মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস চলছে। তৃতীয় দিন শেষে নাজমুল হোসেনের দল ৩০ রানে এগিয়ে, হাতে আরও ৮ উইকেট। ম্যাচের এমন অবস্থায় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে একটা প্রশ্ন অবধারিতই ছিল, ‘প্রতিপক্ষকে কত রানের লক্ষ্য দিতে চাইবেন?’
দলের প্রতিনিধি হিসেবে আসা নাঈম হাসানকেও আজ এ প্রশ্নটা করা হয়। সাধারণত এ ধরনের প্রশ্নের উত্তরে নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা উল্লেখ করার ঝামেলায় যান না ক্রিকেটাররা। নাঈম তা করলেন না।
স্পষ্টই বললেন, ‘ইনশা আল্লাহ, ২০০-২২০ রান করলে ডিফেন্ড করতে পারব।’ অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে ব্যাখ্যা করে বললেন, ‘প্রথম দিনের তুলনায় আজ উইকেট একটু ভালো ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য। আমরা যদি একটা ভালো স্কোর করতে পারি, তাহলে ইনশা আল্লাহ জিতব। আমরা এখন ম্যাচে এগিয়ে আছি। এটা ধরে রাখতে হবে। যত ভালো ব্যাট করব, (অবস্থান) তত ভালো হবে।’
বাংলাদেশ দলের লিডটা অবশ্য আরও বেশি হতে পারত। ৯৭ রানে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও ১৮০ রান করেছে নিউজিল্যান্ড। নাঈমও নিউজিল্যান্ডের নিচের দিকের ব্যাটসম্যানদের লড়াকু মানসিকতার প্রশংসা করলেন, ‘ওরাও তো ক্রিকেট খেলতে এসেছে, তাই না? একটা জুটি তো হতেই পারে। যে কেউ একজন ভালো খেলতে পারে। ওরা ভালো করেছে, তাই লিড নিতে পেরেছে। আমরা লিড পেলে ভালো হতো। তবে আল্লাহর রহমতে এখন আমরা ৩০ রান লিডে আছি। ভালো ব্যাটিং করলে ইনশা আল্লাহ একটা ভালো স্কোর হবে।’
নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ জুটিটা গড়েছেন গ্লেন ফিলিপস-কাইল জেমিসন। জেমিসনকে আউট করে ৫৩ বলে ৫৫ রানের জুটি ভেঙেছেন বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলাম। পরে ফিরিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান করা গ্লেন ফিলিপসকেও।
অথচ গতকাল মাত্র মাত্র ৩ ওভার বোলিং করেছেন বাঁহাতি পেসার শরীফুল, তাতেই ২ উইকেট নিয়েছেন। দুটি উইকেটই এসেছে রিভার্স সুইংয়ে। ছোট স্পেলেই ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দেওয়ার পর প্রশ্ন জাগে, একমাত্র পেসার হিসেবে দলে শরীফুলের দায়িত্বটা কী? নাঈমের উত্তর, ‘ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রত্যেক বোলারেরই কোনো না কোনো দায়িত্ব আছে। কখনো রান আটকে রাখতে হয়, কখনো উইকেটের জন্য বল করতে হয়। বোলার যখন বল করতে আসবে, সে তার দায়িত্ব জানবে। আজ শরীফুল উইকেট বের করে দিল। ওর দায়িত্ব তো শুধু রান আটকানো না। ওর দায়িত্ব ও ভালোভাবে পালন করেছে, পার্টনারশিপ ভেঙেছে।’
শরীফুলের মতো খুব বেশি বোলিংয়ের সুযোগ পাননি নাঈমও (৪ ওভার)। মিরপুরের স্পিন–স্বর্গে সিংহভাগ বোলিং করছেন মিরাজ ও তাইজুল। তবে দুই ফ্রন্টলাইন বোলারের তুলনায় কম বোলিং করা নিয়ে নাঈমের কোনো আক্ষেপ নেই, ‘দল সবার আগে। দলের প্রয়োজনে যেটা করতে হবে, আমি খুশি। দল জিতলে আর কিছু চাওয়ার নেই।’
নাঈম যেহেতু স্পিন আক্রমণের প্রতিনিধি, মিরপুরের স্পিন–স্বর্গ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হবে না, তা হয় নাকি! নাঈম উত্তর দিতে গিয়ে উল্টো একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, ‘উইকেট যেমনই হোক, খেলতে হবে। অজুহাত দেওয়া যাবে না। এখন ফ্ল্যাট উইকেট দিলে কি বলব আমি বোলিং করব না?’ পরে যোগ করেন, ‘ওটা তো বলতে পারব না। এই উইকেটে ব্যাটসম্যানরা ব্যাট করছে, রান করছে। আমাদের সবাইকে চেষ্টা করতে হবে। উইকেট যেমনই হোক, ভালো রান করতে হবে আর বোলিংয়ে ভালো করতে হবে।’