বেশ অলস সময় কাটছে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর ওয়ানডে সিরিজ শুরু হয়েছে ভারতের। তিন সংস্করণের কোনো ফরম্যাটেই এখনো দেখা যায়নি তাঁকে। জুনের শেষ দিকে লেস্টারশায়ারের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে একটু হাত ঘুরিয়েছিলেন, ব্যস। তাই ইংল্যান্ড সফরটায় দর্শকের ভূমিকাতেই মানিয়ে নিয়েছেন নিজেকে।
দর্শক হিসেবে নিজের মতামতটাও জানিয়েছেন অশ্বিন। তাঁর ধারণা, টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিজ নিজ জায়গা করে নিয়েছে, কিন্তু ক্রমেই ভিত্তি দুর্বল হয়ে উঠেছে ওয়ানডে ক্রিকেটের। ওয়ানডে দেখলে নাকি টিভিই বন্ধ করে দেন ভারতীয় অফ স্পিনার!
গতকাল তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শুরুটা দারুণ করেছে ভারত। ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে তারা। যশপ্রীত বুমরা ১৯ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ১১০ রানে গুটিয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডকে। অশ্বিনের ওয়ানডেতে অরুচি অবশ্য এমন একপেশে ম্যাচ দেখেই হয়েছে, এমন নয়।
গত কিছুদিনে নতুন কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের অধীন টেস্টে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছে ইংল্যান্ড। দর্শকদের যে এই ধরনের ক্রিকেট কতটা ভালো লাগে, সেটা মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে এজবাস্টন টেস্টের পঞ্চম দিনের সব টিকিট বিক্রি হওয়াই জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ওয়ানডে নিয়ে দর্শকের মধ্যে এমন আগ্রহ নাকি এখন আর দেখা যায় না।
মাইকেল ভন ও ফিল টাফনেলের পডকাস্ট অনুষ্ঠান ভনি অ্যান্ড টাফারস ক্রিকেট ক্লাবে অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন অশ্বিন। সেখানেই বলেন, ‘ওয়ানডের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য হলো, দুঃখিত ছিল—খেলাটার মধ্যকার উত্থান ও পতন (নাটকীয়তা)। একসময় (দলের বিপদে) নিজের মুহূর্তের অপেক্ষা করত এবং ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত টানত।’
ভারতের হয়ে ১১৩ ওয়ানডে খেলা অশ্বিনের ধারণা, এক দিনের ক্রিকেট একপেশে হয়ে উঠছে। ব্যাটে-বলে ভারসাম্য থাকছে না। এতে দর্শক অনাগ্রহ বাড়ছে, ‘একসময় এক দিনের ক্রিকেট ছিল এমন এক খেলা, যেখানে বোলারদেরও কিছু করার ছিল। ক্রিকেটপাগল আমি এখন একপর্যায়ে টিভি বন্ধ করে দিই। সত্যি বলছি, এই সংস্করণের জন্য এটা খুবই শঙ্কার ব্যাপার। যখন খেলাটায় আর উত্থান-পতন থাকে না, তখন আর এটা ক্রিকেট থাকে না। এটা তো আকারে বড় আরেকটা টি-টোয়েন্টিই।’
অশ্বিন বলছেন, খুব দ্রুত অবস্থান পরিষ্কার করতে না পারলে ওয়ানডে ক্রিকেট হারিয়ে যেতে পারে, ‘এটা প্রাসঙ্গিকতার প্রশ্ন এবং আমার ধারণা, ওয়ানডে ক্রিকেটে তার প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পাওয়া দরকার। তার জায়গা খুঁজে পাওয়া দরকার।’
ওয়ানডেতে এখন দুই প্রান্তে দুটি নতুন বল ব্যবহার করা হয়। ফলে ম্যাচের প্রায় পুরো সময় বলের আকার ঠিক থাকে, ঔজ্জ্বল্যও নষ্ট হয় না। অশ্বিনের ধারণা, আবার এক বলের নিয়মে ফিরে যাওয়ার চিন্তা শুরু করা উচিত, ‘আমার ধারণা, এক বলের ব্যাপারটা এ ক্ষেত্রে কাজে দিতে পারে। স্পিনাররাও শেষ দিকে বেশি বল করে ম্যাচে আরও বেশি অবদান রাখতে পারবে। রিভার্স সুইং আবার ফেরত আসবে, এটা তো খেলাটার জন্য খুব জরুরি।’
ওয়ানডে ক্রিকেটে উত্তেজনা ফেরাতে অশ্বিনের আরেকটি দাবি রয়েছে, ‘আমাদের উচিত ২০১০ সালে যে বল ব্যবহার করতাম সেগুলো ফেরানো। আমার মনে হয় না আগের সে বল এখন আর ব্যবহার করা হয়। বড় হওয়ার সময় নিয়মিত এক দিনের ক্রিকেট দেখতাম। গ্লেন ম্যাকগ্রা অসাধারণ একজন বোলার, কিন্তু বর্তমানের বল আগের মতো সাহায্য করছে না (ম্যাকগ্রার সময়ের তুলনায়)।’