৩১ বলে ৪৮ রানের সঙ্গে ১২ রানে ১ উইকেট—অন্য যেকোনো দিন মোসাদ্দেক হোসেনের এমন পারফরম্যান্স হতে পারত ম্যাচ জেতানোর মতো। তবে শারজায় আফগানিস্তানের দুই স্পিনারের দারুণ বোলিংয়ের পর নজিবুল্লাহ জাদরানের ঝড়ে ম্লান হয়ে গেল সেটিও। ম্যাচ শেষে মোসাদ্দেক বা অধিনায়ক সাকিব, দুজনই পুড়ছেন আর ১৫-২০ রানের আক্ষেপে।
ধীরগতির, নিচু বাউন্সের উইকেটে মুজিব–উর রেহমানের পর রশিদ খানের স্পিন ঘূর্ণিতে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের মধ্যে একজন শুধু ১০০-এর ওপর স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করতে পেরেছেন, ব্যতিক্রম ছিলেন সাতে নামা মোসাদ্দেকই। পাওয়ারপ্লেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের সর্বনিম্ন ২৮ রান তোলে বাংলাদেশ। শেষ ৫ ওভারে ৪০ রান তুললেও সেটি যথেষ্ট হয়নি তাই।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীতে কিছু রান কম হওয়াটাকেই পরাজয়ের কারণ হিসেবে দাঁড় করালেন সাকিব, ‘প্রথম ৭-৮ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেললে সব সময়ই ম্যাচ বের করা কঠিন। তবে এমন উইকেটেও আমরা ১৫-২০ রান কম করেছি বলে মনে করি। বোলাররা অসাধারণ করেছে। প্রথম ১৫ ওভারে আমরা ম্যাচেই ছিলাম। শেষ ৫-৬ ওভারে ওরা ম্যাচ বের করে নিয়েছে। আফগানিস্তান যেভাবে খেলেছে, ওদের কৃতিত্ব দিতেই হবে।’
পরে সংবাদ সম্মেলনে সাকিবের সঙ্গে সুর মেলালেন মোসাদ্দেকও, ‘এখানে ব্যাটিং করা কঠিন ছিল। ওরা ভালো করেছে, ফলে ওদের কৃতিত্ব দিতে হবে। তবে ১০-১৫ রান কম করেছি আসলে।’
১২৭ রানের সম্বল নিয়েও ইনিংসের বেশ খানিকটা সময় আফগানিস্তানকে চাপে রেখেছিল বাংলাদেশ। তবে শেষ দিকে নজিবুল্লাহর ঝড়ে মিলিয়ে গেছে সব। অবশ্য মোস্তাফিজের করা ১৭তম ওভারে যে বদলে গেল ম্যাচের গতিপথ, তখনো আফগানিস্তানের বাকি ছিল ৭ উইকেট। আর শেষ ৩ ওভারের ব্যাটিং শুরু করার আগেই বাংলাদেশ হারিয়েছিল ৬ উইকেট।
আফগান বোলারদের মধ্যে কাকে আক্রমণ করবেন, সেটিই যেন বুঝে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসে এক ওভারে উঠেছে সর্বোচ্চ ১১ রান। মোসাদ্দেক বলছেন, উইকেট থাকলে ব্যাপারটি অন্য রকম হতে পারত, ‘সেটি (বড় স্কোর) করার মতো অবস্থানে প্রায় চলে গিয়েছিলাম। তবে উইকেট হারালে কঠিন হয়ে যায়। উইকেট রাখতে পারলে, ১৫ ওভার পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারতাম, তাহলে ভিন্ন হতো। ওরা এখানে ভালো খেলেছে।’
শারজার এমন উইকেটে টসে জিতে কেন ব্যাটিং নিলেন সাকিব, সেটির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মোসাদ্দেক, ‘রশিদ খানের বিপক্ষে যদি আপনি ব্যাটিং করেন, তাহলে আপনি চাইবেন না ওভারপ্রতি ৭-৮ করে লাগলে তার বিপক্ষে খেলতে। আমরা শুরুতে ব্যাটিং করে সে কাজটি এগিয়ে রাখতে চেয়েছি। আমি মনে করি, পুরোপুরি পরিকল্পনা অনুযায়ী ছিলাম আমরা।’
এ ম্যাচে বাংলাদেশ নেমেছিল তিন পেসার নিয়ে। সুযোগ পাননি আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে জেতা ম্যাচে ম্যাচসেরা হওয়া নাসুম। এর ব্যাখ্যা মোসাদ্দেক দিলেন এভাবে, ‘বিশ্ব ক্রিকেটের সবাই জানে, আফগানিস্তানের স্পিন আক্রমণ কতটা শক্তিশালী। সেদিক থেকে চিন্তা করলে, আমাদের অমন বড় টার্ন করানোর মতো বোলার নেই। রিস্ট স্পিনারও নেই। সবাই অর্থোডক্স স্পিনার। এভাবে বিশ্লেষণ যদি করেন, বোলারদের জন্য ম্যাচ হেরেছি, ব্যাপারটা আসলে অমন না।’