বিশ্বকাপের দুর্দশা ভুলে ইংল্যান্ডের নতুন পথে এগোনোর শুরুটা হতে পারত এ সিরিজ। কিন্তু ক্যারিবীয়তে আবার হোঁচট খেয়েছে তারা। ১৯৯৮ সালের পর সেখানে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজে হেরেছে তারা, যেটি নিশ্চিত হয়েছে গত পরশু বার্বাডোজে শেষ ওয়ানডে হারের পর। তবে এ সিরিজেও ‘ভালো ইঙ্গিত’ আছে জানিয়ে ইংল্যান্ড কোচ ম্যাথু মট ধৈর্যই ধরতে বলেছেন।
বিশ্বকাপের পর জস বাটলারের দল এ সফরে গেছে নতুন চেহারাতেই। অধিনায়ক বাটলার ছাড়া আর মাত্র তিনজনের ছিল ১০টির বেশি ওয়ানডের অভিজ্ঞতা। তবে তিন ম্যাচেই নিজেদের ভালো সুযোগ থাকলেও দুটিতেই হেরেছে ইংল্যান্ড।
অ্যান্টিগায় শেষ দিকে শাই হোপ ও রোমারিও শেফার্ডের ঝড়ে ৪ উইকেটে হারে ইংল্যান্ড, যেটি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে রেকর্ড রান তাড়া। দ্বিতীয় ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতলেও বার্বাডোজে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৪ উইকেটে হারে বাটলারের দল। সে হারের পর মট বলেছেন, ‘আমরা পূর্ণাঙ্গ পারফরম্যান্স দেখাতে পারিনি এবং সেটিই হতাশার। তিন ম্যাচেই জয়ের সুযোগ তৈরি করলেও সিরিজ হার নিয়েই ফিরতে হয়েছে, যেটি আদর্শ কোনো ব্যাপার নয়।’
বিশ্বকাপের পর থেকেই পুনর্গঠনের আলোচনা উঠেছে ইংল্যান্ডে। ক্যারিবীয় সফরের দলটি ছিল তারই ইঙ্গিত। সিরিজ হারলেও এখান থেকে ভালো ইঙ্গিত পাচ্ছেন মট, ‘এই দলের খেলোয়াড়েরা একে অন্যের সঙ্গে খেলতে ভালোবাসে, যেটি ভালো ইঙ্গিত। কয়েকজন সত্যিই ভালো বন্ধু আছে এখানে, আমার মনে হয়, এটিই খেলাকে সামনে এগিয়ে নেবে।’
দলের লড়াইয়েও ভালো কিছুর আভাস পাচ্ছেন তিনি, ‘আমার মনে হয়, আজ (তৃতীয় ওয়ানডেতে) সারা দিনই চাপের মুখে লড়াইয়ের মানসিকতা দেখিয়েছি। অজুহাত দিতে চাইব না, তবে দল হিসেবে খেলা, লড়াইয়ের মানসিকতা দেখানো, ঝাঁপিয়ে পড়া এবং প্রায় জয় ছিনিয়ে আনার ব্যাপারগুলোই আসলে পেতে চাই আমরা।’
মট আলাদা করে প্রশংসা করেছেন অলরাউন্ডার স্যাম কারেন ও লেগ স্পিনার রেহান আহমেদের। প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ে অবদান রাখলেও ইংল্যান্ডের সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড গড়া কারেন দ্বিতীয় ম্যাচে ফিরে আসেন দারুণভাবে, ৩৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে হন ম্যাচসেরা। এই অলরাউন্ডারকে নিয়ে মট বলেছেন, ‘স্যাম নিশ্চিতভাবেই এমন একজন খেলোয়াড়, যার ওপর আমরা বিনিয়োগ করতে চাই। আমাদের পছন্দের অনেক গুণ আছে তার।’
অন্যদিকে ১৯ বছর বয়সী রেহান ছিলেন সিরিজে ইংল্যান্ডের অন্যতম ইতিবাচক দিক। আদিল রশিদের অনুপস্থিতিতে ২৩.৪০ গড়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন, বোলিং করেছেন ওভারপ্রতি ৪.৩৩ রান খরচ করে। মটের ভাষায়, রেহান হচ্ছেন সিরিজের ‘আবিষ্কার’।
বেশ কিছুদিন ধরেই ওয়ানডে খেলার পর এ সফরেই পছন্দের টি-টোয়েন্টিতে ফিরছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। দলটিও ফিরছে পুরোনো চেহারায়। টি-টোয়েন্টি সিরিজে যোগ দেবেন পাঁচজন—ক্রিস ওকস, রশিদ, মঈন আলী, রিস টপলি ও টাইমাল মিলস।
ইংল্যান্ডকে ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানো মটের আশা, ওয়ানডেতে হারের পর টি-টোয়েন্টিতে ভালো করবে তাঁর দল, ‘আমরা লম্বা সময় ধরেই টি-টোয়েন্টি ভালো খেলেছি। একটা সিরিজ হারের পর সংস্করণ বদলানো সব সময়ই ভালো। দ্রুতই সামনে এগোতে হবে, কয়েক দিনের মধ্যেই বলে তেমন আলাদা কিছু হবে না। অবশ্যই অভিজ্ঞ কয়েকজন আসছে। তবে তাতে তেমন পার্থক্য তৈরি হবে না।’
টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং যে তাদের সঙ্গে বেশি মানানসই, সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন মট, ‘বিশেষ করে, ব্যাটিং দলের জন্য এটি আরও স্বচ্ছ—মাঠে গিয়ে আপনি আক্রমণ করবেন। আর বোলিং বিভাগের জন্য আপনি বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করবেন, যতটা পারা যায় প্রতিপক্ষকে মারার সুযোগ দেবেন না। আমার মনে হয় ভালোই করব।’