টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার এইটে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টায়, অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে। এই মাঠেই বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে, শনিবার রাত সাড়ে ৮টায়। এর আগে সেখানে টি-টোয়েন্টি সংস্করণের কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ। তবে অন্য দুটি সংস্করণে খেলার অভিজ্ঞতা আছে এবং সেসব অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর ছিল না।
নর্থ সাউন্ডে ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ভিভিয়ান রিচার্ডসের নামে এই স্টেডিয়ামের নামকরণ। সেখানে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ খেলেছে বিশ্বকাপেই। তবে সেটি ছিল ওয়ানডে সংস্করণের বিশ্বকাপ। ২০০৭ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত সে ম্যাচে ১০ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। ২২ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১০৪ রান তুলেছিল হাবিবুল বাশারের দল। অস্ট্রেলিয়ার দুই বিস্ফোরক ওপেনিং জুটি অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও ম্যাথু হেইডেন ১৩.৫ ওভারেই লক্ষ্য পেরিয়ে যান। বাংলাদেশের সেই দলটির একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলছেন সাকিব আল হাসান।
শুধু সেই ম্যাচ নয়, এই স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের খেলা চারটি ম্যাচেই ছিলেন সাকিব। ২০০৭ বিশ্বকাপেই এই স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ৯ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে ১৭৪ রানে বাংলাদেশকে অলআউট করে ২৯.২ ওভারে জিতেছিল স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নিউজিল্যান্ড। ওয়ানডে সংস্করণে সেখানে এ দুটি ম্যাচের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে যৌথভাবে সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন সাকিব (২৫)। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও ২৫ রান করেছিলেন সাকিব। দুটি ম্যাচের একটিতেও তিনি উইকেট পাননি।
ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে এরপর দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, দুটিই স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। প্রথমটি ২০১৮ সালের জুলাইয়ে। সে ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ইনিংস ও ২১৯ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। সাকিবের দুই ইনিংসে স্কোর ছিল ০ ও ১২। এক ইনিংসে ব্যাট করা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২টি উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। সেই টেস্টের আরও দুজন খেলোয়াড় বাংলাদেশের এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে আছেন—লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের দুই ইনিংসে লিটনের স্কোর ছিল ২৫ ও ২। মাহমুদউল্লাহ প্রথম ইনিংসে ০ রানে আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে করেছিলেন ১৫ রান।
এই মাঠে বাংলাদেশ সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছে ২ বছর আগে। সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সেখানে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৭ উইকেটে হেরেছিল সাকিব আল হাসানের দল। বাংলাদেশের দুই ইনিংসেই ফিফটি পেয়েছিলেন সাকিব। বর্তমান টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেনের দুই ইনিংসে স্কোর ছিল ০ ও ১৭। দুই ইনিংসে ১২ ও ১৭ রান করেছিলেন লিটন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ইনিংস মিলিয়ে বোলিংয়ে ১টি করে উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব ও মোস্তাফিজুর রহমান।
ক্রিকেটের পরিসংখ্যানবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘হাউস্ট্যাট’ জানিয়েছে, এই মাঠে টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাটিং করা দলের গড় স্কোর ১২৮। সর্বোচ্চ ১৫০ রান তাড়া করে জয়ের নজির আছে এবং সেটি এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই। ওমানের ৭ উইকেটে ১৫০ তাড়া করতে নেমে ৪১ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটে ১৫৩ তুলেছিল স্কটল্যান্ড। মোট ১৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে এ মাঠে। উইকেটে পেসাররা বেশ সুবিধা পান। পরিসংখ্যানও সেটাই বলছে। ১৭টি টি-টোয়েন্টিতে মোট ১২০ উইকেট নিয়েছেন পেসাররা। স্পিনারদের শিকার ৭৬ উইকেট।
ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামের মাটি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সাকিবেরই সবচেয়ে ভালো চেনা। এরই মধ্যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একটি মাইলফলকের সামনেও দাঁড়িয়ে সাকিব। এ সংস্করণের বিশ্বকাপে আগেই সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন তিনি। নেপালের বিপক্ষে ২টি উইকেট নিয়ে মোট ৪০ ম্যাচে নিজের উইকেটসংখ্যাকে ৪৯-এ উন্নীত করেছেন সাকিব। আর একটি উইকেট পেলেই স্পর্শ করবেন ৫০ উইকেটের মাইলফলক। সেটা কি এই ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামেই? কে জানে!