বলে এখন থেকে আর লালা লাগানো যাবে না
বলে এখন থেকে আর লালা লাগানো যাবে না

ওয়ানডেতেও আসছে স্লো ওভার-রেটের পেনাল্টি

এ বছরের জানুয়ারি থেকেই টি-টোয়েন্টিতে স্লো ওভার-রেটের কারণে মাঠেই পেনাল্টির নিয়ম চালু করেছিল আইসিসি। এবার সেটি কার্যকর হচ্ছে ওয়ানডেতেও। ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ সুপার লিগের এখনকার চক্র শেষ হওয়ার পর ৫০ ওভারের ক্রিকেটেও দেখা যাবে এ নিয়ম। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওভার শেষ করতে না পারলে বাকি সময় বাড়তি একজন ফিল্ডারকে থাকতে হবে ৩০ গজের বৃত্তের মধ্যে।

বোলাররা লালা মাখছেন বলে—ক্রিকেট মাঠের অন্যতম পরিচিত দৃশ্যটাও দেখা যাবে না আর। করোনা মহামারির সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রিকেট চালু করতে ২০২০ সালের মে মাসে বলে লালা মাখানোর কাজটি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি)। সাময়িক সেই নিষেধাজ্ঞাকে এবার স্থায়ী করেছে আইসিসি। ক্রিকেট বলে লালা মাখানোটা এখন থেকে পুরোপুরিই নিষিদ্ধ। আইসিসির নতুন প্লেয়িং কন্ডিশনে যুক্ত করা হয়েছে এ ধারা।

লম্বা সময় ধরে বাতাসে বলে সুইং করাতে লালা ব্যবহার করে আসছিলের বোলাররা। যদিও দুই বছর ধরে কাজটি করতে পারছিলেন না তাঁরা।  তবে তাতে বল সুইং করানোয় খুব একটা উনিশ–বিশ হয়নি।

বলে লালা মাখানো স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে আইসিসির পক্ষ এক বিবৃতিতে থেকে বলা হয়, ‘করোনার কারণে বলে লালা মাখানোসংক্রান্ত সাময়িক নিষেধাজ্ঞা গত দুই বছর ধরে বহাল ছিল। এটিকে এখন স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা উপযুক্ত বলে বিবেচনা করা হয়েছে।’

পরিবর্তন আসছে ক্রিকেটের অনেকগুলো নিয়মে

তবে এই একটি নিয়মই শুধু নয়, আইসিসি আরও আরও বেশ কিছু নিয়মে পরিবর্তন এনেছে। আগামী মাসে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে এই সব নিয়ম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে আইসিসি।

বোলার বল ছাড়ার আগে নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে থাকা ব্যাটসম্যান বেরিয়ে এলে তাঁকে আউট করা অনেক দিন ধরেই খেলোয়াড়ি চেতনার বিরোধী বলে বিবেচনা করা হচ্ছিল। ক্রিকেট-বিশ্বে এই আউটটি ‘মানকাড’ নামে পরিচিত। ১৯৪৮ সালে সিডনি টেস্টে ভারতীয় বোলার ভিনু মানকড় এই কৌশলে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান বিল ব্রাউনকে আউট করেছিলেন।

তবে এই নিয়ম আসলেই চেতনাবিরোধী কি না, তা নিয়ে বিতর্কও হয়েছে অনেক। তবে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আইসিসি নির্বাহী কমিটি এই আউটটি আর চেতনাবিরোধী নয় বলে জানিয়েছে। এখন থেকে এই আউটটি সাধারণ রানআউট হিসেবেই বিবেচিত হবে।

বোলার বল ছোড়ার আগেই ব্যাটসম্যান বেরিয়ে গেছেন ক্রিজ থেকে। সেই সুযোগ বল না ছুড়ে বোলার ফেলে দিলেন বেল। হয়ে গেল রানআউট। এটিকেই বলে মানকাড আউট

তবে স্ট্রাইকিংয়ে থাকা ব্যাটসম্যান সামনে বেরিয়ে এলে ডেলিভারি স্ট্রাইডে (পা ফেলার জায়গা) ঢোকার আগে বল ছুড়ে রানআউট করতে পারবেন না বোলাররা। যদি তা করা হয়, তবে সেই বলটি ডেড বল হিসেবেই বিবেচিত হবে। এত দিন ক্যাচ ধরার আগে ব্যাটসম্যানরা নিজেদের ক্রস করলে নতুন ব্যাটসম্যান এসে নন-স্ট্রাইকারে দাঁড়াতেন। সেই নিয়মটিতেও পরিবর্তন এনেছে আইসিসি। নতুন ব্যাটসম্যানই এখন থেকে পরের বলটি খেলবেন। ইংল্যান্ডের দ্য হান্ড্রেডে এটি প্রথম চালু হওয়ার পর আইসিসিও হাঁটল সে পথে।

একজন ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পর টেস্ট ও ওয়ানডেতে নতুন ব্যাটসম্যান উইকেটে আসার জন্য আগে সময় পেত ৩ মিনিট। সেই সময় কমিয়ে এখন ২ মিনিটে নামিয়ে আনা হয়েছে। তবে টি-টোয়েন্টিতে আগের মতো ৯০ সেকেন্ডই সময় পাবেন ব্যাটসম্যানরা।

এসব পরিবর্তনের সঙ্গে নতুন নিয়মও নিয়ে এসেছে আইসিসি। বোলার বোলিং করতে দৌড় শুরুর সময় ফিল্ডাররা যদি অন্যায্যভাবে ও ইচ্ছাকৃতভাবে জায়গা বদলান, তবে ব্যাটিং দলকে ৫ রান বাড়তি দেওয়া হবে।

উইকেটেও আসছে পরিবর্তন

এখন থেকে পুরুষ ও নারীদের আন্তর্জাতিক ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে হাইব্রিড উইকেটকেও অনুমোদন দিয়েছে আইসিসি। এই হাইব্রিডটি উইকেটটি প্রাকৃতিক ঘাস এবং কৃত্রিম টার্ফের সমন্বয়ে তৈরি করা হবে। এর আগে এটি কেবল নারীদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেই দেখা যেত।

ওপরের নিয়মগুলোর বেশিরভাগই গত মার্চে ক্রিকেটের আইনে এনেছিল এমসিসি। ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর নেতৃত্বাধীন আইসিসির ক্রিকেট কমিটির সুপারিশের পর প্রধান নির্বাহীদের কমিটির সভাশেষে প্লেয়িং কন্ডিশনে এসব নিয়ম যুক্ত করেছে আইসিসি।