এখন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ক্রিজে থাকা মানেই অসম্ভব যেকোনো কিছুকেই সম্ভব বানিয়ে ফেলার আশা। বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই অবিশ্বাস্য ইনিংসের পর থেকে নিজেকে এমনই উচ্চতায় নিয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার।
মুম্বাইয়ে বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে ১২৮ বলে অপরাজিত ২০১ রানের সেই অবিশ্বাস্য ইনিংসের পর গতকাল আবার দেখা গেল অতিমানব ম্যাক্সওয়েলকে। এবার প্রতিপক্ষ ভারত, ম্যাচটা টি-টোয়েন্টি। ভারতের তোলা ৩ উইকেটে ২২২ তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়াও ভীষণ চাপে। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল থাকলে কিছুই যে অসম্ভব না! ৪৮ বলে অপরাজিত ১০৪ রান করার পথে ম্যাক্সওয়েল টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্রুততম শতকের রেকর্ডও স্পর্শ করেছেন। ম্যাচটা অস্ট্রেলিয়া জিতল একেবারে শেষ বলে ম্যাক্সওয়েলের মারা চারেই। ৫ উইকেটে দুর্দান্ত জয়ে সিরিজেও ঘুরে দাঁড়াল অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ টি-টোয়েন্টির সিরিজে তিনটি ম্যাচ শেষে আপাতত ভারত এগিয়ে ২-১ ব্যবধানে।
তাড়া করতে নেমে ষষ্ঠ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার ২ উইকেট পড়ার পর ম্যাক্সওয়েল যখন ক্রিজে নামেন, অস্ট্রেলিয়ার দরকার ৮৬ বলে ১৫৭ রান। সেখান থেকে ১০ ওভার শেষে হিসাবটা দাঁড়ায় ৬০ বলে ১১৮ রানে, ১৫ ওভার শেষে সমীকরণ ছিল ৩০ বলে ৭৮ রানের। ম্যাক্সওয়েল ততক্ষণে ২৮ বলে অর্ধশতক পেয়ে গেছেন। কিন্তু তখনো অস্ট্রেলিয়ার জয় অনেক দূরের পথ। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল সেই পথও পাড়ি দিলেন কী অবলীলায়।
দলের ১২৮ রানে মার্কাস স্টয়নিস ফিরে যান, ১৩৪ রানে ফেরেন টিম ডেভিড। শেষ দুই ওভারে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪৩ রান, শেষ ওভারে ২১। সেটাও সম্ভব বানিয়ে ফেললেন ম্যাক্সওয়েল। ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শেষ ওভারে এর চেয়ে বেশি রান তুলে আর কখনো কোনো দল জেতেনি। ম্যাথু ওয়েডকে নিয়ে ৪০ বলে অবিচ্ছিন্ন ৯১ রানের এক জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে এক অসাধারণ জয় এনে দিলেন ম্যাক্সওয়েল।
এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২০০-এর বেশি রান তাড়া করে জেতে ভারত, দ্বিতীয় ম্যাচে ২৩৫ রান তুলে জয়। এই প্রথম টি-টোয়েন্টিতে কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্টে কমপক্ষে ৩ বার ২০০ পেরোল ভারত।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত ২৪ রানের মধ্যেই হারায় দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান যশস্বী জয়সোয়াল ও ঈশান কিষানকে। এরপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন গায়কোয়াড়। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম শতকের পথে অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গে ৪৭ বলে ৫৭ রানের পর তিলক বর্মার সঙ্গে মাত্র ৫৯ বলে তোলেন ১৪১ রান। গায়কোয়াড় ৩২ বলে ছুঁয়েছিলেন অর্ধশতক, পরের ৫০ রান করতে তাঁর লাগে মাত্র ২০ বল। ৫৭ বলে অপরাজিত ১২৩ রানের ইনিংসে ১৩টি চারের সঙ্গে তিনি মারেন ৭টি ছক্কা।
শেষ ৩ ওভারেই ভারত তোলে ৬৭ রান। ৪ ওভারে ৬৪ রান দেওয়া অ্যারন হার্ডি ছুঁয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ১ ওভারেই দেন ৩০ রান। এই ডামাডোলে জেসন বেহরেনডর্ফ আবার ৪ ওভারে দেন মাত্র ১২ রান।