ফেরার ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭৪ বলে ৮১ রান। গতকাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আরও বিস্ফোরক—৮১ বলে অপরাজিত ১২৬। দুটি ইনিংসই আবার রান তাড়া করতে নেমে।
এর মধ্যে গতকালেরটা ছিল পাকিস্তানকে বিশ্বকাপে টিকিয়ে রাখার লড়াই। এত চাপের মধ্যেও ফখর জামান যে ইনিংস উপহার দিয়েছেন, প্রত্যাশিতভাবে তিনিই ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন।
কিন্তু পাকিস্তানকে যে বিশ্বকাপে টিকিয়ে রাখলেন, সেটার জন্য বোর্ডের কাছ থেকে আরও বড় পুরস্কার যেন তাঁর পাওনা হয়ে উঠেছিল। ম্যাচ শেষে সেই ঘোষণাই দিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান জাকা আশরাফ।
ফখরকে ফোন করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর দুর্দান্ত ইনিংসের প্রশংসা করেছেন। সঙ্গে এ–ও জানিয়ে দিয়েছেন, পিসিবি ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁকে ১০ লাখ পাকিস্তানি রুপি (প্রায় ৪ লাখ টাকা) অর্থপুরস্কার দেওয়া হবে। পিসিবি নিজেদের ওয়েবসাইটে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর মানে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা প্রতিটি রানের জন্য ফখর পাচ্ছেন ৭৯৩৬ (প্রায় ৮ হাজার) পাকিস্তানি রুপি।
টেলিফোনে ফখরের সঙ্গে আলাপকালে তাঁকে ও পুরো পাকিস্তান দলকে শুভকামনাও জানিয়েছেন আশরাফ। আগামী ম্যাচেও দলের কাছ থেকে এমন পারফরম্যান্সের প্রত্যাশা করছেন। প্রথম পর্বে পাকিস্তানের শেষ ম্যাচ আগামী শনিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। গতকালের আরেক ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে ইংল্যান্ডের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে।
প্রথম দুই ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের শুরুটা দারুণ হয়েছিল পাকিস্তানের। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৪৫ রান ছিল বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। এরপরই ছন্দপতন। টানা চার হারে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় বাবর আজমের দলের। চারদিক থেকে সমালোচনার তির ধেয়ে আসে। ফর্ম হারিয়ে ওপেনার ফখর জামানও দল থেকে বাদ পড়েন।
তবে ফখরের পরিবর্তে দলে সুযোগ পাওয়া আবদুল্লাহ শফিক ভালো করলেও এবার ফর্ম হারিয়ে ফেলেন আরেক ওপেনার ইমাম উল হক। ইমামের জায়গায় দলে ফেরানো হয় ফখরকে। অনেক কষ্টে পাওয়া সুযোগটা এবার হেলায় হারাতে দেননি ফখর।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে পাকিস্তানকে জয়ে ফেরানোর দিনে ৮১ রান করে হন ম্যাচসেরা। ওই ম্যাচে পুরো বাংলাদেশ দল মারে ৩ ছক্কা, ফখর একাই ছক্কা মারেন ৭টি।
ছক্কার ‘নেশা’ জারি ছিল গতকালের ম্যাচেও। নিউজিল্যান্ডের করা ৪০১ রানের পর্বত টপকাতে গিয়ে শুরুতে শফিককে হারালেও অধিনায়ক বাবরের সঙ্গে ফখর গড়েন অবিচ্ছিন্ন ১৯৪ রানের জুটি। এর মধ্যে ফখরই করেন ১২৬। ৮টি চারের সঙ্গে ছিল ১১টি ছক্কা।
বেঙ্গালুরুতে কাল পাকিস্তান ইনিংসের ২১.৩ ওভার শেষে বৃষ্টি নামে। তখন তাদের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ১৬০। বৃষ্টি নামার আগেই শতক পূরণ করেন ফখর।
দেড় ঘণ্টা পর খেলা শুরু হলে ডিএলএস পদ্ধতিতে পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ ওভারে ৩৪২। কিন্তু ৪ ওভার খেলা হতেই আবারও মুষলধারে বৃষ্টি নামে। তবে ওই ৪ ওভারে ফখর-বাবর মিলে যোগ করেন আরও ৪০ রান।
দুজন দলকে যেভাবে এগিয়ে নিচ্ছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল ৪০২ রানও তাড়া করে ফেলত পাকিস্তান। বৃষ্টি না থামায় শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানকে ডিএলএস পদ্ধতিতে ২১ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয়।