ইএসপিএনক্রিকইনফোতে রশিদ খানের প্রোফাইল একবার ঘুরে আসতে পারেন। চোখ বোলাতে পারেন এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারে ঠিক কতগুলো দলের হয়ে রশিদ খেলেছেন। সংখ্যাটা অবিশ্বাস্যই!
জাতীয় দলসহ এখন পর্যন্ত ৩০টি দলের হয়ে খেলেছেন রশিদ। অথচ ২৫ বছর বয়সী রশিদের ক্যারিয়ারটা মাত্র ৯ বছরের। বোঝাই যাচ্ছে, ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে রশিদের চাহিদা কেমন! রশিদ এখন পর্যন্ত যেসব দলের হয়ে খেলেছেন, তার বেশির ভাগই ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দল। মূলত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রশিদের চাহিদা আকাশচুম্বী। যে কারণেই রশিদের দলের তালিকা এত লম্বা। এর কারণও আছে বটে।
২০১৭ সাল থেকে ২০২৩—সাত বছরে প্রতিবারই সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে শীর্ষ তিন উইকেটশিকারির একজন রশিদ।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রশিদ যে বোলিংয়ের ‘রাজা’, তা স্পষ্ট হবে একটা পরিসংখ্যান দিলে। ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩—সাত বছরে প্রতিবারই সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে শীর্ষ তিন উইকেটশিকারির একজন রশিদ। যেখানে শীর্ষে ছিলেন চারবার। ২০১৭, ২০১৮, ২০২১ ও ২০২২ সালে সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে শীর্ষ উইকেটশিকারি ছিলেন এই আফগান লেগ স্পিনার।
২০২৩ সালে সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি অস্ট্রেলিয়ার পেসার নাথান ইলিস। ৫২ ইনিংসে এই পেসারের উইকেট ৬৬, ইকোনমি ৮.৩৮। দ্বিতীয় স্থানে রশিদ, ৪৮ ইনিংসে তাঁর উইকেট ৬৫টি। রশিদ ওভারপ্রতি খরচ করেছেন ৭.১০। তৃতীয় স্থানে পাকিস্তানের জামান খান। তাঁর উইকেট ৫০ ইনিংসে ৬৪টি।
তালিকার ৪ নম্বরে উগান্ডার স্পিনার আলপেশ রামজানি। ৩০ ইনিংসে তিনি নিয়েছেন ৫৫ উইকেট। ৫ নম্বরে ড্যানিয়েল স্যামসের। অস্ট্রেলিয়ার এই পেসারের উইকেট ৩৫ ইনিংসে ৫৪টি। উগান্ডার রামজানি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেই ৫৫ উইকেট নিয়েছেন। তিনি গত বছরে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।
২০২২ সালে রশিদ খান উইকেট নিয়েছিলেন ৮১টি। ৬৫ ইনিংসে তিনি ওভারপ্রতি খরচ করেছিলেন ৬.৩৪। ২০২১ সালেও রশিদই ছিলেন শীর্ষে। সে বছরে ৫৩ ইনিংসে নিয়েছিলেন ৭৫ উইকেট। ওভারপ্রতি রান দিয়েছিলেন ৬.৭১। সেবার রশিদের পরই টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছিলেন বাংলাদেশের পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। ৪৭ ইনিংসে ৭.৪৮ ইকোনমিতে মোস্তাফিজ নিয়েছিলেন ৫৯ উইকেট।
২০২০ সালে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন পাকিস্তানের হারিস রউফ। ৩৫ ইনিংসে তিনি উইকেট নিয়েছিলেন ৫৭টি। রশিদ সে বছর নিয়েছিলেন ৫৬ উইকেট। ৫২ উইকেট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ছিলেন পাকিস্তানের শাহিন শাহ আফ্রিদি।
এর আগের বছর ৭৯ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন ইমরান তাহির। নেপালের লেগ স্পিনার সন্দীপ লামিচানে ৬৬ উইকেট নিয়ে ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। আর রশিদ ছিলেন তৃতীয় স্থানে। উইকেট নিয়েছিলেন ৬৫টি।
২০১৮ সালে তো রশিদ প্রায় ১০০ উইকেট নেওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিলেন। উইকেট নিয়েছিলেন ৯৬টি। ৬০ ইনিংসে রান খরচ করেছিলেন ৬.৩৫। ২০১৭ সালেও রশিদ ছিলেন শীর্ষে। উইকেট নিয়েছিলেন ৮০টি। ইকোনমি ছিল অবিশ্বাস্য—৫.৫৩। সেই বছর ৬২ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক ছিলেন সুনীল নারাইন।
পরিসংখ্যানে একটা বিষয় স্পষ্ট, গত সাত বছরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বোলিংয়ে রশিদ নামটাই স্থায়ী। কখনো তাঁর পাশে বসেছেন নারাইন, ইমরান তাহির, রউফরা। কখনো তাঁকে ছাড়িয়েও গেছেন। তবে তাঁর নামকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বোলিং। তবে একটা বিষয় রশিদকে লক্ষ রাখতেই হচ্ছে। ২০২৩ সালেই প্রথমবার ওভারপ্রতি ৭ রানের বেশি খরচ করেছেন আফগান স্পিনার। অন্য যেকোনো বোলারের জন্য এটা যদিও আদর্শ ইকোনমি, তবে তাঁর নামটা যেহেতু রশিদ, ইকোনমির দিকে একটু নজর হয়তো তিনি দেবেন!