সম্প্রতি শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজন নিয়ে আইসিসির একাধিক বোর্ডের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে এ মাসে অনুষ্ঠেয় আইসিসির সভায় প্রশ্ন তোলা হবে বলেও জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে যৌথভাবে আয়োজিত বিশ্বকাপে ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্রে এবারই প্রথম আইসিসির কোনো বৈশ্বিক ট্রফি অনুষ্ঠিত হলো, যদিও গ্রুপ পর্বের পরে সেখানে কোনো ম্যাচ হয়নি। সুপার এইট, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিভিন্ন ভেন্যুতে। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য সমাপ্ত এ টুর্নামেন্ট নিয়ে সামনের সভায় প্রশ্ন তুলবে আইসিসির একাধিক সদস্য।
নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামসহ ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাধিক পিচ ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। টি-টোয়েন্টির আদর্শ বিজ্ঞাপন হতে পারে কি না এমন পিচ, বিশ্বকাপ চলার সময়ই এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। যদিও কঠিন পিচের কারণে ব্যাট-বলের লড়াইয়ে একটা ভারসাম্য ছিল, সেটিও অনেকে মনে করেন।
তবে বিশ্বকাপজুড়েই লজিস্টিক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। যুক্তরাষ্ট্রসহ মোট সাতটি দেশে হয়েছে বিশ্বকাপ। ক্যারিবিয়াতে এক ঘণ্টার ফ্লাইটেও মাঝেমধ্যে ২০ ঘণ্টা লেগেছে। গায়ানায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালের পর ফাইনালের ভেন্যু বার্বাডোজে যাওয়ার সরাসরি কোনো ফ্লাইট ছিল না।
ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে খেলেছিল ইংল্যান্ড, তবে গায়ানায় ব্রিটিশ প্রিন্ট মিডিয়ার মাত্র একজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। শেষ পর্যন্ত আইসিসি তাদের চার্টার ফ্লাইটে সাংবাদিকদের গায়ানা থেকে বার্বাডোজে আনে। তবে সমর্থকদের স্বাভাবিকভাবেই সে সৌভাগ্য হয়নি। ফাইনালে দর্শক উপস্থিতি ভালো থাকলেও গ্যালারি পূর্ণ ছিল না।
গায়ানায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বৃষ্টি বাগড়া দিয়েছে একাধিকবার। তবে সে ম্যাচের জন্য কোনো রিজার্ভ ডে ছিল না। ভারত আবার টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকেই জানত, সেমিফাইনালে উঠলে তারা কোন মাঠে খেলবে। ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা সেমিফাইনালে ওঠা নিশ্চিত করলেও তারা কোন মাঠে খেলবে, সেটি তাই নিশ্চিত ছিল না। এ নিয়মের সমালোচনাও করেছেন অনেকে।
ভারতীয় উপমহাদেশের, বিশেষ করে ভারতের টেলিভিশন দর্শকদের কথা মাথায় রেখে একটি সেমিফাইনাল, ফাইনালসহ অনেক ম্যাচই শুরু হয়েছিল স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে। সাধারণত টি-টোয়েন্টি ফ্লাডলাইটের নিচেই বেশি জমে বলে মনে করেন অনেকে। ভারতের টেলিভিশন দর্শকদের কথা মাথায় রেখে করা এ সূচির ছাপ ছিল ফাঁকা গ্যালারিতেও।
অবশ্য এবারই প্রথম ২০টি দল নিয়ে হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, টুর্নামেন্টটির ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ। সামনে দলের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে কি না, সে আলোচনাও উঠেছে। ২৪টি দল নিয়ে বিশ্বকাপ হলে ছয়টি দলের চারটি গ্রুপ হবে। এর মানে ভারতের মতো দলের ম্যাচও একটি বাড়বে। ফলে ব্রডকাস্টারদের কাছে সেটি আকর্ষণীয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে আইসিসির কর্মকর্তারা ক্রিকবাজকে বলেছেন, দলের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা এখনই তাদের নেই। ২০২৬ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, সেখানেও খেলবে ২০টি দলই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তার পরের দুটি আসর ২০২৮ সালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড এবং ২০৩০ সালে যুক্তরাজ্য, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হবে। ওই দুটি আসরে দলের সংখ্যা বাড়ানোর সম্ভাবনা অবশ্য এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।