পাকিস্তানের জন্য এ যেন সব পাওয়ার দিন। টানা সপ্তম টেস্টে ফিফটি তুলে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন সৌদ শাকিল। ক্যারিয়ারে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন আবদুল্লাহ শফিক। আর তিন অঙ্কের মাইলফলক ছুঁয়ে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেছেন আগা সালমান।
তিন ব্যাটসম্যানের মাইলফলক ছোঁয়া ইনিংসের সুবাদে কলম্বো টেস্টের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখন পাকিস্তানের হাতে। তৃতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ৩৯৭ রানে এগিয়ে পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ইনিংসে ১৬৬ রানে অলআউট করে দেওয়া বাবর আজমের দল প্রথম ইনিংসে তুলেছে ৫ উইকেটে ৫৬৩ রান।
১৩২ রানে ব্যাট করছেন সালমান, সঙ্গে ৩৭ রান নিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ান।
সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডের ম্যাচটিতে দ্বিতীয় দিনের প্রায় পুরোটাই চলে গিয়েছিল বৃষ্টির পেটে, খেলা হয়েছিল মাত্র ১০ ওভার। তবে তৃতীয় দিনে খেলা হয়েছে নির্বিঘ্নেই, সারা দিনে খেলা হয়েছে ৯৩.৩ ওভার। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যানের মধ্যে বাবর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ২২ রানের সঙ্গে আর ১৭ রান যোগ করে প্রবাত জয়াসুরিয়ার স্পিনে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন পাকিস্তান অধিনায়ক। এর মধ্যে ক্যারিয়ারে চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন শফিক।
চতুর্থ উইকেটে শফিকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন শাকিল। গল টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করা এই বাঁহাতি এবারও খেলেছেন ছন্দেই। আসিতা ফার্নান্দোকে কাভার ড্রাইভে চার মেরে তুলে নেন ফিফটি। টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ এই ফিফটিতে প্রথম সাত টেস্টেই অন্তত একটি ফিফটির বিশ্বরেকর্ড গড়েন শাকিল। এত দিন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ছয় টেস্টে ন্যূনতম একটি করে ফিফটি ছিল চারজনের। আজ থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক শুরুর ম্যাচে ফিফটির রেকর্ড শাকিলের একার।
রেকর্ড গড়া ইনিংসটি অবশ্য বেশি দূর টেনে নিতে পারেননি শাকিল। ১১০ বলে ৫৭ রান তুলে আসিতার বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন। পরের ব্যাটসম্যান সরফরাজ আহমেদের উইকেটের স্থায়ীত্বও ছিল স্বল্প। তবে সেটা দায়ে নয়, দুর্ভাগ্যে। আসিতার একটি বাউন্সারে মাথার পেছনে আঘাত পান সরফরাজ। তাৎক্ষণিকভাবে ফিজিওকে দেখিয়ে খেলাও চালিয়ে যান আরও পাঁচ ওভার। তবে একটা পর্যায়ে অস্বস্তিবোধ করায় নিজেই মাঠ ছেড়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে সরফরাজের কনকাশন বদলি হিসেবে মোহাম্মদ রিজওয়ানের নাম জানানো হয়।
গত ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলা রিজওয়ান শফিক আউট হওয়ার পর ব্যাটিংয়েও নামেন। শফিক অবশ্য আউট হওয়ার আগে ব্যক্তিগত কীর্তি গড়ে যান। আগের সর্বোচ্চ ১৬০* রান টপকে গিয়ে ইনিংস টেনে নেন ডাবল সেঞ্চুরিতে। ৩২২ বলে ২০০ রানের মাইলফলক ছোঁয়ার পথে ১৯টি চারের সঙ্গে ৪টি ছয় মারেন শফিক। তাঁর ইনিংসটি থামে রান বাড়ানোর তাড়ায় উইকেট ছেড়ে এসে উড়িয়ে মারতে গেলে, জয়াসুরিয়ার বলে ক্যাচ দেন মিডঅফে, ২০১ রান করে।
দিনের বাকিটা সময় ব্যাটিং করেন আগা সালমান ও রিজওয়ান। ক্যারিয়ারের নবম টেস্ট খেলতে নামা সালমান তুলে নেন দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তাঁর ব্যাটে আগের সর্বোচ্চ ছিল গত বছর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৩। রিজওয়ানের সঙ্গে সালমানের অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে উঠেছে ৯৫ রান।