দ্রুততম ফিফটির বিশ্ব রেকর্ড সম্ভব ছিল না। সে ক্ষেত্রে গতকাল রিশাদের ফিফটি করতে হতো ১৫ বলে। ইনিংসের প্রথম ১২ বলে ২৪ রান করা রিশাদের জন্য তাই ১৬ বলে ডি ভিলিয়ার্সের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড ছোঁয়াও অসম্ভব ছিল। তবে দেশীয় ফিফটির রেকর্ড হতেই পারত।
গতকাল ১২ বলে ২৪ থেকে রিশাদ ১৫ বলে করেন ৪০, ১৭ বলে ৪৮! ভাগ্যটাই একটু বোধ হয় খারাপ! নইলে শেষে যে চারটা মেরেছেন সেটা একটুর জন্য কী ছয় না হয়ে থাকে! সেই শটে ছক্কা পেলেই বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়তেন এই অলরাউন্ডার। এরপরও সম্ভাবনা ছিল। তবে ১৮তম বলটা ডট খেলেন তিনি।
সম্ভাবনা ছিল তখনো। মুশফিকুর রহিম যখন স্ট্রাইকে যান, তখন ২১ বলে করা মোহাম্মদ আশরাফুল ও আবদুর রাজ্জাকের দ্রুততম ফিফটির যৌথ রেকর্ড ভাঙতে রিশাদের হাতে ছিল ২ বল, রান লাগত ২। তবে ওই যে ভাগ্য এ যাত্রায় সহায় ছিল না! বোধ হয় মুশফিক সিঙ্গেল দিয়ে রিশাদকে স্ট্রাইক দিতেই চেয়েছিলেন, তবে থার্ডম্যান অঞ্চল দিয়ে বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। জয়ের জন্য রান লাগত ৩, অর্থাৎ খেলা শেষ!
ফিফটি পাননি! তবু ছোট একটা কীর্তির তালিকায় ঢুকে গেছেন এই অলরাউন্ডার। গতকাল তৃতীয় ওয়ানডেতে রিশাদের স্ট্রাইক রেট ছিল ২৬৬.৬৬। কমপক্ষে ৪০ রানের ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। তৃতীয় সর্বোচ্চ? হ্যাঁ।
অর্থাৎ ওয়ানডেতে কমপক্ষে ৪০ রানের ইনিংসে এর চেয়ে আরও দুটি ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার। সে নাম দুটিও অচেনা লাগার সুযোগ নেই—মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসান। আগের দুটি ইনিংসই ছিল ১৬ বলে ৪৪ রানের—২৭৫ স্ট্রাইক রেট। সাকিব-মাশরাফির দুটি ইনিংসেরই আলাদা মাহাত্ম্য আছে।
মাশরাফি সেই ইনিংসটি খেলেছিলেন ২০০৬ সালে, বগুড়ায় কেনিয়ার বিপক্ষে। সেই ম্যাচে শাহরিয়ার নাফীস ও আফতাব আহমেদের ফিফটির পর মাশরাফি যখন ক্রিজে আসেন, তখন বাংলাদেশের রান ৪৫.৫ ওভারে ২৪২। তাঁর ১৬ বলে অপরাজিত ইনিংসেই বাংলাদেশ প্রথমবার ওয়ানডেতে ৩০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করে। ৩০২ রানের লক্ষ্য দিয়ে বাংলাদেশ সেই ম্যাচে জয় পায় ১৩১ রানে। মাশরাফি সেদিন ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেননি! ৯১ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন শাহরিয়ার নাফীস।
সাকিব ১৬ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে, ২০১৪ সালে। ৩ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফিরে সেদিন মিরপুরে ঝড় তুলেছিলেন সাকিব। তিনি যখন ক্রিজে আসেন, তখন বাংলাদেশের রান ৪৪.২ ওভারে ৩ উইকেটে ২৪৯। সেখান থেকে তিনি বাংলাদেশের রানকে নিয়ে যান ৩ উইকেটে ৩২৬–এ। যা ওই সময়ে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ছিল।
যদিও সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েও বাংলাদেশ সেদিন জিততে পারেনি। শহীদ আফ্রিদির ২৫ বলে ৫৯ রানের ইনিংসে হেরে যায় বাংলাদেশ। সেদিক থেকে রিশাদ ও মাশরাফি ভাগ্যবান, তাঁদের এমন দুটি ইনিংসের দিনে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সাকিব দুর্ভাগা! যদিও আফ্রিদি যেদিন খেলতেন, সেদিন ভাগ্য বলে কিছু থাকত নাকি!