অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টিতে ৮৪ রানের ইনিংস খেলেন অ্যালেক্স হেলস
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টিতে ৮৪ রানের ইনিংস খেলেন অ্যালেক্স হেলস

স্টোকস–বাটলারের ফেরার ম্যাচে ইংল্যান্ডের নায়ক হেলস

ম্যাচটি ছিল অনেকের জন্যই প্রত্যাবর্তনের।

ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে ফিরেছেন ১৮ মাস পর, পাকিস্তান সফরের পুরোটা চোটের কারণে বেঞ্চে বসে থাকার পর নেমেছেন অধিনায়ক জস বাটলার। অপর দিকে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে প্রায় চার মাস পর ফিরেছেন মার্কাস স্টয়নিস আর কেইন রিচার্ডসন।

ক্রিকেটারদের পাশাপাশি প্রত্যাবর্তন ঘটেছে ম্যাচ ভেন্যুরও। ২০২০ সালের নারী বিশ্বকাপের পর এ ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজনে ফিরেছে পার্থের অপটাস স্টেডিয়াম।

এত প্রত্যাবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ১১ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জয়ে ফিরেছে ইংল্যান্ডও। ৪০৮ রানের ম্যাচে অ্যারন ফিঞ্চদের ৮ রানে হারিয়েছেন বাটলাররা। তাতে ইংল্যান্ডের নায়ক ওপেনিংয়ে নেমে ৫১ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলা হেলসই।

সর্বশেষ ২০১১ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের মাটিতে টি–টোয়েন্টিতে জিতেছিল ইংল্যান্ড। এরপর সেখানে দুই দফায় পাঁচটি ম্যাচ খেললেও জয় ছিল না ইংল্যান্ডের।

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ড ৬ উইকেটে ২০৮ রানের বড় স্কোর পায় হেলসের সঙ্গে বাটলারের ১৩২ রানের ওপেনিং জুটির ভিতে দাঁড়িয়ে। টি–টোয়েন্টিতে এত রান তুলে ইংল্যান্ড কখনো হারেনি। রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে তাই রেকর্ডই গড়তে হতো।

ডেভিড ওয়ার্নার যতক্ষণ মাঠে ছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনাও টিকেছিল

ডেভিড ওয়ার্নার যতক্ষণ মাঠে ছিলেন, সম্ভাবনা ভালোই ছিল স্বাগতিকদের। ফিঞ্চের জায়গায় আজও ওপেনিংয়ে নামা ক্যামেরন গ্রিন আউট হয়ে যান মাত্র ১ রানে। তবে তিনে নামা মিচেল মার্শ আর পাঁচে নামা স্টয়নিসকে নিয়ে রানরেট ১০–এর আশপাশেই ধরে রাখছিলেন ওয়ার্নার।

মার্শের ২৬ বলে ৩৬ আর স্টয়নিসের ১৫ বলে ৩৫ রানের সহায়তায় অস্ট্রেলিয়ার রান ১৫ ওভারে ছিল ১৫৮। শেষ ৫ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ৫১ রান। কিন্তু ১৭তম ওভারের শেষ বলে ওয়ার্নার আউট হয়ে গেলে আর কেউ হাল ধরতে পারেননি।

ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ঝোড়ো ব্যাটিং করে নজরকাড়া টিম ডেভিড আউট হন ৩ বলে শূন্য রানে। মার্ক উডের বলে হেলসের ক্যাচ হওয়ার আগে ওয়ার্নার খেলেন ৪৪ বলে ৭৩ রানের ইনিংস।

শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৬ রান। স্যাম কারেনের প্রথম বলে চার মেরে সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন ম্যাথু ওয়েড। কিন্তু দ্বিতীয় বল ডট দেওয়ার পর তৃতীয় বলেই বাউন্ডারিতে স্টোকসের ক্যাচ হয়ে ফেরেন তিনি। শেষ হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার জেতার সম্ভাবনাও। স্বাগতিকদের ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ২০০ রানে।

এর আগে বাটলার ও হেলসের ওপেনিং জুটি যেভাবে শুরু করেছিল, তাতে ইংল্যান্ডের স্কোর হতে পারত ২০৮ রানেও বেশি। দুজনই ব্যাট চালিয়েছেন একে অপরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। বাটলার ফিফটি পূর্ণ করেন ২৫ বলে, হেলস ২৯ বলে।

বিশ্বকাপের দেশে পা রেখে প্রথম ম্যাচেই বাটলার বোঝালেন, কতটা প্রস্তুত তিনি। ৮ চার ও ৪ ছয়ে গড়া বাটলারের ৩২ বলে ৬৮ রানের ইনিংস থামে নাথান এলিসের বলে।

বাটলার–হেলসের ওপেনিং জুটিতে ১৩২ রান পায় ইংল্যান্ড

ইনিংসের ১২তম ওভারে বাটলার ফিরলেও হেলস টিকে ছিলেন ১৬তম ওভার পর্যন্ত। প্রায় সাড়ে তিন বছর পর পাকিস্তান সফর দিয়ে ইংল্যান্ড দলে ফেরা হেলস প্রথম ম্যাচে ফিফটি পেলেও এরপর সেভাবে রান পাননি, শেষ ৫ ইনিংসে করেছিলেন মোটে ৭৭ রান।

তবে অস্ট্রেলিয়ায় নেমেই বিশ্বকাপে ওপেনিংয়ে জায়গা পাওয়ার দাবি জানিয়ে রাখলেন। ৫১ বল খেলে করেছেন ৮৪ রান, যার মধ্যে ১২টি চারের সঙ্গে ছিল ৩টি ছয়।

দলীয় ১৬৭ রানে হেলস আউট হওয়ার পর ইংল্যান্ডের রান তোলায় আর গতি সেভাবে ধরে রাখতে পারেননি কেউ। উইকেট হাতে থাকার পরও শেষ ৪ ওভারে উঠেছে মাত্র ৩৫ রান। ক্রিস ওকসের ১ চার ও ১ ছয়ে খেলা ১৩ রানের ক্যামিও না থাকলে অবশ্য ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দুই শও পার হয় না।

অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন এলিস। ডানহাতি এ পেসার বাদে নিয়মিত বোলারদের বাকি সবাই ওভারপ্রতি দিয়েছেন ৯–এর বেশি রান।

শেষ পর্যন্ত হয়তো সেটিরই খেসারত কম ব্যবধানে হেরে দিতে হলো অস্ট্রেলিয়াকে।