দুই দিন পরই শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা মিরপুর টেস্ট। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের জন্য ঘোষিত বাংলাদেশ দলে ছিল সাকিব আল হাসানের নাম। তবে নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে দেশে আসতে না পারায় সাকিবের খেলা অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল গতকালই। আজ বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবে সাকিবকে মিরপুর টেস্টের দল থেকে বাদ দিয়েছে, তাঁর জায়গায় দলে নেওয়া হয়েছে বাাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদকে।
এর আগে সাকিবকে নিয়ে ধোঁয়াশায় ছিল দক্ষিণ আফ্রিকানরাও। ঢাকায় পা রাখার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, স্থানীয় ও বিদেশি সংবাদমাধ্যমে সাকিবের ফেরা নিয়ে খবর দেখেছেন প্রোটিয়ারা। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সঙ্গে থাকা স্থানীয় কর্মকর্তাদের জিজ্ঞেস করে সাকিবের খবর জানতে চেয়ে এসেছেন। ‘সাকিবের আপডেট কী?’, ‘সে কি আসবে দেশে?’—দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সঙ্গে থাকা স্থানীয় কর্মকর্তাদের এসব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
আজ অবশ্য সাকিবকে নিয়ে তৈরি হওয়া ধোঁয়াশা দূর হয়ে যাওয়ার কথা। প্রোটিয়াদেরও তাদের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাওয়ার কথা। সেটা বিসিবি নতুন করে মিরপুর টেস্টের দল ঘোষণা করায়।
২১ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া মিরপুর টেস্টের জন্য সাকিব যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই হয়ে ঢাকায় আসছিলেন। দুবাই থেকে তাঁর ঢাকার ফ্লাইট ছিল স্থানীয় সময় গতকাল বিকেলে, ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল রাতে। কিন্তু নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে ঢাকা থেকেই সাকিবকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, আপাতত দেশে না আসার জন্য।
যদিও নির্বাচকেরা বিসিবির সবুজসংকেত পেয়েই সাকিবকে রেখে মিরপুর টেস্টের দল ঘোষণা করেছিলেন। বিসিবিও সাকিবের ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে সবুজসংকেত পেয়েছিল। তারপরও কাল পরিস্থিতি বদলে যায়। গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামের সামনে ‘মিরপুরের ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে একটা দল সাকিব বিরোধী অবস্থান নেয়।
তাদের পক্ষ থেকে পাঁচজনের একটি প্রতিনিধিদল বিসিবির প্রশাসন ও নিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্বে থাকা মেজর (অব.) হাসিবুজ্জামানের কাছে স্মারকলিপি দেয়। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বরাবর দেওয়া সেই স্মারকলিপিতে লেখা ছিল, সাকিবকে দল থেকে বাদ না দিলে খেলার দিন কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়লে সে দায় বিসিবি সভাপতিকেই নিতে হবে। শেষ পর্যন্ত সাকিবকে বাদ দিয়েই বাংলাদেশ দলকে খেলতে হচ্ছে মিরপুর টেস্ট।
এর আগে ভারত সফরের কানপুর টেস্টের আগের দিন টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন সাকিব। সেই ঘোষণায় তিনি বলেছিলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা শেষ ম্যাচটিই এই সংস্করণে তাঁর শেষ। আর টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করতে চান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে ম্যাচ দিয়ে। মিরপুর টেস্ট খেলতে না পারায় কানপুরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিই দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে সাকিবের ম্যাচ হয়ে থাকছে কি না, সেটিও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, জাকির হাসান, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস (উইকেটকিপার), জাকের আলী, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও হাসান মুরাদ।