অর্শদীপ সিংয়ের সঙ্গে আছেন মায়াঙ্ক যাদব। তৃতীয় পেসারের ভূমিকায় হার্দিক পান্ডিয়া। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে ভারতীয় টি-টোয়েন্টি দলের সমন্বয়টা এভাবেই সাজানো। তিন পেসারের সঙ্গে বিশেষজ্ঞ স্পিনার গুনতে গেলে বরুন চক্রবর্তী, ওয়াশিংটন সুন্দরের নাম আসবে। এই পাঁচজনের বাইরে একাদশে থাকছেন এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে অভিষিক্ত নীতিশ কুমার।
২১ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের ক্রিকইনফো প্রোফাইল বলে তিনি একজন ‘ব্যাটিং অলরাউন্ডার’। কিন্তু ভারতীয় দল তাঁকে পান্ডিয়ার বিকল্প হিসেবেই দেখতে চায়। তাঁকে সেভাবে গড়ে তুলতেই কাল পান্ডিয়া এক ওভারও বোলিং করলেন না। নীতিশ করলেন পুরো ৪ ওভার। ২৩ রানে ২টি উইকেটও নিলেন। এর আগে ব্যাটিংয়ে করেছেন ৩৪ বলে ৭৪ রান। ভারতের ৮৬ রানের জয় এবং এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়ের দিন ম্যাচ সেরার পুরস্কারটা স্বাভাবিকভাবেই নীতিশের হাতেই উঠেছে।
তবে ‘ব্যাটসম্যান’ নীতিশের কাজটা সহজ করে দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের স্পিনাররা। স্পিনারদের চার-ছক্কায় ওড়াচ্ছিলেন স্বাচ্ছন্দ্যে। রিশাদ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহর ৮ ওভারে নীতিশসহ অন্য ভারতীয়রা ১১৬ রান নিয়েছেন। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সময় হয়েছে উল্টোটা। ভারতের ৯ ওভার স্পিনে মাত্র ৪৯ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে সেখানেই।
ম্যাচ শেষে তাসকিন আহমেদও বললেন স্পিনারদের কথা, ‘আজ (গতকাল) স্পিনারদের দিনটা একটু বেশিই খারাপ গিয়েছে। আর ওদের রানটা যখন বেশি হয়ে গিয়েছে, তখন মারতে গিয়ে আউট হয়েছে। আসলে শুরুতে উইকেট পড়ে গেলে খুব কঠিন হয়ে যায়।’ টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চাইলে তাসকিন বলেছেন, ‘দেখুন, পাওয়ারপ্লেতে আমরা ভালো করেছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্পিনারদের খারাপ দিন গিয়েছে। শিশির ছিল, বোলারদের বল গ্রিপ করতে সমস্যা হচ্ছিল। বড় রান হওয়ায় হেরে গিয়েছি। ১৮০ থেকে ১৯০–এর মধ্যে রাখা গেলেও রান তাড়া সম্ভব ছিল।’
দিল্লির ব্যাটিং সহায়ক উইকেট নিয়ে তাসকিনের কথা, ‘আমরা জানতাম, দিল্লির উইকেটে অনেক রান হবে। কিন্তু আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি। দুটি ম্যাচেই উইকেট ভালো ছিল। আমরাই ভালো খেলিনি।’
ব্যাটিং-বোলিংয়ের বাইরে ফিল্ডিংও ছিল বাংলাদেশ দলের হারের আরেক কারণ। তানজিম হাসানের বলে ব্যক্তিগত ৫ রানে নীতিশের ক্যাচ ছাড়েন লিটন দাস। সেই নীতিশই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন। তাসকিনও বললেন, ‘ক্যাচ ফেলা তো সব সময়ই খারাপ।’
ভারতকে প্রশংসায় ভাসিয়ে তাসকিন বলেছেন, ‘ওরা বিশ্বের সেরা দল। ওরা আমাদের চেয়ে অভিজ্ঞ। ওদের কন্ডিশনে তো ওরা ভালোই। উইকেট পড়লেও ওরা আমাদের বোলারদের বিপক্ষে চড়াও হয়েছে। বড় স্কোর হওয়ায় মারতে গিয়ে আমরা দ্রুত উইকেট হারিয়েছি, ছন্দ হারিয়েছি।’
আইপিএলের কারণে ভারতের টি-টোয়েন্টির যে উন্নতি হয়েছে, এসেছে সে প্রসঙ্গও, ‘এটা অবশ্যই একটা ব্যাপার। আইপিএলে বেশির ভাগ ম্যাচই হাই স্কোরিং হয়। ওদের কাছে ১৮০ রান খুবই স্বাভাবিক। আমাদের জন্য যেটা ১৩০, ১৪০, ১৫০ রান।’
ভালো উইকেটে ব্যাটিং-বোলিং নিয়ে তাসকিন এ কথাও বলেছেন, ‘ওদের মতো শুয়ে-বসে খেলতে গেলে আমাদের দেশে হয়তো বল মুখে লাগবে। ওরা ছোট থেকেই ভালো উইকেটে খেলে এভাবে খেলার অভ্যাস করেছে।’ নিজের টি-টোয়েন্টি সামর্থ্য নিয়েও সোজাসাপটা কথা বলেছেন তাসকিন, ‘আমারা ৮০ শতাংশের ওপরে ভালো খেললে জিতি। এক-দুজন ভালো খেললে জিতি না। আমরা ওই রকম দল নই।’