টি-টোয়েন্টি লিগ এসএ ২০ না হলে দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট ক্রিকেটও থাকবে না, এমন মন্তব্য করেছেন দলটির টেস্ট কোচ শুকরি কনরাড। ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগটিতে দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটাররা ব্যস্ত থাকবেন বলে নিউজিল্যান্ডে দ্বিতীয় সারির দল পাঠাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা, এর পরিপ্রেক্ষিতে ওঠা সমালোচনার জবাবে এমন বলেন কনরাড। জাতীয় দলকে ক্রিকেট সূচিতে টি-টোয়েন্টি লিগটির সঙ্গে সহাবস্থানে থাকার উপায় বের করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
সূচির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে নিউজিল্যান্ডে টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা অধিনায়কের নেতৃত্বে দল পাঠাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা, যাতে সাতজনের অভিষেক হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট ক্রিকেটকে অসম্মান করছে, এমন সমালোচনাও হচ্ছে। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার দিক থেকে বেশি সমালোচনা শুনতে হচ্ছে তাদের। সাবেক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ বলেছেন, এটি টেস্ট ক্রিকেটের মৃত্যুর পথে নির্ধারণী মুহূর্ত কি না।
ওয়াহর মন্তব্য নিয়ে জানতে চাইলে কনরাড বলেন, ‘আমার মনে হয় না আমি কী বললাম তাতে স্টিভ ওয়াহর খুব বেশি কিছু এসে যাবে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বাইরে সবাই যে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট নিয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন, তা দেখে ভালো লাগছে।’
এখানে আর কিছু করার ছিল না বলেও মনে করেন তিনি, ‘আমাদের হাত বাঁধা। সবাই বুঝছে এসএ ২০ হতে হবে। এসএ ২০ হতে হবে কারণ দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে এটি জীবনীশক্তি। এটি না হলে আমাদের আসলে টেস্ট ক্রিকেটও থাকবে না। আমাদের এ লিগের সঙ্গে সহাবস্থানের একটা উপায় বের করতে হবে, আমাদের বিশ্বের অন্যান্য লিগের সঙ্গে সহাবস্থান বজায় রাখতে হবে খেলার স্থায়িত্ব ধরে রাখতে।’
এদিকে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা এক বিবৃতিতে জানায়, ২০২৩-২৭ সালের এফটিপি (ভবিষ্যৎ সফর পরিকল্পনা) ঠিক করার সময় এসএ ২০ সূচিতে ছিল না। এরপর নিউজিল্যান্ড সফরের সঙ্গে সূচি সাংঘর্ষিক হয়ে যাচ্ছে, সেটি বোঝার পর বদলানোর চেষ্টা করেও পারেনি তারা। যদিও ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, এফটিপির আলোচনা চলার সময়ই এসএ ২০–এর ব্যাপারটি জানত ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা।
যেভাবেই এ অবস্থা তৈরি হোক না কেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিনি যে খুশি নন, সেটিও বুঝিয়ে দিয়েছেন কনরাড, ‘হ্যাঁ, গুবলেট হয়ে গেছে অথবা কেউ সূচি করতে গিয়ে ভুল করেছে এবং এ কারণেই আমরা এখন এ অবস্থানে। দুর্ভাগ্যজনক, তবে (এসএ ২০) লিগের মূল্যটা গত বছরই আমরা সবাই দেখেছি।’
আপাতত দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায়ও নেই কনরাডের। তবে সে সফরে সম্ভাব্য সেরা প্রস্তুতি নিয়েই যেতে চান তিনি, ‘আমরা যেটি করেছি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ‘এ’ দলের সফরকে কাজে লাগিয়েছি। নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে আমরা কদিন আগেই রওনা দেব, যাতে সেখানে প্রস্তুতি নিতে পারি। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির টেস্টের জন্য আমরা ১৯ জানুয়ারি দেশ ছাড়ব।’
দিন শেষে সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকাই খেলবে, কনরাড মনে করিয়ে দিয়েছেন তা, ‘দক্ষিণ আফ্রিকাই কিন্তু সেখানে যাচ্ছে। আমরা ভিন্ন কোনো জাতীয় সংগীত গাইব না। ভিন্ন ব্লেজার পরব না বা এমন কিছু। নিজেদের সেরা সুযোগটিই দিতে যাচ্ছি আমরা। দক্ষিণ আফ্রিকা আন্ডারডগ হিসেবে যাচ্ছে, এ ব্যাপারটিই আমার পছন্দ না। কারণ, আমার মনে হয় না আমাদের কখনো কোনো কাজে আন্ডারডগ থাকা উচিত, তবে আমরা আন্ডারডগ হিসেবেই যাচ্ছি। একটি ড্র বা একটি জয় যদি ছিনিয়ে আনতে পারি, তাহলে আমাদের জন্য বিশাল ব্যাপার হবে।’
৪ ফেব্রুয়ারি মাউন্ট মঙ্গানুইতে শুরু প্রথম টেস্ট, দ্বিতীয় টেস্ট শুরু ১৩ ফেব্রুয়ারি হ্যামিল্টনে।