১৬.৪ ওভারে ১০৯ রানে অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাসকিনের বলে বোল্ড হলেন ম্যাকয়। উল্লাসে মেতে উঠলেন লিটন-হাসানরা। গ্যালারিতে জাকেরকে জড়িয়ে ধরলেন সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
৩-০ তে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই করল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে এই প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাইয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ ক্রিকেট। টেস্ট সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্রয়ের পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি সিরিজে সেই শোধটা তুলে নিল লিটনের দল।
২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে তাদের মাঠে ধবলধোলাইয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। ভারত, পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ডের পর চতুর্থ দল হিসেবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে একাধিক ম্যাচের সিরিজে এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠবারের মতো প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করার কীর্তি।
এই সিরিজে আমার সতীর্থদের শরীরী ভাষাটা দেখুন। আশা করি, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও ভালো করতে পারবসিরিজসেরা মেহেদী হাসান
সেই পথে আজ ব্যাটিংয়ে ৪১ বলে অপরাজিত ৭২ রানের অসাধারণ ইনিংসে শুরুটা করেছিলেন জাকের আলী। পরে বোলিংয়ে স্রেফ চোখ ধাঁধিয়েছেন প্রায় সবাই। ২১ রানে ৩ উইকেট রিশাদের। ১৩ রানে ২ উইকেট মেহেদীর, ৩০রানে ২ উইকেট তাসকিনের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন শেফার্ড।
বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে বলেছেন, ‘টেস্ট ও ওয়ানডেতেও (সিরিজ) আমরা ভালো করেছি। দূর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা জিততে পারিনি কিন্তু ভালো ক্রিকেট খেলেছি। তাই সব সিরিজেই ভালো খেলার আত্মবিশ্বাসটা ছিল। সবাইকে সব সময় বলেছি, চাপ না নিতে। খেলাটা উপভোগ করতে বলেছি। কারণ আমাদের খুব ভালো বোলিং ও ব্যাটিং আছে। ভালো স্কোর করলে, আমরা জানি যে কোনো স্কোরই ডিফেন্ড করতে পারব।’
বোলারদের প্রশংসা করে লিটন বলেছেন, ‘উইকেট ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো ছিল। বোলাররা যেভাবে নিজেদের জাতটা দেখিয়েছে সেটা অসাধারণ। বোলিং বিভাগের জন্য এটা বড় অর্জন।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৮৯/৭ (জাকের ৭২*, পারভেজ ৩৯, মিরাজ ২৯, তানজিম ১৭, লিটন ১৪; শেফার্ড ২/৩০, চেজ ১/১৫, মোতি ১/৩০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৬.৪ ওভারে ১০৯ (শেফার্ড ৩৩, চার্লস ২৩, পুরান ১৫, মোতি ১২; রিশাদ ৩/২১, মেহেদী ২/১৩, তাসকিন ২/৩০, তানজিম ১/৩১, হাসান ১/৯)
ফল: বাংলাদেশ ৮০ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: জাকের আলী (বাংলাদেশ)
সিরিজসেরা: মেহেদী হাসান (বাংলাদেশ)
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতল বাংলাদেশ।
সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভেল গ্রাউন্ডে কি আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করতে পারবে বাংলাদেশ?
উত্তর জানতে চোখ রাখুন টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে। এই মাঠে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে লিটন দাসের দল।
প্রথম ম্যাচ ৭ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেছে ২৭ রানে।
আজ তৃতীয় ম্যাচটি জিতে বাংলাদেশ কি পারবে ভারত, পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের কীর্তি ছুঁতে?
