বিশ্বকাপে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে টাইমড আউট করে সবার মনে কী এক ‘ভীতি’ই না ছড়িয়ে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান! নেতিবাচক দিক থেকে দেখলে ভীতি, ইতিবাচক দিক থেকে সচেতনতাও বটে। ১৪৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কার সে ম্যাচেই বিশ্ব প্রথমবার টাইমড আউট দেখেছে।
সাকিবের ওই কাণ্ডের পর অনেকে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। আবার অনেকে ক্রিকেটীয় চেতনার প্রসঙ্গ তুলে এর বিরোধিতা করেছেন। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক আজহার আলী যেমন বলেছিলেন, ওই আউট ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও অনেক আউটের সুযোগ করে দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া টি–টোয়েন্টি আসর বিগ ব্যাশ লিগের আজ তেমনই অবস্থায় পড়তে বসেছিলেন পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার হারিফ রউফ। তাঁর দল মেলবোর্ন স্টার্সের সতীর্থরা ইনিংসের শেষ দিকে এসে এত দ্রুত আউট হয়েছেন যে পরবর্তী ব্যাটসম্যান হিসেবে নামার জন্য ন্যূনতম প্রস্তুত হওয়ার সময়টুকুও পাননি। টাইমড আউটের শঙ্কায় প্যাড ছাড়াই নেমে পড়তে বাধ্য হন রউফ।
আলবুরির লাভিংটন স্পোর্টস গ্রাউন্ডে আজ সিডনি থান্ডারের মুখোমুখি হয়েছে মেলবোর্ন স্টার্স। ম্যাচে থান্ডারের কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে স্টার্স। তবে ফল ছাপিয়ে আলোচনায় এসেছে রউফের তাড়াহুড়া করে ব্যাটিংয়ে নেমে পড়ার ঘটনা।
আগে ব্যাট করতে নেমে একপর্যায়ে ৫ উইকেটে হারিয়ে ১৬৮ রান তুলে ফেলেছিল স্টার্স। কিন্তু শেষ ২ ওভারে দলটির ব্যাটিং লাইন আপ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। এরপর আর ৪ রান যোগ করতেই শেষ ৫ উইকেট হারায়। ড্যানিয়েল স্যামসের করা শেষ ওভারে টানা ৪ বলে পড়ে ৪ উইকেট।
শুরুটা হয় বিউ ওয়েস্টারকে দিয়ে। পরের বলে উসামা মির ক্যাচ দিয়ে আউট হন। এরপর রান আউট হন মার্ক স্টেকেটে—এতে দলীয় হ্যাটট্রিক পেয়ে যায় থান্ডার।
এরপর রউফ প্যাড ছাড়াই মাঠে নেমে পড়েন, যা দেখে ফক্স ক্রিকেট তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, পেশাদার ক্রিকেটে এর আগে কখনো এমন কিছু দেখা যায়নি। তবে সেটা গবেষণার ব্যাপার হলেও ধারাভাষ্যকার ব্রেট লি, ব্র্যাড হ্যাডিন এবং মেল জোনস কিন্তু রউফের কাণ্ড দেখে চমকে গেছেন।
ফক্স ক্রিকেটে হ্যাডিন বলেছেন, ‘দেখুন, সে গ্লাভস, হেলমেট এবং প্যাড পরেনি। জীবনে কখনো এমনকিছু দেখিনি। হারিস রউফ আসলে সময় পায়নি।’ অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ফাস্ট বোলার লি তখন তাঁর সাবেক জাতীয় দল সতীর্থের কথা শুনে কৌতুক করে বলেন, ‘যদি ওয়াইড হয় এবং ১ রান নেয় তখন? তাকে তো তখন প্যাড ছাড়াই খেলতে হবে, আশা করি সে বক্সটা (অ্যাবডমিনাল গার্ড) পরেছে।’
মেল জোনস এরপর বলেছেন, ‘গ্লাভস আছে, হেলমেট আছে, হাতে ব্যাটও আছে। সে সম্ভবত ভেবেছে সবই তো ঠিক আছে! একটি গ্লাভস পরেছে, এটা তো সার্কাস! সে নিশ্চয়ই নো বল চায় না।’
শেষ ওভারের শেষ বলে লিয়াম ডসনও আউট হন। তাতে রউফকে আর অন্য প্রান্তে যেতে হয়নি। শেষ বলটি নো হলে এবং তাতে ১ রান হলে পাকিস্তানি পেসার নিশ্চয়ই বিপদে পড়তেন!