‘চোকার্স’ তকমাটা দক্ষিণ আফ্রিকার রয়েই গেল

২৪ বলে প্রয়োজন ২৬ রান, হাতে ৬ উইকেট। ক্রিজে হাইনরিখ ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলার। দুজনেই থিতু। যে গতিতে এবং যতটা সহজে তারা রান করছিল তাতে প্রত্যাশিত ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার সহজ জয়। কিন্তু চাপের মুখে হার মেনেই মাঠ ছাড়তে হলো দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ‘চোকার্স’ তকমাটা তাদের রয়েই গেল।

বোলিংয়ে ৫ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারানো ভারতকে কোণঠাসা অবস্থায় পেয়েও আক্রমণে না গিয়ে অধিনায়ক এইডেন মার্করামের পরপর দুই ওভার বল করার রক্ষণাত্মক সিদ্ধান্তটা কতটা সঠিক ছিল, সে প্রশ্নটা বোধ হয় এসেই যায়। মূল বোলারদের ওভার বাঁচানোর চিন্তা করতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতকে আবার ম্যাচে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। তখন যদি আক্রমণের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আরও একটা উইকেট নিতে পারত, তাহলে হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকাকে আরও ১৫-২০ বা তারও কম রান তাড়া করতে হতো।

‘চোকার্স’ তকমাটা দক্ষিণ আফ্রিকার রয়েই গেল

প্রথম ৮ বলেই ৫ বাউন্ডারি মেরে দারুণ সূচনা করেছিল ভারত। মনে হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ধরাছোঁয়ার বাইরের একটা স্কোর গড়েই তারা জয়টা নিশ্চিত করতে চাচ্ছে। কিন্তু ৫ ওভারের মাথায় তিন উইকেটের পতন ভারতকে থমকে দেয়। বিশেষ করে রোহিত শর্মার উইকেটটি। এ জায়গায় এসে ভারতকে তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে, ব্যাটিং অর্ডারেও।

বিশ্বকাপজুড়ে রান না পাওয়া বিরাট কোহলি অবশ্য ফাইনালে এসে ঠিকই তার কারিশমা দেখাল, হলো প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ। তবে আমার চোখে ভারতের ম্যাচে ফিরে আসার মূল নায়ক অক্ষর প্যাটেল। সেই সময়টা মোমেন্টামটা সে-ই ধরে রেখেছিল। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সব মিলিয়ে দারুণ ফ্লেক্সিবল একজন ক্রিকেটার। দেখিয়ে দিল, দলে জায়গা পাওয়ার জন্য সেরা হওয়াটা জরুরি নয়, কার্যকরী হওয়াটা জরুরি।

যশপ্রীত বুমরাকে ভিনগ্রহের মানুষ বলেই মনে হয়। সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তগুলোতেই তার হাতে বল তুলে দেয় অধিনায়ক এবং বুমরা প্রতিবারই অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করে। এবারও তার ব্যতিক্রম দেখলাম না।

বুমরাকে ভিনগ্রহের মানুষ মনে হয়

এই বিশ্বকাপের উইকেট নিয়ে প্রচুর সমালোচনা থাকলেও ফাইনাল ম্যাচেরটি ছিল একটি আদর্শ টি-টোয়েন্টি উইকেট। দুদলের জন্যই ছিল সমান সুযোগ, যে কারণে ম্যাচটিও হয়ে উঠেছিল উপভোগ্য।

ভারত যোগ্য দল হিসেবেই বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন। চাপের মুখেও নিজেদের ধরে রেখে তাদের মানসিক শক্তির প্রমাণ দিয়েছে। ভারতকে অভিনন্দন।