আগেই দুঃসংবাদ দিয়েছেন সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় ম্যাচে আঙুলে চোট পাওয়ায় আজকের ম্যাচটি খেলছেন না তিনি।
অধিনায়কত্ব প্রশংসিত হলেও লিটন দাসের ব্যাটে রান নেই। বাংলাদেশ দলের ক্যারিবিয়ান কোচ ফিল সিমন্সের আশা লিটন রানে ফিরবেন। জয়ে সিরিজ শেষ করতে চান তিনি।
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ লিটন দাস। চোট পাওয়া সৌম্য সরকারের জায়গায় খেলছেন পারভেজ হোসেন। বাঁহাতি এ ওপেনার এর আগে ৬টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন।
লিটন ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেছেন, ‘ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো উইকেট মনে হচ্ছে। এই দলটির অধিনায়কত্ব করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। উপভোগ করছি। আমরা সিরিজ জিতেছি। কিন্তু ভালো একটি দলের বিপক্ষে এটি আরেকটি ম্যাচ। আমরা দল হিসেবে পারফর্ম করতে চাই।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে দুটি পরিবর্তন। টি-টোয়েন্টি অভিষেক হচ্ছে জাস্টিন গ্রিভস ও জেইডেন সিলসের।
লিটন দাস (উইকেটকিপার ও অধিনায়ক), শামীম হোসেন, তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, জাকের আলী, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান, মেহেদী হাসান, তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ।
ব্রান্ডন কিং, জনসন চার্লস, নিকোলাস পুরান (উইকেটকিপার), জাস্টিন গ্রিভস, রোভম্যান পাওয়েল (অধিনায়ক), রোমারিও শেফার্ড, রোস্টন চেজ, জেইডেন সিলস, গুড়াকেশ মোতি, আলজারি জোসেফ, ও ওবেদ ম্যাকয়।
আন্দ্রে ফ্লেচার ও আকিল হোসেনের জায়গায় খেলছেন গ্রিভস ও সিলস।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০০তম টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড় জেইডেন সিলস।
পেসার সিলস ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০০তম টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড়। বাংলাদেশের এ পর্যন্ত ৯০ জন ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন। পাকিস্তান, ভারত, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এই সংস্করণে অন্তত ১০০ জন খেলোয়াড় খেলেছেন।
সবচেয়ে বেশি ১১৮ জন খেলেছেন ভারত ও পাকিস্তানের হয়ে। দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয়া (১১১) ও যৌথভাবে তৃতীয় শ্রীলঙ্কা (১০৯) ও দক্ষিণ আফ্রিকা (১০৯)।
সিলস করলেন প্রথম ওভার। তাঁর পঞ্চম বলে কাভার দিয়ে দারুণ ড্রাইভে চার মারেন পারভেজ। লিটন ২ বলে ১ রানে অপরাজিত। পারভেজ শেষ বলে সিঙ্গেল নেন।
বাংলাদেশ ১ ওভারে বিনা উইকেটে ৬ রান।
দ্বিতীয় ওভারে পেসার রোমারিও শেফার্ডের দ্বিতীয় বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চোখ জুড়ানো চার লিটনের। স্পিনার আকিল হোসেন নেই। বিগ ব্যাশে খেলতে তিনি এখন অস্ট্রেলিয়ায়। আগের দুই ম্যাচেই আকিলের বলে আউট হওয়া লিটন আজ অন্তত স্বস্তি নিয়ে ব্যাট করতে পারেন।
শেফার্ডের শেষ বলে স্ট্রেট ড্রাইভে চার মারলেন পারভেজ। ধারাভাষ্যে ইয়ান বিশপ বললেন, ‘হি লুকস নো ননসেন্স ক্রিকেটার!’
বাংলাদেশ ২ ওভারে বিনা উইকেটে ১৬। পারভেজ ৬ বলে ১০ ও লিটন ৬ বলে ৫ রানে অপরাজিত।
সিলসের করা তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে আগের চারের কার্বন কপি মারলেন লিটন। দর্শনীয় শট! চতুর্থ বলে পুল করে চার মারলেন পারভেজ। মুগ্ধ বিশপ বললেন, ‘ওয়ান সাইড ইজ গ্রেস, আদার সাইড ইজ পাওয়ার!’
