পাকিস্তানের বিপক্ষে আগামী বছরের শুরুতে সিডনিতে ‘নিউ ইয়ার্স’ টেস্ট খেলেই এ সংস্করণকে বিদায় বলবেন ডেভিড ওয়ার্নার, এমন ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন আগেই। প্রায় ১২ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি ওয়ার্নার টানবেন ঘরের মাঠেই। সর্বশেষ অ্যাশেজে একবার অবসরের গুঞ্জন উঠলেও সেটি উড়িয়ে দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের অন্যতম সফল এ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। তবে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অলরাউন্ডার সাইমন ও’ডোনেলের মতে, কোনো নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানার ‘অধিকার’ কারও নেই। এমনকি সেটি ওয়ার্নারের মতো সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারের কোনো খেলোয়াড় হলেও!
একটা নির্দিষ্ট সিরিজ বা ম্যাচ দিয়ে অবসরে চলে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়াটা নতুন নয় মোটেও, বরং সে খেলোয়াড়কে বিদায় জানানোরও একটা উপলক্ষ হয়ে আসে সেটি। স্বাভাবিকভাবেই দেশের মাটিতে বিদায় বলতে চান অনেকেই। কিন্তু ও’ডোনেলের মতটা একেবারেই ভিন্ন।
অস্ট্রেলিয়ার এসইএন রেডিওকে ১৯৮৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩টি টেস্ট খেলা ও’ডোনেল বলেন, ‘আমি বিদায়ী সফর পছন্দ করি না। স্টিভ ওয়াহর সময়ে বা মার্ক টেলরের সময়েও এটি আমার পছন্দ ছিল না। আমার মনে হয় আপনাকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যেটি করতে পারা সম্মানের। আমার মনে হয় না কারও অধিকার আছে এটি বলার, “আমি এ বছরের ৩০ জুন শেষ করব।”’
সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপটি বেশ ভালোই কেটেছে ওয়ার্নারের। তবে আগামী মাস থেকে শুরু হতে যাওয়া টেস্ট সিরিজের আগে দীর্ঘ সংস্করণে এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ফর্মটা চলে আসছে সামনে। সর্বশেষ অ্যাশেজ তেমন সুবিধার ছিল না তাঁর, ১০ ইনিংসে অর্ধশতক পেয়েছিলেন দুবার, শতক ছিল না একটিও।
অবসরের সময় ঠিক করার অধিকার তাঁর নেই, এমন বললেও অবশ্য ওয়ার্নারের টেস্ট থেকে অবসরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক বলেই মনে করেন ও’ডোনেল, ‘সাদা বলে সমস্যা নেই। কিন্তু লাল বলে, আমার মনে হয় (ওয়ার্নারের অবসরের) সময় এসে গেছে। তবে আমরা সেই বাঁকে এসে উপস্থিত। মাত্র বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে, ফলে সামনে জল ঘোলা হবে। সবাই বলবে, “ও হ্যাঁ, তাহলে বিশ্বকাপের ব্যাপারে কী মত?” ফলে এগুলোর কারণে একটু সময় সে পাবে বলে মনে হয়।’
ও’ডোনেলের মতে, অস্ট্রেলিয়া টেস্ট দলে এখন ক্যামেরন ব্যানক্রফটের জায়গা পাওয়া উচিত। ২০১৮ সালে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিং কাণ্ডে ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ব্যানক্রফট। ২০১৯ সালের অ্যাশেজে ফিরলেও এরপর আর জায়গা পাননি। শেফিল্ড শিল্ডের এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান তাঁরই।
অস্ট্রেলিয়ার ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ও’ডোনেলের মতে, ‘এ নিয়ে সত্যিকারের বিতর্ক হওয়া দরকার। যেমন ক্যামেরন ব্যানক্রফট, তার আসলে আর কত কিছু করা লাগবে আমি নিশ্চিত নই। সে সেঞ্চুরি করেই যাচ্ছে, সেঞ্চুরি না হলেও ৬০ করছে। একটা খারাপ ইনিংস গেলে আরেকটা ১০০ মারছে, ১৮ মাস ধরেই দুর্দান্ত ফর্মে আছে। আপনি তাকে আরেকটি গ্রীষ্ম অপেক্ষা করাবেন? কারণ এই পরিকল্পনা (ওয়ার্নারকে খেলানোর) বজায় থাকলে তাকে সেটিই করতে হবে।’
এরপর তিনি যোগ করেন, ‘আমার মনে হয় ব্যক্তির চেয়ে এই খেলা সব সময়ই বড়। অনেক কিছু বিবেচনায় নেওয়ার আছে। তবে সবার আগে যেটি করতে হবে, অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ম্যাচ জিততে হবে। যদি ডেভিড ওয়ার্নারই ব্যাটিং অর্ডারের এক নম্বরে আপনার সেরা হয়, তবে তা–ই হোক।’
আগামী ১৪ ডিসেম্বর পার্থে শুরু হবে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ।