উচ্ছ্বাসই দেখালেন না শাহিন শাহ আফ্রিদি। এক হাতে ব্যাট বগলদাবা করে আরেক হাতের এক আঙুল তুললেন ঠোঁটের সামনে। অর্থ একটিই, চুপ করতে বললেন কাউকে!
এমন উদ্যাপনে কাকে মুখ বন্ধ করতে বলছেন আফ্রিদি, আগের ম্যাচের ঘটনাপ্রবাহ যারা জানেন, তারা বুঝলেন সহজেই। ওয়াসিম আকরাম!
শনিবার পিএসএলের করাচি কিংস–লাহোর কালান্দার্স ম্যাচে আফ্রিদির ব্যাটিং নিয়ে কথা বলেছিলেন আকরাম। সে দিন লাহোর অধিনায়ক ব্যাটিংয়ে নামেন পাঁচ নম্বরে। যদিও সিকান্দার রাজা ও ডেভিড ভিসারা ডাগআউটে অপেক্ষায়। ম্যাচে ৩ বল খেলে ১ রান করে আউট হন আফ্রিদি। পরে রাজা ও ভিসা মিলে ২৫ বলে তোলেন ৪৬ রান। সে দিন লাহোরের ইনিংস ১৭৭ রানে আটকে যাওয়ার পর করাচি সেটা ৩ উইকেট হাতে রেখে টপকে যায়।
লাহোরের হারের পেছনে অধিনায়ক আফ্রিদির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে ‘এ স্পোর্টস’-এর অনুষ্ঠানে কথা বলেন আকরাম। পাকিস্তানের কিংবদন্তি বাঁহাতি পেসার আফ্রিদির ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘শাহিনকে বলা দরকার সে এখনো অলরাউন্ডার হয়ে ওঠেনি। তোমার দলে বিশ্বমানের পাওয়ার হিটার আছে, যাদের কাজ শেষ ৩ ওভারে নেমে রান বাড়িয়ে নেওয়া। রাজা নেমে ১৬ বলে করল ২২ রান, ভিসা ৯ বলে ২৪। ওদের কারণে রান ১৭৭ পর্যন্ত গেল। অধিনায়ক হলেই যে আগে ব্যাট করতে হবে এমনটা বাধ্যতামূলক নয়। পরিস্থিতি বোঝ, ডাগআউটে তোমার চেয়ে ভালো হিটার আছে কি না দেখ। শাহিন যদি আগেভাগে না নেমে যেত, লাহোরের রান ১৯০ হতো।’
সাবেক পাকিস্তান অধিনায়কের মন্তব্যের পরের দিন করাচি স্টেডিয়ামে কোয়েটা গ্লাডিয়েটরসের মুখোমুখি হয় লাহোর। এ দিনও রাজা, ভিসাদের অপেক্ষায় রেখে পাঁচে ব্যাটিংয়ে নামেন আফ্রিদি। আর এই ম্যাচেই খেলেন ৩৪ বলে ৫৫ ইনিংস, যেখানে ডেথ ওভারে খেলা ১১ বলে তুলেছেন ১৮ রান। ২৮তম বলে আবরারকে ছয় মেরে ফিফটি ছোঁয়ার পরই ‘চুপ’ উদ্যাপন করেন আফ্রিদি। অবশ্য রোববার রাতের ম্যাচটিতেও জিততে পারেনি লাহোর। আর সেখানেও আছে আফ্রিদির ভূমিকা।
লাহোরের ৪ উইকেটে ১৬৬ রান তাড়ায় কোয়েটার শেষ বলে দরকার ছিল ৪ রান। আফ্রিদির বলে ছয় মেরে কোয়েটাকে ম্যাচ জেতান মোহাম্মদ ওয়াসিম। এ নিয়ে চলতি মৌসুমে ১০ ম্যাচের আটটিতে হেরেছে আফ্রিদির দল। গত দুবার শিরোপা জেতা দলটি এবার বিদায় নিচ্ছে লিগ পর্ব থেকেই।
কোয়েটার কাছে হারের পর আফ্রিদির বোলিংকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন আকরাম। টেলিভিশন অনুষ্ঠানে সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘শাহিন যখন বোলিং করতে আসে, ম্যাচ তার দলের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কোয়েটার দুই ওভারে ২৯ রান দরকার ছিল। ওয়াসিমকে কৃতিত্ব দিতে হবে, ওকে এভাবে কখনো শট খেলতে দেখিনি। কিন্তু শাহিনের মতো অভিজ্ঞ বোলার, যে কি না পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে দলে আছে, সে করল ফুল লেংথ ডেলিভারি। এ সব বলে ব্যাটসম্যানের ব্যাটের কানায় লাগলেও তো চার হয়ে যেতে পারে। এবারের পিএসএল মৌসুমে সে তার দলের জন্য ভালো কিছু করতে পারেনি।’