নেদারল্যান্ডসের কাছেও আমাদের শেখার আছে

বিশ্বকাপে দলকে ঘিরে বিভিন্ন প্রত্যাশা থাকে। এবার যে খুব বেশি ছিল, তা নয়। ক্রিকেট ভালোবাসি বলে স্বপ্ন ছিল, আবার সাবেক একজন ক্রিকেটার হিসেবে বাস্তবতাও ভেবেছি। তবে নেদারল্যান্ডসের মতো দলের কাছেও হারতে হবে—সেটি ভাবিনি।

একটা সময় মনে হয়েছিল, টসে হেরে ভালোই হয়েছে। আগে ব্যাটিং করলে কত রান নিরাপদ হবে, অনেক সময় বোঝা যায় না। কিন্তু এত কম লক্ষ্যে ব্যাটিংটা নিশ্চিন্তে হওয়া উচিত ছিল। যদিও ক্যাচিং সবচেয়ে বাজে হলো এ ম্যাচেই। সেটি না হলে নেদারল্যান্ডসকে ১৭০-১৮০ রানের মধ্যে অলআউট করে দেওয়া যেত। কিন্তু ২৩০ রানের লক্ষ্যে হারতে হবে, সেটি কল্পনায়ও আসেনি। সুশৃঙ্খল বোলিংয়ের বিপক্ষে খেলা অনেক সময় সহজ। ডাচরা যেভাবে ইনিংস গড়েছে, তেমন করতে পারলেই অনায়াসে জেতা যেত।

আমার প্রশ্ন, যে ব্যাটসম্যান রানের মধ্যে নেই, তাঁকে কেন শুরুতে রিভার্স সুইপ করতে হবে! যাঁর ফর্ম নেই, তিনি কেন বাইরের বল তাড়া করতে যাবেন? আর দলের মধ্যে এত ডানহাতি–বাঁহাতি কম্বিনেশন নিয়ে ভাবনা কেন? এমন উইকেটে খেলে বেশ অভ্যস্ত বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসকে খাটো না করেই বলছি, তাদের বোলিং আক্রমণ এমন আহামরি নয়। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা জোর করে আউট হয়েছেন, কেউ থাকার চেষ্টা করেননি। মনে হয়েছে, খেলোয়াড়দের শুধু শরীরটাই মাঠে নেমেছে, মনের সঙ্গে সংযোগ নেই। এমন হলেই ক্যাচ পড়ে, বাজে শটে আউট হতে হয়, রানিং বিটুইন দ্য উইকেট বাজে হয়।

প্রস্তুতিতে ঘাটতি আছে বলেও মনে হচ্ছে। দলের অধিনায়ক থেকে শুরু করে সবার অবস্থাই খারাপ। এতটা খারাপ কীভাবে হলো, সেটি আমি জানি না। খেলোয়াড়দের মাথার মধ্যে কী ছিল জানি না। তাঁরা কি দায়িত্বটা ভুলে গেছেন? ফিল্ডিং ভালো হয়নি, ব্যাটিং দিয়ে সেটি পুষিয়ে দেওয়া যাবে—এমন মনোভাবও দেখিনি।

বিশ্বকাপ এখন বাংলাদেশের জন্য শুধু অংশগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা। যারা ভবিষ্যতের খেলোয়াড়, তাদেরও অনুপ্রেরণা জোগাতে পারছে না। নেদারল্যান্ডস লড়াই করেছে, তাদের অভিনন্দন। বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা দলটির ইচ্ছাশক্তি ছিল। তাদের কাছ থেকেও আমাদের শেখার অনেক কিছু আছে।

গাজী আশরাফ হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক