‘কদিন আগে আমার বাবা দিল্লি এসেছিলেন, আমি তাঁর সঙ্গে অনুশীলন করেছি ম্যাচের আগে। তিনি জানতেন আমি হতাশ। তিনি বললেন, “আমাদের কাজ হচ্ছে সব সময় রান করা, যে দলের হয়েই হোক না কেন সেটা।” ছোট থেকেই আমি যখনই একটু ধন্দে পড়ে যাই, কোনো কিছু ঠিকঠাক মনে হয় না, তিনি এই একই কাজ করেন—আমাকে উজ্জীবিত করেন, আত্মবিশ্বাস জোগান। মানসিক দিক দিয়ে প্রস্তুত করেন।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম দুই টেস্টের দল ঘোষণার পর ওপরের কথাগুলো বলেছিলেন সরফরাজ খান। তাঁর বাবা তাঁকে যা বলেছিলেন, সেই রান করার কাজটা অবশ্য সরফরাজ ঠিকই করে যাচ্ছেন। শুধু জাতীয় দলের ডাকটাই আসছে না ২৫ বছর বয়সী মুম্বাইয়ের এই ব্যাটারের। এবার তাঁকে নিয়ে মুখ খুললেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনও। এ অফ স্পিনারের মতে, সরফরাজ শুধু নির্বাচকদের দরজায় জোরে জোরে কড়া নাড়ছেন না, ভেঙেচুরে দিচ্ছেন রীতিমতো।
ঘরোয়া ক্রিকেটে সরফরাজের পারফরম্যান্স এমন, তাতে অশ্বিনের কথাকে অতিরঞ্জিত মনে করার সুযোগ কম। সর্বশেষ কয়েক মৌসুমে ভারতের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণিতে সরফরাজের গড় এমন—১৫৪.৬৬, ১৩৭.৭৫, ১০৭.৭৫। এ মৌসুমেও ব্যাটিং করছেন ৮৬.৭২ গড়ে। এখন পর্যন্ত রঞ্জি ট্রফির এ মৌসুমে ৯ ইনিংসে তাঁর গড় ৯২.৬৬, আছে তিনটি সেঞ্চুরি। তবে সর্বশেষ ঘোষিত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজেও দলে ডাক পাননি। ডাকা হয়েছে টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত খেলতে থাকা সূর্যকুমার যাদবকে, ঋষভ পন্তের দুর্ঘটনার পর ডাক পেয়েছেন ঈশান কিষানও।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সরফরাজকে নিয়ে অশ্বিন বলেছেন, ‘এ ব্যাটসম্যানকে নিয়ে আসলে কোথায় শুরু করব? সরফরাজ খান। তার দলে জায়গা পাওয়া উচিত কি না, এ নিয়ে অনেক বেশি বিতর্ক হচ্ছে। তবে সে কিন্তু দলে ডাক পাওয়া নিয়ে চিন্তিত না। ২০১৯-২০ মৌসুমে ৯০০ রান করেছে। ২০২০-২১ মৌসুমে আরও ৯০০ রান করেছে।’
এরপরও তাঁর সুযোগ না পাওয়াকে দুর্ভাগ্যজনকই মনে করছেন অশ্বিন, ‘এ মৌসুমেও সে প্রায় ৬০০ রান করেছে। এমন পারফরম্যান্স দিয়ে জোরালো একটা বার্তাই দিয়েছে। গত তিন মৌসুমে তার গড় ১০০-এর ওপরে, স্ট্রাইক রেটও ভালোই। সরফরাজ খান যে শুধু নির্বাচকদের দরজায় কড়া নাড়ছে জোরে জোরে, তা নয়। সে এসব পুড়িয়ে দিচ্ছে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাকে দলে ডাকা হচ্ছে না।’
ডাক না পেলেও সরফরাজ অবশ্য নিজের কাজটি করে যাচ্ছেন ঠিকই, তিনি রান করে যাচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দল ঘোষণার কদিন পরই দিল্লির বিপক্ষে খেলেন ১৫৫ বলে ১২৫ রানের ইনিংস। যে ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ রান ছিল পৃথ্বি শর, মুম্বাই গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ২৯৩ রানেই।