বাংলাদেশ ৩ ওভারে বিনা উইকেটে ২৮। পারভেজ ৯ বলে ১৭, লিটন ৯ বলে ১০।
বোলার পাল্টে চতুর্থ ওভারে আলজারি জোসেফকে এনেছেন অধিনায়ক পাওয়েল। তাঁর দ্বিতীয় বলে স্রেফ টাইমিংয়ের ওপর ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার মারলেন পারভেজ। সুন্দর মিডলিং। পঞ্চম বলটি ছিল ১৩৭.৪ কিমির। একটু উঠেছিল। পারভেজ অন দ্য রাইজে অবিশ্বাস্য টাইমিংয়ে মিড অন দিয়ে বলকে বাতাসে ভাসিয়ে সীমানা পার করলেন। বিশপের কণ্ঠে, ‘ইনক্রেডিবল শট!’
১২ রান এল এই ওভারে।
বাংলাদেশ ৪ ওভারে বিনা উইকেটে ৪০।
শেফার্ডের প্রথম বলে দারুণ স্ট্রেট ড্রাইভ চার মেরেছেন লিটন। চতুর্থ বলে পুল করতে গিয়ে বল তুললেন আকাশে। কিং ক্যাচটি নিলেন। ১৩ বলে ১৪ করে আউট লিটন। এ বছর পুল করায় সমস্যা হচ্ছে লিটনের।
তিনে নেমেছেন তানজিদ হাসান।
বাংলাদেশ ৫ ওভারে ১ উইকেটে ৪৪। পারভেজ ১৫ বলে ২৯ রানে অপরাজিত।
ষষ্ঠ ওভারে আলজারির পঞ্চম বলে মিড উইকেট দিয়ে দারুণ ছক্কা পারভেজের। পরের বলে ফ্লিক করে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে সিলসের তালুবন্দী পারভেজ। গতিতে পরাস্ত হয়েছেন। ভালো টাইমিং হয়নি। বলটি ১৪৫ কিমি গতিতে ছিল। ২১ বলে ৩৯ রানে ফিরলেন। ২টি ছক্কা ও ৪টি চার মেরেছেন।
চারে নেমেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ৫৪। এই সিরিজে পাওয়ার প্লে-তে এটাই সর্বোচ্চ রান।
আক্রমণে স্পিনার। রোস্টন চেজ ৭ম ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়েছেন। বাংলাদেশ ৭ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৫৯। তানজিদ ৫ বলে ৩ এবং মিরাজ ৩ বলে ২ রানে অপরাজিত। ৮ম ওভারে আক্রমণে আরেক স্পিনার মোতি।
৮ম ওভারে মোতির প্রথম বলেই স্ট্রেট দিয়ে ছক্কা মারেন তানজিদ। চতুর্থ বলটি একটু পেছনের লেংথে পড়ায় তানজিদ টেনে মিড উইকেট দিয়ে মারতে চেয়েছিলেন। বল তাঁর ব্যাটে লেগে প্যাড হয়ে মাথার ওপরে উঠেছে। উইকেটকিপার পুরান ক্যাচ নেন। দুভার্গা! ৯ বলে ৯ রানে ফিরলেন তানজিদ। ৭ রানে ১ উইকেট নিলেন মোতি।
পাঁচে নেমেছেন জাকের।
বাংলাদেশ ৮ ওভারে ৩ উইকেটে ৬৬।
নিজের দ্বিতীয় ওভারেও ভালো করলেন চেজ। মাত্র ৪ রান দিয়েছেন। বাংলাদেশ ৯ ওভারে ৩ উইকেটে ৭০। মিরাজ ৬ বলে ৪ ও জাকের ৫ বলে ৩ রানে অপরাজিত। ১৯ বলের মধ্যে ৩ উইকেট হারানোর পর একটি জুটি দরকার বাংলাদেশের।
