বিরাট কোহলিকে আউট করে শুন্যে উড়াল দিলেন তাইজুল
বিরাট কোহলিকে আউট করে শুন্যে উড়াল দিলেন তাইজুল

চট্টগ্রাম টেস্ট

৩৫ বলের তোপে বাংলাদেশের সেশন

৩৫ বল, ৭ রান, ৩ উইকেট। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম সেশনটি বাংলাদেশের হয়ে উঠেছে এ তিন সংখ্যাতেই। টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে সকালে প্রথম ৩৫ বলের মধ্যে ভারতের দুই ওপেনার শুবমান গিল ও লোকেশ রাহুলের পর বিরাট কোহলিকেও ফিরিয়েছে বাংলাদেশ।

গিল ও কোহলির উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম, এ দুজনের উইকেটের মধ্যে রাহুলকে ফিরিয়েছেন পেসার খালেদ আহমেদ।

প্রথম সেশনে ৮৫ রান তুলেছে ভারত। দ্রুত উইকেট হারানোর চাপটা আপাতত ভালোই সামাল দিয়েছেন চেতেশ্বর পূজারা ও ঋষভ পন্ত। ২৬ বলে ২৯ রান করে অপরাজিত পন্ত, পূজারা ব্যাটিং করছেন ৩২ বলে ১২ রান নিয়ে।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেট মন্থর, বাউন্সও নিচু। সকালে শুরুটা অবশ্য ইতিবাচকই করেছিল ভারত। প্রথম ৭ ওভারে আসে ৬টি চার। তৃতীয় ওভারেই ইবাদতকে ফ্লিক করে চার মেরেছিলেন রাহুল, তাঁর পরের বাউন্ডারি দুটি আসে অফ স্টাম্পের বাইরের বল থেকে—খালেদকে ড্রাইভের পর সাকিবকে কাট করে। সপ্তম ওভারে ইবাদতকে পরপর দুই বলে দুটি চার মারেন আরেক ওপেনার গিল, পাঞ্চ করে পয়েন্ট দিয়ে ও কাট করে। এর আগেই প্রায় একই রকমের পাঞ্চে ইবাদতকে আরেকটি চার মেরেছিলেন গিল।

লোকেশ রাহুলকে তুলে নেন খালেদ আহমেদ। রাহুল আউট হওয়ার পর

ষষ্ঠ ওভারে খালেদকে সরিয়ে নিজে বোলিংয়ে আসেন সাকিব। তবে ১ ওভার করেই সাকিব নিজেকে সরিয়ে সে প্রান্তে আনেন তাইজুলকে। নবম ওভারে ইবাদতের বলে ইনসাইড-এজড হয়েছিলেন রাহুল, চট্টগ্রামের অসম বাউন্স অসুবিধা তৈরি করছিল আরও আগে থেকেই। অষ্টম ওভার থেকে কমে আসতে শুরু করে রান, মিলিয়ে যায় বাউন্ডারিও।

অন্য প্রান্তে ইবাদতকে সরিয়ে আবার খালেদকে আনেন সাকিব। প্রথম ব্রেকথ্রু অবশ্য দেন তাইজুলই, প্রথম ঘণ্টার পানি-পানের বিরতির ঠিক আগ দিয়ে। এ বাঁহাতি স্পিনারকে লেগ স্টাম্পের ওপর থেকে প্যাডল সুইপ করতে গিয়েছিলেন গিল, তবে টাইমিং করতে পারেননি ঠিকঠাক। ব্যাটের কানায় লেগে ওঠা বলটা স্লিপ থেকে লেগ স্লিপ পজিশনে গিয়ে ধরার মতো যথেষ্ট সময় পান গিল শট খেলতে উদ্যত হওয়ার পর থেকেই সরতে শুরু করা ইয়াসির আলী। ভারতের ওপেনিং জুটি থামে ৪১ রানে।

প্রথম সেশনটি ভালো কাটিয়েছে বাংলাদেশ দল

পরের আঘাতটি করেন খালেদ আহমেদ। তাঁর অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে স্টাম্পে বল ডেকে আনেন রাহুল। নিজের ওপর হতাশাটা স্পষ্টই ছিল ভারত অধিনায়কের। ৪ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারায় ভারত।
ঠিক পরের ওভারেই বাংলাদেশ পেয়ে যায় পরের উইকেটটিও।

চারে আসা কোহলি তাইজুলের লেগ স্টাম্পে পড়া বলটা পেছনের পায়ে ভর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। স্কয়ারড আপ হয়ে সেটি মিস করে যান, খোলা চোখেই আউট মনে হচ্ছিল তাঁকে। মাইকেল গফের সিদ্ধান্ত যদিও রিভিউ করেন কোহলি, তবে তাতে লাভ হয়নি। ৫ বলে ১ রান করেই ফিরতে হয় তাঁকে।

ক্রিজে এসে পন্ত প্রতি-আক্রমণের চেষ্টা করবেন, সেটি জানা কথাই। সাকিবের ফিল্ড সেটিংও ছিল অমনই। মুখোমুখি খালেদের ষষ্ঠ বলে ক্রিজ থেকে বেরিয়ে সিঙ্গেল নিয়ে প্রথম রান নেন পন্ত। পরের ওভারে তাইজুলের লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে মারেন প্রথম চার, যেটি ভারত ইনিংসে ১৪ ওভারের মধ্যে প্রথম বাউন্ডারি।

সেই তাইজুলের ওপরই ২৪তম ওভারে চড়াও হন পন্ত—প্যাডল করে চারের পর ঠিক পরের বলেই ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে ওয়াইড লং অন দিয়ে মারেন ইনিংসের প্রথম ছক্কা। বাঁহাতি পন্তের সামনে অফ স্পিনার মিরাজকে আনেন সাকিব, তবে অফ স্টাম্পের বাইরে জায়গা পেয়ে তাঁকে কাট করে চার মেরে জবাব দেন পন্ত। লাঞ্চের আগে শেষ ওভারে তাইজুলকে দুটি চার মারেন পন্ত ও পূজারা।