বোলিং, ফিল্ডিং, ব্যাটিং—বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতির শেষ সুযোগে তিন বিভাগেই বেশ তৃপ্তি নিয়ে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্দেশে যাত্রা করবে ইংল্যান্ড। গতকাল রাতে ওভালে সিরিজের চতুর্থ ও শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে জস বাটলারের দল। হেডিংলি ও কার্ডিফে দুটি ম্যাচ ভেসে গেছে বৃষ্টিতে, বাকি দুটিতেই জিতল ইংল্যান্ড। ২০২২ সালের অক্টোবরের পর এটিই ইংল্যান্ডের প্রথম কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জয়।
রাতে বোলারদের সমন্বিত পারফরম্যান্সে ওভালের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে পাকিস্তানকে ১৫৭ রানে আটকে দেয় ইংল্যান্ড। ছয় বোলারই পেয়েছেন উইকেটের দেখা, ২৭ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে এসে আরেকটি ট্রফি জয়ের আশার কথাই শুনিয়েছেন আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ বোলার, ‘লক্ষ্য হচ্ছে সেখানে গিয়ে আরেকটি ট্রফি জেতা। সঠিক মানসিকতা থাকতে হবে, বাকিটা এমনিতেই হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।’
বৃষ্টি চোখ রাঙিয়েছে গতকালও। টসে জিতে বোলিং নেয় ইংল্যান্ড। কিন্তু ওপেনিংয়ে ফেরা বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের জুটিতে শুরুটা বেশ ভালোই হয়েছিল পাকিস্তানের। ৫.৫ ওভারে দুজন যোগ করেন ৫৯ রান। পাওয়ারপ্লের শেষ বলে জফরা আর্চারকে কাট করতে গিয়ে ওয়াইড স্লিপে ধরা পড়েন বাবর, পাকিস্তান প্রথম ধাক্কা খায় সেখানেই। ঠিক পরের ওভারে অধিনায়ককে অনুসরণ করেন রিজওয়ান।
তিনে নামা উসমান খান এক প্রান্তে ছিলেন, কিন্তু পাকিস্তানের মিডল অর্ডার সুবিধা করতে পারেনি মোটেও। ফখর জামান, শাদাব খান, আজম খান—তিনজন মিলে ১৫ বল খেলে করতে পারেন মাত্র ৯ রান। শাদাব ও আজমের অবশ্য সেখানে অবদান শূন্য। আজম পরে উইকেটকিপিংয়েও সহজ দুটি ক্যাচ ফেলেছেন, সব মিলিয়ে ওভালে আরেকটি ভুলে যাওয়ার মতো দিন কেটেছে এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানের।
তবে পাকিস্তানের ভালো করতে গেলে যে মিডল অর্ডারকে এগিয়ে আসতে হবে, আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছেন বাবর, ‘ছয় ওভার পর আমরা ভালো করছিলাম, এরপর আমি আউট হয়ে গেলাম। মিডল অর্ডারকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্বকাপের আগে এসব ঠিক করতে হবে।’
১৫৮ রানের লক্ষ্যে ফিল সল্ট ও জস বাটলারের ওপেনিং জুটি পাওয়ারপ্লেতেই তোলে ৭৮ রান। সপ্তম ওভারে ২৪ বলে ৪৫ রান করে সল্ট থামলে ভাঙে সে জুটি। সল্টসহ টপ অর্ডারের তিনজনকেই ফেরান হারিস রউফ, পাকিস্তানও নিতে পারে এই ৩ উইকেট। সল্ট, বাটলারের পর রানের দেখা পেয়েছেন উইল জ্যাকস, জনি বেয়ারস্টো ও হ্যারি ব্রুকও। সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের প্রস্তুতিটা হয়েছে বেশ ভালোই।
বাটলার পরে বলেছেন, ‘আরও দুটি ম্যাচ খেলতে পারলে দারুণ হতো। তবে বেশ অভিজ্ঞতা আছে আর অনেকেই আইপিএলেও খেলেছে। ফলে ক্রিকেটের কমতি নেই।’
যে দুটি ম্যাচ হলো, তার একটিতেও খেলেননি গত বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় স্যাম কারেন। গতকাল একসঙ্গে খেলেছেন জফরা আর্চার ও মার্ক উড। বাটলার বলেছেন, ‘দল নির্বাচন কঠিন, তবে এমন জায়গায় থাকাটাও দারুণ। উড ও আর্চারকে একসঙ্গে খেলতে দেখা সত্যিই রোমাঞ্চকর ব্যাপার ছিল।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ১৯.৫ ওভারে ১৫৭ (উসমান ৩৮, বাবর ৩৬, রিজওয়ান ২৩, ইফতিখার ২১; লিভিংস্টোন ২/১৭, রশিদ ২/২৭, উড ২/৩৫)
ইংল্যান্ড: ১৫.৩ ওভারে ১৫৮/৩ (সল্ট ৪৫, বাটলার ৩৯, বেয়ারস্টো ২৮*, জ্যাকস ২০, ব্রুক ১৭; রউফ ৩/৩৮)
ফল: ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ইংল্যান্ড ২-০-তে জয়ী
ম্যাচসেরা: আদিল রশিদ (ইংল্যান্ড)
সিরিজসেরা: জস বাটলার (ইংল্যান্ড)