ইনিংসের মাঝ পথ পর্যন্ত ভালোই করল বাংলাদেশ। লিটন-পারভেজে শুরুটা ছিল খুব ভালো। ৪.৩ ওভারে উঠেছে ৪৪ রান। এরপর ৪.৪ ওভার থেকে ৭.৪ ওভারের মধ্যে মোট ১৯ বলের মধ্যে মোট ২১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে একটু চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ সময় ম্যাচে ফিরেছে। ক্রিজে এখন মিরাজ ও জাকের চাপ কাটিয়ে রানের গতি ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। মিরাজ ১০ বলে ৮ ও জাকের ৭ বলে ৫ রানে অপরাজিত।
ইনিংসের বাকি অর্ধেক পথটা দুই চারে শুরু করলেন মিরাজ। মোতির চতুর্থ বলে চার মারলেন কাভার দিয়ে। পরের বলটি ছিল আর্মার, অফ স্টাম্পের ওপর। লেট কাটে চার! এই ওভারে উঠল ১৩ রান।
বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ৮৯। মিরাজ ১৪ বলে ১৮, জাকের ৯ বলে ৬।
১২তম ওভারে ম্যাকয়ের প্রথম বলেই স্কুপ করে চার মারলেন মিরাজ। এই ওভারে ৯ রান উঠল।
বাংলাদেশ ১২ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ৯৮।
চেজের করা পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে ১০০ পেল বাংলাদেশ। কিন্তু পঞ্চম বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়লেন মিরাজ। ক্যাচ নিলেন গ্রিভস। ২৩ বলে ২৯ রানে ফিরলেন মিরাজ। চতুর্থ উইকেটে ৩১ বলে ৩৭ রানের জুটি ভাঙল তাঁদের।
ছয়ে নেমেছেন শামীম হোসেন। বাংলাদেশ ১৩ ওভারে ৪ উইকেটে ১০২।
অসাধারণ এক দৃশ্য! ক্রিকেট এই শিক্ষাই দেয়! এটাই ক্রিকেট!
১৪তম ওভারে মোতির প্রথম বলে টেনে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে মেরেছিলেন জাকের। ফ্লাট বলটি বুলেটের বেগে যাচ্ছিল। হোমবয় ম্যাকয় সীমানায় ডাইভ দিয়ে ক্যাচ নেওয়ার চেষ্টা করলেও হাতে রাখতে পারেননি। হাতে আঘাতও পান। ২ রান নেওয়ার পর ম্যাকয় আঘাত পাওয়ায় আর রান নেননি জাকের ও শামীম। ধারাভাষ্যকার বিশপ ‘গ্রেট স্পোর্টসম্যানশিপ’ বলে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যানকে।
তৃতীয় বলে অবশ্য স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরেছেন জাকের।
বাংলাদেশ ১৪ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ১১২।
কোত্থেকে শুরু করা যায়!
চেজের করা ১৫তম ওভারের তৃতীয় বলে ২ রান নিতে চেয়েছিলেন জাকের। ১ রান নেওয়ার পর জাকের দৌড় শুরু করলেও শামীম সাড়া দেননি। প্রথম ভাবা হয়েছিল জাকের রান আউট। কারণ দুজনেই এক প্রান্তে! রাগে গজরাতে গজরাতে জাকের ড্রেসিংরুমে ফিরেও গিয়েছিলেন। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার ভিডিও রিপ্লেতে দেখেছেন, ওই প্রান্তে শামীমের আগে জাকের ক্রিজে ব্যাট প্লেস করেছেন। অর্থাৎ জাকের নয়, শামীম রান আউট! ততক্ষণে জাকের ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়েছেন!
