অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০২২ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি দলে ছিলেন না। থাকবেন কী! তখন তো সবাই ধরেই নিয়েছিল, আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি থেকে বিদায় ঘটে গেছে মাহমুদউল্লাহর।
কিন্তু আরেকটি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যখন সমাগত, তখন মনে হচ্ছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় এই বিশ্বকাপের দলে মাহমুদউল্লাহ ‘অটোমেটিক চয়েজ’! মিরপুরের বিসিবি কার্যালয়ে আজ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানই সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমি কোনো সমস্যা দেখি না (মাহমুদউল্লাহর দলে থাকায়)। এখন বিশ্বকাপের আগে আর কারা কারা দলে যোগ হচ্ছে, সেটা ঠিক হলে তারপর চূড়ান্তভাবে বলা যাবে। তবে তার আগ এখন পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।’
২০২১ সালের জুলাইয়ে হঠাৎ করেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নেন মাহমুদউল্লাহ। জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠের ড্রেসিংরুমের সেদিনের নাটকীয়তার ১৪ মাস পর যেন শেষ আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ম্যাচটাও খেলে ফেললেন তিনি!
দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ২০২১ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর দুবাইয়েই অনুষ্ঠিত হয় ২০২২ এশিয়া কাপ। এরপর ২০২২ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপসহ মোট ৫৫০ দিন আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টির বাইরে থাকেন তিনি। নির্বাচকদের মনোভাবেও তখন এটাই পরিষ্কার হয়ে উঠেছিল যে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি মাহমুদউল্লাহর জন্য অতীত অধ্যায় হয়ে গেছে।
কিন্তু মাহমুদউল্লাহ হাল ছাড়েননি, অবসর নেননি টি–টোয়েন্টি থেকে। ভারতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে তাঁর দুর্দান্ত ফর্ম জানিয়ে দিল, ক্রিকেটকে চাইলে এই বয়সেও তিনি আরও কিছু দিতে পারেন। সদ্য সমাপ্ত বিপিএলের কয়েকটি ম্যাচে পরিস্থিতির দাবি মেটানো ব্যাটিং করে বুঝিয়ে দেন, সেটার পরিধিও শুধু ওয়ানডেতেই সীমাবদ্ধ নয়, ভুলে যাননি টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটটাও।
এরপরই এল গত ৪ মার্চ সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলতি সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টিতে তাঁর ৩১ বলে ৫৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। শ্রীলঙ্কার ২০৬ রানের জবাবে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত মাত্র ৩ রানে হেরে গেলেও ম্যাচটাকে শেষ ওভার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ায় মাহমুদউল্লাহর ওই ইনিংসের ছিল বড় ভূমিকা।
পরে অবশ্য জাকের আলীর ৩৪ বলে ৬৮ রান আরও ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছিল বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা। টি–টোয়েন্টিতে এমন প্রত্যাবর্তনের পর মাহমুদউল্লাহ সম্পর্কে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের মন্তব্য ‘ফাইটার’ (লড়াকু)।
৩১ মার্চ অনুষ্ঠেয় বিসিবির বার্ষিক সাধারণ সভাকে সামনে রেখে মিরপুরে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের এক সভার পর আজ দুপুরে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘(মাহমুদউল্লাহ) বিরাট উদাহরণ। ২০২১ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার কাছে যে ধরনের প্রত্যাশা ছিল সে অনুযায়ী সে পারফর্ম করতে পারেনি। কিন্তু তারপর একক প্রচেষ্টায় সে যেভাবে ফিরে এসেছে, এটাকেই বলে ফাইটার। সেটা অসাধারণ।’
সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা মাহমুদউল্লাহর প্রত্যাবর্তন ইনিংস দেখে রীতিমতো অভিভূত বোর্ড সভাপতি, ‘জাকেরের খেলা দেখে আমরা সকলেই অভিভূত। কিন্তু সেদিন প্রথম বল থেকে খেলার টোনটা ঘুরিয়ে দেয় মাহমুদউল্লাহই। তার অভিজ্ঞতা কাজ করেছে।’