মুম্বাইকে হারানোর পর উচ্ছ্বসিত গুজরাটের খেলোয়াড়েরা। আজ আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে
মুম্বাইকে হারানোর পর উচ্ছ্বসিত গুজরাটের খেলোয়াড়েরা। আজ আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে

আইপিএল

শেষ ৮ ওভারে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধস, ‘ধারা বজায় রেখে’ হারেই শুরু মুম্বাইয়ের

আজকের দিনটি তাহলে ব্যাখ্যাহীন ব্যাটিং ব্যর্থতার!

সকালে মিরপুরে দ্বিতীয় নারী ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০০ রানও করতে পারেননি বাংলাদেশের মেয়েরা। সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চোখের পলকে ৫ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ ছেলেদের দল।

মিরপুর–সিলেটের বাতাস রাতে এসে আহমেদাবাদেই মিশেছে কি না, কে জানে! নয়তো জয়ের পথে থাকা মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের ব্যাটিংয়ে হঠাৎ এমন ধস নামল কেন? গুজরাট টাইটানসের দেওয়া ১৬৯ রান তাড়া করতে নেমে এক পর্যায়ে ১২ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১০৭ রান তুলে ফেলেছিল মুম্বাই। এরপরই অবিশ্বাস্য পতন।

শিশিরভেজা মাঠে পরে ব্যাটিংয়ের সুবিধা থাকার পরও ৮ ওভারে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৬২, এরপর ৫ ওভারে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৩ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি মুম্বাই।

তৃতীয় উইকেটে রোহিত–ব্রেভিসের ৭৭ রানের জুটিতে জয়ের পথেই ছিল মুম্বাই

‘ডেথ ওভারে’ গুজরাটের বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সফল দলটি হেরে গেল ৬ রানে। হার দিয়ে আইপিএল মৌসুম শুরু করাকে শিল্পে রূপ দেওয়া মুম্বাই এ নিয়ে টানা ১২ বছর নিজেদের প্রথম ম্যাচ হেরে গেল। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এই ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে সর্বশেষ নিজেদের প্রথম জিতেছিল ২০১২ সালে, চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে।

নতুন অধিনায়ক শুবমান গিলের নেতৃত্বে প্রথম ম্যাচেই জয় পেল গুজরাট। আর গুজরাট ছেড়ে এ মৌসুমেই পুরোনো ঠিকানা মুম্বাইয়ে ফেরা হার্দিক পান্ডিয়া অধিনায়কত্ব পেয়েও দলের ভাগ্য বদলাতে ব্যর্থ হলেন।

এবারের আইপিএলে এখন পর্যন্ত হওয়া পাঁচ ম্যাচেই জিতল নিজেদের মাঠে খেলা দল। গুজরাটের আগে ঘরের মাঠে জয় তুলে নিয়েছে রাজস্থান রয়্যালস, কলকাতা নাইট রাইডার্স, পাঞ্জাব কিংস ও চেন্নাই সুপার কিংস।

নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে টস জিতে গুজরাট ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন পান্ডিয়া। ম্যাচের প্রথম ওভারটাও পান্ডিয়াই করেন। ওই ওভারে দেন ১১ রান। দুই ওপেনার শুবমান গিল–ঋদ্ধিমান সাহা দুজনই বাউন্ডারি মেরে গুজরাটকে দারুণ শুরু এনে দেওয়ার আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা–জেরাল্ড কোয়েৎজিদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে রান পাহাড় গড়া সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালে নিজেদের অভিষেক মৌসুমেই শিরোপা জেতা গুজরাট নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারায়। এরপরও দলটি ১৬৮ রানে পৌঁছাতে পারে মাঝ ওভারে সাই সুদর্শনের দায়িত্বশীল ব্যাটিং আর শেষ দিকে রাহুল তেওয়াটিয়ার ক্যামিওতে।

শেষ ওভারে স্নায়ু চাপ ধরে রেখে গুজরাটকে জিতিয়েছেন উমেশ যাদব

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মুম্বাইয়ের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। স্কোরবোর্ডে রান জমা করার আগেই আউট হন ঈশান কিষান। এরপর অভিষিক্ত নামান ধীর ঝড়ের আভাস দিয়ে ফেরেন ১০ বলে ২০ রান করে। কিষান–ধীর দুজনেরই ‘ঘাতক’ আফগান অলরাউন্ডার আজমতউল্লাহ ওমরজাই।

তবে ‘বেবি এবি’ খ্যাত ডেভাল্ড ব্রেভিসকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা ভালোভাবেই সামাল দেন অভিজ্ঞ রোহিত শর্মা। তৃতীয় উইকেটে রোহিত–ব্রেভিসের ৭৭ রানের জুটিতে জয়ের পথেই ছিল মুম্বাই।

কিন্তু ১৩তম ওভারে সাই কিশোর রোহিতকে আউট করে জুটি ভাঙার পরেই ধস নামে। রশিদ খান একদিক থেকে আঁটসাঁট বোলিং করে গেছেন। আর মোহিত শর্মা, স্পেন্সার জনসন, উমেশ যাদবটা উইকেট তুলে নিয়েছেন। তাঁদের সুপরিকল্পিত ডেথ বোলিংয়ে তিলক ভার্মা, টিম ডেভিড, পান্ডিয়ারা মারতে গিয়ে ফিল্ডারদের হাতে ধরা পড়েছেন। মৌসুমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয়টা তাই এবারও অধরাই রয়ে গেছে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

গুজরাট টাইটানস: ২০ ওভারে ১৬৮/৬

(সুদর্শন ৪৫, গিল ৩১, তেওয়াটিয়া ২২; বুমরা ৩/১৪, কোয়েৎজি ২/২৭, চাওলা ১/৩১)

মুম্বাই ইন্ডিয়ানস: ২০ ওভারে ১৬২/৯

(ব্রেভিস ৪৬, রোহিত ৪৩, তিলক ২৫; জনসন ২/২৫, ওমরজাই ২/২৭, উমেশ ২/৩১, মোহিত ২/৩২)

ফল: গুজরাট টাইটানস ৬ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সাই সুদর্শন (গুজরাট টাইটানস)।