জাকের ফিরলেন মাঠে। শামীম চলে গেলেন ড্রেসিংরুমে। ক্রিজে এলেন মেহেদী হাসান।
৪ বলে ২ রানে ফিরলেন শামীম।
চেজের করা ওই ওভারের পঞ্চম বলে রান চুরি করতে গিয়ে আউট মেহেদী। কোনো বল না খেলেই শূন্য রানে ফিরলেন। ক্রিজে তানজিম।
বাংলাদেশ ১৫ ওভারে ৬ উইকেটে ১১৪।
ক্রিজে থাকতে আগের ওভারে দুটি রান আউট দেখেছেন। ঝালটা মেটানোর চেষ্টা করলেন পরের ওভারে আলজারির ওপর। ১৬তম ওভারে তাঁর দ্বিতীয় বলে চার মারার পর শেষ বলে ছক্কা মারলেন স্ট্রেট দিয়ে। ১২ রান উঠল এই ওভারে।
বাংলাদেশ ১৬ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৬। জাকের ২৩ বলে ২৯ রানে অপরাজিত।
শেফার্ডের চতুর্থ বলে চার মেরেছেন তানজিম। মারার চেষ্টা করছেন। এই ওভারে ১০ রান তুলে বাংলাদেশের স্কোর ১৭ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩৬ রানে নিলেন জাকের-তানজিম।
১৮তম ওভারে ম্যাকয়ের প্রথম বলটি ছিল ‘নো’। জাকের তার আগেই অফ স্টাম্পে সরে এসেছিলেন। যেখানে বলটা চেয়েছেন ম্যাকয় সেখানেই বলটা ফেললেন! হাফ ভলি! বলটা ব্যাটে চামচের মতো এত জোরে তুলেছেন যে স্টেডিয়ামের গ্যালারির ছাদে পড়ে একদম বাইরে! ধারাভাষ্যকার বললেন, জাকের অ্যান্ড ক্যারিবিয়ান ম্যাচ মেড ইন হ্যাভেন!
পরের বলে পয়েন্ট দিয়ে চার জাকেরের।
পঞ্চম বলে তানজিমেরও বিশাল ছক্কা। ব্যাটে সুইট সাউন্ড! এবার লং অন দিয়ে। ইটস রেইনিং সিক্সেস!
২০ রান উঠল এই ওভারে।
বাংলাদেশ ১৮ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৬। জাকের ৩০ বলে ৪৪, তানজিম ৯ বলে ১৫ রানে অপরাজিত।
এই ওভারে শেফার্ডের শেষ বলে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে আউট তানজিম। ১১ বলে ১৭ রানের দারুণ ইনিংস খেললেন। এর মধ্য দিয়ে ২৭ বলে দুজনের ৫০ রানের জুটিও ভাঙল। এই জুটিতে জাকেরের অবদান ১৫ বলে ৩০।
ক্রিজে নামলেন রিশাদ হোসেন।
বাংলাদেশ ১৯ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৪। জাকের ৩৪ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত।
গ্যালারি একদম নিশ্চুপ!
তৃতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ বলে ছক্কা মেরেছেন জাকের। শেষটি স্টেডিয়ামের বাইরে। তৃতীয় বলে মারা ছক্কাটি হতে পারে এই সিরিজের সেরা শট। আলজারির ওয়াইড লেংথের বল টেনে লং অন দিয়ে বিশাল ছক্কা। চতুর্থ বলটি ছিল ফুল টস। এক্সট্রা কাভার দিয়ে ছক্কা!
শেষ ওভারে উঠল ২৫ রান। ইটস অ্যা জাকের শো!
বাংলাদেশ ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮৯।টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেওয়া জাকের ৪১ বলে ৭২ রানে অপরাজিত। রিশাদ শূন্য বলে শুন্য রানে অপরাজিত।
কথাটি ক্যারিবিয়ান ধারাভাষ্যকার স্যামুয়েল বদ্রির। সাবেক এই স্পিনার জাকেরকে আপন করে নিতে ক্যারিবিয়ান আদলে তৈরি মানুষ বলতে চান হয়তো! আর ক্রিপ্টোনাইট শব্দটা ব্যবহার করেছেন ‘সুপারম্যান’সুলভ ব্যাটিং করায়।
২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮৯ রান তুলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে জাকেরের একার অবদান ৬ ছক্কা ও ৩ চারে ৪১ বলে অপরাজিত ৭২। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ বলে ৩৯ পারভেজের। ২৩ বলে ২৯ রান করেন মিরাজ।
শেষ ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান তুলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে জাকেরের অবদান ৩৫ বলে ৬৮!
শেষ ৫ ওভারে ১ উইকেটে ৭৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। জাকের একাই তুলেছেন ২৩ বলে ৫৪! ধারাভাষ্যকারেরা বলছিলেন ‘অ্যা সুপারস্টার ইন মেকিং!’
জিততে হলে এই মাঠে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিততে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এই মাঠে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান তুলেছে বাংলাদেশ এই ম্যাচে। এর আগে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ১৫৯ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। আজকের আগে এটাই ছিল সর্বোচ্চ।
ফিল্ডিংয়ে দুটি চার ছেড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিনটি ‘নো’ বলও হয়েছে। ৩০ রানে ২ উইকেট শেফার্ডের। ১৫ রানে ১ উইকেট নেন চেজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে দ্বিতীয় বলেই ব্রান্ডন কিংকে ফেরালেন তাসকিন। সিরিজে এ নিয়ে তৃতীয়বার! এলবিডব্লু। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি।
তিনে নেমেছেন গ্রিভস। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ০.৫ ওভারে ১ উইকেটে ৫ রান তোলার পর হানা দিয়েছে বৃষ্টি। খেলা আপাতত বন্ধ। মাঠ কাভারে ঢাকা।
আপডেট: খেলা শুরু হয়েছে বৃষ্টি থামার পর। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ ওভারে ১ উইকেটে ৫।
দ্বিতীয় ওভারে মেহেদীর তৃতীয় বলে লং অন দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে বদলি ফিল্ডার আফিফ হোসেনের ক্যাচের শিকার গ্রিভস। ৫ বলে ৬ রানে ফিরলেন।
চারে নেমেছেন নিকোলাস পুরান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ ওভারে ২ উইকেটে ৭ রান।
তৃতীয় উইকেটে ২৪ বলে ৩৮ রানের বিপজ্জনক জুটি গড়েছিলেন পুরান ও চার্লস। ৫.৩ ওভারে মেহেদীকে টেনে মারতে গিয়ে বোল্ড হন পুরান। ১০ বলে ১৫ রানে ফিরলেন। সিরিজে তিনবারই মেহেদীর বলে আউট হলেন পুরান।
তার আগে তৃতীয় ওভারে ১৪, চতুর্থ ওভারে ৪ ও পঞ্চম ওভারে ১৩ রান তুলেছিলেন পুরান-চার্লস জুটি। চতুর্থ ওভারে চার্লসকে আউট করতে মরিয়া মেহেদীর চাপাচাপিতে রিভিউ নিয়ে একটি রিভিউ নষ্টও করেছেন অধিনায়ক লিটন।
ক্রিজে চেজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ ওভারে ৩ উইকেটে ৪৫।
সপ্তম ওভারে আক্রমণে পেসার হাসান মাহমুদ। তৃতীয় বলেই মিড অফে মেহেদীকে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ৪ বলে শূন্য রান করা রোস্টন চেজ।
ক্রিজে অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ৪৬।
১০ বলের মধ্যে পড়ল ৩ উইকেট! এর মধ্যে শেষ দুটি উইকেট পড়েছে তিন বলের মধ্যে!
