ব্যাটে–বলে দারুণ পারফরম্যান্স করে ম্যাচসেরা হয়েছেন মোহাম্মদ নেওয়াজ
ব্যাটে–বলে দারুণ পারফরম্যান্স করে ম্যাচসেরা হয়েছেন মোহাম্মদ নেওয়াজ

সব বলই মারার প্রতিজ্ঞা নিয়ে নেমেছিলেন নেওয়াজ

এক ওভার যুজবেন্দ্র চাহাল, তো পরের ওভার রবি বিষ্ণয়। দুবাইয়ে ভারত-পাকিস্তান সুপার ওভার ম্যাচে টানা বল করছিলেন ভারতের লেগ স্পিনাররা। আর সেটি দেখেই কিনা একটা ফাটকা খেলল পাকিস্তান দল। ফখর জামান চাহালের বল আউট হতেই ব্যাটিংক্রমের চারে নামিয়ে দেওয়া হলো মোহাম্মদ নেওয়াজকে। সেই নেওয়াজ, টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তান দলে বেশির ভাগ সময়েই যাকে ব্যাট করতে হয় সাত-আটে।

লেগ স্পিনারের বিপক্ষে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান—‘ম্যাচ-আপ’টা কী দারুণভাবেই না কাজে লাগল। নেওয়াজ যে খেললেন ২০ বলে ৪২ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস! এর আগে বল হাতেও সফল ২৮ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার। ১ উইকেট নিলেও ভারতের ভয়ংকর ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে ১৮০ রানের ইনিংসে ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২৫ রান। ৭১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেও তাই ম্যাচসেরার লড়াইয়ে নেওয়াজের কাছে হারলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।

২০ বলে ৪২ করেছেন নেওয়াজ

ম্যাচ জয়ের পর পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম জানালেন দুই লেগ স্পিনার দেখেই নেওয়াজকে ব্যাটিংক্রমের চারে নামিয়ে দেন তাঁরা, ‘আমি আজ ভালো না করতে পারলেও নেওয়াজ ও রিজওয়ানের জুটিটা দারুণ ছিল। নেওয়াজ প্রত্যাশার চেয়েও ভালো করেছে কারণ ওদের দুজন লেগ স্পিনার বল করছিল। আমরা এ সুযোগটাই নিতে চেয়েছিলাম।’

নেওয়াজ-রিজওয়ানের তৃতীয় উইকেটে ৪১ বলে যোগ করেন ৭৩ রান। ভারত মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় তখনই।

সূর্যকুমার যাদবকে আউট করেছেন নেওয়াজ

ব্যাট হাতে ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার আগে বোলিংও নেওয়াজ ফেরান ভারতের সূর্যকুমার যাদবকে। ম্যাচসেরা পুরস্কার নিতে গিয়ে নেওয়াজ বললেন বোলিংয়েও সফল হওয়ার কারণ, ‘বাঁহাতি স্পিনারদের মৌলিক কাজ হলো লাইন ও লেংথ ঠিক রাখা। একটি-দুটি বল টার্ন করলে ব্যাটসম্যানদের মনে সংশয় দেখা দেয়। এরপর আমি লাইন-লেংথ ঠিক রাখাতেই মনোযোগ দিয়েছি।’

২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম ব্যাট করেছিলেন নেওয়াজ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচে তিনে নেমে করেছিলেন ৯ বলে ৭ রান। সেই নেওয়াজ সাড়ে চার বছরের বেশি সময় পরে আবার ব্যাট করতে নামলেন টপ অর্ডারে। আর নেমেই পেয়ে গেলেন ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ইনিংস।

আমাদের ওভারপ্রতি ১০ রান দরকার ছিল। আমি জানতাম প্রতিটা সুযোগ কাজে লাগিয়ে মারতে হবে। চিন্তাটা পরিষ্কার ছিল, জায়গামতো বল পেলে প্রতিটি বলেই মারব।
মোহাম্মদ নেওয়াজ

নেওয়াজ জানালেন ‘মারতে হবে’ মানসিকতাই সাফল্য এনে দিয়েছে তাঁকে, ‘আমাদের ওভারপ্রতি ১০ রান দরকার ছিল। আমি জানতাম প্রতিটা সুযোগ কাজে লাগিয়ে মারতে হবে। চিন্তাটা পরিষ্কার ছিল, জায়গামতো বল পেলে প্রতিটি বলেই মারব। এমন চাপের ম্যাচে চিন্তাটা কাজে লেগেছে।’

ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা হারের পরেও অবশ্য তেমন অখুশি নন, ‘এই ধরনের চাপের ম্যাচ খেলোয়াড়দের সেরাটা বের করে আনে। অনেক সময় সবকিছু আপনার পক্ষে যাবে না। এই খেলোয়াড়েরা সম্ভাবনাময়, অতীতে তাঁরা ভালো করেছে। আর প্রতিপক্ষও তো ভালো মানের। আমাদের স্কোর ভালোই ছিল। দরকার ছিল মাঝের ওভারে উইকেট নেওয়ার। আজকের ম্যাচ থেকে শেখার আছে।’