অ্যাশেজে এজবাস্টনের পর এবার লর্ডসের রোমাঞ্চের অপেক্ষা। ২ উইকেটে স্মরণীয় জয় পেলেও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের দুই স্তম্ভ স্টিভেন স্মিথ ও মারনাস লাবুশেন প্রথম টেস্টে নিষ্প্রভই ছিলেন। লর্ডসে তাই স্মিথদের ওপর বাড়তি নজর থাকতেই পারে। কিন্তু ক্রিকেটের ঐতিহাসিক এ ভেন্যুতে স্মিথের ফেরা বাড়তি এক কারণেও তাৎপর্যপূর্ণ। চার বছর আগে এ মাঠেই যে রীতিমতো ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন এ ব্যাটসম্যান!
৮০ রানে ব্যাটিং করার সময় জফরা আর্চারের বাউন্সারে মাথার পেছনের দিকে আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন স্মিথ। কিছুক্ষণ সেভাবেই পড়ে ছিলেন তিনি। এরপর উঠে দাঁড়ালেও আর খেলা চালাননি তখন।
সে বাউন্সার নিয়ে লিজেন্ড অব দ্য অ্যাশেজ পডকাস্টে স্মিথ বলেছেন, ‘কঠিন একটা সময় যাচ্ছিল ম্যাচে। হাতে একটা আঘাত পেলাম, পুল শটে কয়েকটি টপ-এজ হলেও বেঁচে যাই। কয়েকটি গ্যাপে খেলেছিলাম। এরপর মাথার পেছনে এসে লাগল একটা (বাউন্সার), বেশ ভালোই লেগেছিল। তবে তখন তো বুঝিনি কনকাশন হচ্ছে। উঠে গিয়ে সব রকম পরীক্ষা করা হয়েছিল, সবই ঠিকঠাক ছিল।’
সে ইনিংসে পরের উইকেট পড়ার পর আবার নেমেছিলেন স্মিথ, ৮৮ রানে শেষ পর্যন্ত অলআউট হন। কিন্তু কনকাশনের কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে আর খেলতে পারেননি। আর্চারের সে বাউন্সারের প্রভাব তাঁর ওপর কেমন ছিল, সেটি স্মিথ বর্ণনা করেছেন এভাবে, ‘আবার ফিরে আসার আগে আসলে বুঝিনি। আধা ঘণ্টা পর যখন অ্যাড্রেনালিনের রেশটা কেটে গেছে, তখনই কেমন এলোমেলো লাগছিল। সত্যি বলতে কী, মনে হচ্ছিল এক ডজন বিয়ার পান করে ফেলেছি!’
শর্ট বলে এমন আঘাত পেলে অনেক সময়ই ব্যাটসম্যানের টেকনিকের খুঁতও ধরার চেষ্টা করা হয়। স্মিথ অবশ্য সেদিন তাঁর অমন আঘাত পাওয়ার পেছনে অন্য একটা কারণও দেখেন, ‘বেশ অন্ধকার মেঘাচ্ছন্ন একটা দিন ছিল। মেঘ আসছিল-যাচ্ছিল। আর মেম্বার্স প্রান্ত থেকে বোলিং করলে এমনিতেই লর্ডসে খেলা কঠিন হতে পারে। সেদিকে (এমসিসির) সদস্যরা বসে থাকেন, অন্য মাঠের মতো অতটা বড় সাইটস্ক্রিনও থাকে না।’
সেদিন নাকি আর্চারের বাউন্সারে আঘাত পাওয়ার আগে থেকেই স্বস্তিতে ছিলেন না স্মিথ, ‘মনোযোগ নড়ে যাচ্ছিল। ওই প্রান্ত থেকে যতটা ভালো করে বল দেখতে চাই, সেটি করতে পারছিলাম না।’
২০১৯ সালে শুধু ওই টেস্টে নয়, সিরিজজুড়েই আর্চারের সঙ্গে ভালো একটা দ্বৈরথ হয়েছিল স্মিথের। তবে কনুইয়ের চোটে অ্যাশেজ থেকে আগেই ছিটকে গেছেন ইংলিশ পেসার। এবার তাই সে দ্বৈরথ দেখার সুযোগ নেই।
কনকাশনের কারণে লর্ডসের দ্বিতীয় ইনিংসের পর হেডিংলির ঐতিহাসিক টেস্টেও খেলতে পারেননি স্মিথ। তবে এরপরও সে সিরিজে স্মিথ ১১০.৫৭ গড়ে করেছিলেন ৭৭৪ রান। স্মিথের মতো লাবুশেনের জন্যও ব্যক্তিগত দিক দিয়ে লর্ডস বিশেষ একটি জায়গা। স্মিথের কনকাশন বদলি হিসেবে সে ম্যাচে নেমেছিলেন ২০১৮ সালে অভিষেক হওয়া লাবুশেন। তবে ওই ইনিংস দিয়েই যেন পুনর্জন্ম হয় তাঁর। লর্ডসের ওই টেস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত এ সংস্করণে লাবুশেনের গড় ৫৯.৪৩।
এজবাস্টনের স্মরণীয় জয়ের পর গতকাল প্রথম অনুশীলন করে অস্ট্রেলিয়া। ২৮ জুন থেকে শুরু দ্বিতীয় টেস্ট।