হাসানের করা সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে মিড উইকেট থেকে রিশাদের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট জনসন চার্লস। ১৮ বলে ২৩ রানে ফিরলেন তিনি। তৃতীয় আম্পায়ার ভিডিও রিপ্লে দেখে তাঁকে আউট দেন।
এই ওভারে ২ রানে পড়ল ২ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ ওভারে ৫ উইকেটে ৪৭। ক্রিজে পাওয়েলের সঙ্গী রোমারিও শেফার্ড।
৮ম ওভারে বোলিংয়ে এসে ৩ রান দিলেন লেগ স্পিনার রিশাদ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে ৫০। গ্যালারিতে প্রচুর হতাশাক্লিস্ট মুখ।
১০ম ওভারের পঞ্চম বলে রিশাদের হাফ ভলিকে ছক্কা মারতে গিয়ে উইকেটকিপার লিটনকে ক্যাচ দিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক পাওয়েল। ১২ বলে ২ রানে ফিরলেন। আসলে ‘’মুক্তি পেলেন হাঁসফাঁস থেকে।
এই ওভারের তৃতীয় বলে রিশাদকে ছক্কা মেরে চাপ কিছুটা আলগা করার চেষ্টা করেন শেফার্ড। কিন্তু আস্কিং রান রেট বেড়েছে অনেক বেশি।
ক্রিজে ৮ বলে ৯ রানে অপরাজিত শেফার্ড। অন্য প্রান্তে মোতি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০ ওভারে ৬ উইকেটে ৬০। জয়ের জন্য শেষ ৬০ বলে চাই ১৩০ রান।
১১তম ওভারে তানজিমকে দুটি ছক্কা মেরেছেন শেফার্ড। প্রথমটি প্রেসিডেন্ট স্যুইটের ওপর দিয়ে গ্যালারির বাইরে! ১৩ রান এসেছে এই ওভারে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১১ ওভারে ৬ উইকেটে ৭৩।
মোতি ১২তম ওভারে তাঁর দ্বিতীয় বলে স্লগ সুইপে ছক্কা মারলেও বাকি বলগুলো ভালো করেছেন রিশাদ। এই ওভারে উঠল ৯ রান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১২ ওভারে ৬ উইকেটে ৮২। ৪৮ বলে চাই ১০৮ রান। মোতি ৫ বলে ৭ ও শেফার্ড ১৬ বলে ২৪।
১৩তম ওভারে ৮ রান দিয়েছেন তাসকিন। শেষ বলে চার মেরেছেন শেফার্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩ ওভারে ৬ উইকেটে ৯০। ১৯ বলে ৩০ রানে অপরাজিত শেফার্ড।
হাসানের করা ১৪তম ওভারের তৃতীয় বলে পয়েন্টে বল ধরতে গিয়ে আঙুলে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে গিয়েছেন মেহেদী। প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁর একটি ওভার বাকি। এই ওভারে ৫ রান দিয়েছেন হাসান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪ ওভারে ৬ উইকেটে ৯৫। ৩৬ বলে চাই ৯৫ রান।
মেহেদী হাসান মিরাজকে এখনো বোলিংয়ে আনেননি লিটন।
নিজের শেষ ওভারে এসে প্রথম বলেই মোতিকে তুলে নিলেন রিশাদ। ডিপে তাঁর ক্যাচ নিলেন তানজিম। দুই বল পর আলজারি জোসেফও আউট। সফট ডিসমিসাল! সোজা কাভারে হাসানকে ক্যাচ শেখলেন। মোতি ১২ বলে ১২ ও আলজারি ২ বলে ১ রানে আউট।
ক্রিজে শেফার্ডের সঙ্গে ম্যাকয়। রিশাদের শেষ বলটি ম্যাকয় ও লিটনকে ফাঁকি দিয়ে চার হলো।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৫ ওভারে ৮ উইকেটে ১০১। ৪ ওভারে ২১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নিজের দারুণ বোলিং স্পেল শেষ করলেন রিশাদ।
জয়ের জন্য ৩০ বলে ৮৯ চাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
অবশেষে উইকেট পেলেন তানজিম! তাঁর বলে শেফার্ড ক্যাচ তুলে আউট হওয়ার পর গ্যালারি ছাড়তে শুরু করেছেন ক্যারিবিয়ান সমর্থকেরা। শেষ আশার প্রদীপটিও নিভে যাওয়ায়।
ক্রিজে শেষ উইকেট জুটি সিলস ও ম্যাকয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬ ওভারে ৯ উইকেটে ১০৫।