টেস্ট সিরিজের ট্রফি নিয়ে ফটো সেশনে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন ও নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টিম সাউদি (ডানে)
টেস্ট সিরিজের ট্রফি নিয়ে ফটো সেশনে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন ও নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টিম সাউদি (ডানে)

বোর্ড ও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর একসঙ্গে কাজ করা ছাড়া উপায় দেখেন না সাউদি

‘সংঘর্ষ’ এড়াতে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ড ও ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন নিউজিল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক টিম সাউদি। সাম্প্রতিক সময়ে লিগগুলোর দুয়ার খোলা রাখতে কেইন উইলিয়ামসনসহ নিউজিল্যান্ডের বেশ কয়েকজন শীর্ষ সারির ক্রিকেটার বোর্ডের সঙ্গে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে যাননি।

বিশ্বের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে খেলোয়াড়দের চাহিদাও বাড়ছে। সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ঠাসা সূচিও আছে। বিভিন্ন প্রান্তে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর ভিন্ন ভিন্ন সময়ের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ওপরে লিগগুলোকে প্রাধান্য দিচ্ছেন অনেকেই।

গত কয়েক বছরে উইলিয়ামসন, ট্রেন্ট বোল্ট, লকি ফার্গুসন, অ্যাডাম মিলনের মতো নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটাররা কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ে। অ্যালেন বিগ ব্যাশের দল পার্থ স্কর্চার্সের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করেছেন। কনওয়ে অবশ্য ‘ক্যাজুয়াল কন্ট্রাক্ট’ নামের চুক্তিতে আছেন, মানে এ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের হয়ে সব কটি টেস্টের জন্য তাঁকে বিবেচনা করা যাবে। তবে জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি লিগে খেলবেন বলে জাতীয় দলের হয়ে সে সময় সীমিত ওভারের ম্যাচগুলোতে তাঁকে পাওয়া যাবে না।

নিউজিল্যান্ডের শীর্ষ সারির বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার কেন্দ্রীয় চুক্তির পথে হাঁটছেন না

এখনো অনেক ক্রিকেটারই টেস্ট সংস্করণকে সবচেয়ে এগিয়ে রাখেন জানিয়ে সাউদি বলেছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বোর্ড ও লিগগুলোর একসঙ্গে কাজ করা ছাড়া উপায় নেই। মুম্বাইয়ে একটি অনুষ্ঠানে এ পেসার বলেন, ‘এ পর্যায়ে অবশ্যই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর পরিধি বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বোর্ড এবং লিগগুলো একত্রে কাজ করলে ভালো হবে। কারণ, আমার মনে হয় এখনো অনেক খেলোয়াড়ই টেস্ট ক্রিকেটকে সবার ওপরে মনে করে।’

আপাতত নির্দিষ্ট কোনো বোর্ডের তাদের খেলোয়াড়দের পরিস্থিতি বিবেচনায় কাজ করে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখেন না সাউদি। তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় ক্রিকেট এভাবেই এগোচ্ছে এখন। এরপর যে পরিমাণে টি-টোয়েন্টি লিগ গজাচ্ছে। কেইন ও ডেভনের দিক দিয়ে দেখলে, তারা নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলতে সংকল্পবদ্ধ। আমাদের সামনে নয়টি টেস্ট ম্যাচ আছে। ফলে তারা সেগুলোতে খেলতে সংকল্পবদ্ধ। টেস্ট দলের ক্ষেত্রে খুব নতুন কিছু নয় এটি। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সঙ্গে চুক্তি না থাকলেও তারা কিন্তু খেলবে।’

এমন পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার উপায় কী, সেটির সরাসরি জবাব নেই সাউদির কাছেও, ‘আমার কাছে উত্তর (সমাধান) নেই। আমার মনে হয় না এ মুহূর্তে খুব বেশি মানুষের কাছে উপায় আছে। ফলে প্রতিটি বোর্ড এবং তাদের খেলোয়াড়দের জন্য সবচেয়ে ভালো কোনটি, সেটিই বের করতে হবে। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট মনে করছে আগামী এক বছরে এটিই তাদের সবচেয়ে ভালো উপায়। আমার মনেও হয় না কেইন ও ডেভন নিউজিল্যান্ডের অনেক ক্রিকেট মিস করবে। ফলে তাদের যেমন (ফ্র্যাঞ্চাইজ লিগে খেলার দুয়ার) খোলা থাকছে আবার তারা নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলতেও সংকল্পবদ্ধ—এখানেই আসলে “ক্যাজুয়াল কন্ট্রাক্ট”-এর ব্যাপারটি আসছে।’

আপাতত উইলিয়ামসন-কনওয়েরা নিউজিল্যান্ডের হয়ে খুব বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মিস করবেন না। কারণ, টি-টোয়েন্টি লিগগুলোর সঙ্গে সূচি তেমন সাংঘর্ষিক নয়। তবে ভবিষ্যতের প্রশ্ন থেকেই যায়। সামনে আরও বেশি ক্রিকেটার কেন্দ্রীয় চুক্তির পথে না হাঁটলে স্বাভাবিকভাবেই একধরনের অচলাবস্থা তৈরি হবে।

সাউদি অবশ্য নিজের ক্ষেত্রে বলছেন, তিনি যেমন টেস্ট ক্রিকেটকে ‘হৃদয়ের খুব কাছে’ রাখেন, তেমনি টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে খেলার প্রয়োজনীয়তাও দেখেন। তাঁর মতে, ‘সংস্করণভেদে টেস্ট ক্রিকেটই আমার কাছে সবার ওপরে, এটিকে আমি হৃদয়ের মধ্যে লালন করি। (আবার) আমি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সত্যিই উপভোগ করি। দ্য হানড্রেডের মতো সংস্করণ আপনাকে তরুণ রাখবে। আপনাকে নতুন উপায় বের করাবে, খেলার উন্নতি ঘটাবে, দক্ষতার উন্নতি ঘটাবে। সেটি আবার অন্য সংস্করণেও কাজে লাগবে।’