আউট হয়ে ফিরছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন
আউট হয়ে ফিরছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন

প্রথম সেশনেই ৪ উইকেট নেই বাংলাদেশের

সকাল থেকেই সূর্যের দেখা নেই। মেঘলা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে জ্বলছে ফ্লাডলাইট। এমন কন্ডিশনেই মিরপুর টেস্টের টস ভাগ্য গেল বাংলাদেশের পক্ষে। নাজমুল হোসেনও ব্যাটিংয়ের আক্রমণাত্মক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে প্রথম সেশন শেষে অনেকেই সেই সিদ্ধান্তটাকে ভুল বলতে পারেন। বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং ব্যর্থতাই সে সুযোগ করে দিয়েছে। প্রথম সেশন থেকে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৮০ রান। ক্রিজে আছেন মুশফিকুর রহিম (১৮), শাহাদাত হোসেন (১৪)।

আবহাওয়ার চ্যালেঞ্জটা খেলা শুরুর আগেই বোঝা যাচ্ছিল। খেলা শুরুর পর তাতে যোগ হয় উইকেটের চ্যালেঞ্জ। নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়ক টিম সাউদি ও কাইল জেমিসন মিলে মাত্র ৫ ওভার বল করেছেন। কিছুটা সিম, কিছুটা সুইং দুজনই পেয়েছেন। চাইলে দুজনই আরও কিছুক্ষণ বোলিং করতে পারতেন। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন। দুই পেসারের বুট উইকেটের কিছু অংশ ক্ষত সৃষ্টি করে খুব দ্রুতই। যা কাজে লেগেছে ষষ্ঠ ওভার থেকে বোলিংয়ে আসা এজাজ প্যাটেল ও মিচেল স্যান্টনারকে।

মিরপুরের নরম মাটি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের দুই স্পিনারকে। পেসের বিপক্ষে দেখেশুনে খেলা দুই ওপেনার জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসানকে সামলাতে হয় নতুন বলের স্পিনের কঠিন চ্যালেঞ্জ। কিছু বল টার্ন করে বেরিয়ে যাচ্ছিল, কিছু একই জায়গা থেকে সোজা হয়ে প্যাড ধেয়ে আসছিল। প্রথাগত ফরওয়ার্ড ডিফেন্স, ব্যাক ফুট ডিফেন্সে যা সামলানো কঠিন। এমন উইকেটে ব্যাটসম্যানরা উপায় না দেখে মেরে খেলার পথটাই বেছে নেন। কখনো সেটা কাজে দেবে, কখনো নয়। কিন্তু টেস্ট জিততে হলে তো রান করতে হবে। বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরাও আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে আজ সেটাই করতে চেয়েছেন।

জাকির হাসান (বাঁয়ে) ও মাহমুদুল হাসানের উদ্বোধনী জুটি টিকেছে ১০.৩ ওভার।

জাকির ও মাহমুদুল জুটি কোনো রকমে ১০ ওভার পার করেছে। এরপর দুজনই ছুটেছেন রানের পেছনে। ১১তম ওভারে এসে নিজের খোলস থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন জাকির। তবে আক্রমণাত্মক শট খেলার চেষ্টায় ব্যর্থ হন। সিলেটে দুটি ইনিংসে বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেলের বলে আউট হওয়ার পর আজ তিনি উইকেট দিয়ে আসেন আরেক বাঁহাতি মিচেল স্যান্টনারকে। ভালো লেংথের বলে ক্রিজ ছেড়ে খেলতে গিয়ে মিড অনে থাকা কেইন উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ তোলা জাকির ২৪ বলে ১ বাউন্ডারিতে করেছেন ৮ রান।

২৯ রানের জুটিও ভাঙে তাতে। সংখ্যাটা অবশ্য বাড়েনি। ২৯ রানেই আরেক ওপেনার মাহমুদুল আউট হন এজাজের স্পিনে। ১২তম ওভারেই শর্ট লেগে থাকা টম ল্যাথামের হাতে ধরা পড়েন ৪০ বলে ১৪ রান করা মাহমুদুল।

নিউজিল্যান্ডের উইকেট শিকার উদ্‌যাপন

সেখানেই শেষ নয়। চারে নামা মুমিনুল হকের (১০ বলে ৫ রান) ইনিংসও লম্বা হয়নি। ১৪তম ওভারে এসে তিনি কট বিহাইন্ড হয়েছেন এজাজের বলে ব্যাক ফুট ড্রাইভ খেলতে গিয়ে। অথচ ক্রিজে এসেই দুইবার একই শট খেলে দৌড়ে চার রান বের করেছিলেন মুমিনুল। তৃতীয় চেষ্টায় ব্যর্থ হলেন এই বাঁহাতি। বাংলাদেশ দলের রান তখন ৩ উইকেটে ৪১।

সিলেট টেস্টে শতক করা নাজমুল তখন ক্রিজে। ম্যাচের এমন অবস্থায় নাজমুলের দিকেই তাকিয়ে বাংলাদেশ। তিনি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে কিছু রান যোগ করবেন, ফর্মে থাকা এই বাঁহাতিকে নিয়ে তখন এমনই আশা। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সেটি করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বাকিদের মতো তিনিও ব্যর্থ। ১৪ বল খেলে ১ বাউন্ডারিতে ৯ রান করে স্যান্টনারকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন নাজমুল।

বাংলাদেশ দল শুরুর ৪ উইকেটের ধাক্কাটা কিছুটা কাটিয়ে ওঠে মুশফিকুর রহিম ও শাহাদাত হোসেনের জুটিতে। দুজন মিলে ৭৮ বল খেলে ৩৩ রানের জুটি গড়ে প্রথম সেশনের বাকি সময়টা পার করেন।