লিটনের ওপেনিংয়ে আসা উচিত

প্রস্তুতি ম্যাচ ভেসে যাওয়া, ফ্লাইট জটিলতা—সবকিছুর পরও হোবার্টে আউটডোরে অনুশীলন করার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ দল। সেটি স্বস্তির। শুরুতে হয়তো ধরে নেওয়া হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে আরেকটি দল আসবে এই গ্রুপে।

তবে নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়েকে পাওয়া গেছে। খেলা শুরুর আগে মানসিক দিক দিয়ে একটু নির্ভার থাকার সুযোগ মিললেও প্রথম রাউন্ডে যা ঘটেছে, এরপর খুব একটা স্বস্তিতে থাকার উপায় নেই।

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রথম কাজটা হচ্ছে, আমাদের সেরা একাদশ তৈরি করা। আমার বিশ্বাস, দ্বিতীয় ওপেনার সৌম্যই ওপেনিংয়ে এগিয়ে থাকবে, অন দ্য রাইজ খেলার সামর্থ্য আছে তার। দলটিকে গোছানোর জন্য লিটনের ওপেনিংয়ে আসা উচিত। সাকিব, আফিফ, ইয়াসির, নুরুলের সঙ্গে মোসাদ্দেকই হয়তো এগিয়ে থাকবে।

অনুশীলনে সাকিব–সুজনের সঙ্গে লিটন

নেদারল্যান্ডস দলে প্রথম আটজনের সাতজনই ডানহাতি ব্যাটসম্যান, ফলে অফ স্পিনারের চেয়ে অন্য বোলাররা কার্যকর হতে পারে। তবে নাসুম ঠিক ছন্দে আছে কি না, নিশ্চিত না। মাঠের আকৃতিও মাথায় রাখতে হবে। এ দলগুলোও এখন স্পিন ভালো খেলে। এদের কয়েকজনের অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার বয়সভিত্তিক দলে খেলারও অভিজ্ঞতা আছে।

হাসান, তাসকিনের সঙ্গে মোস্তাফিজের মতো নাম হয়তো নেদারল্যান্ডসের ওপর চাপ তৈরি করবে। তবে মোস্তাফিজের অ্যাকশনে ত্রুটি খুঁজে পেয়েছেন শ্রীরাম, সংবাদমাধ্যমে এমন কিছু শুনছি। তাহলে তো শরীফুলই এগিয়ে থাকবে। আমি পাঁচজন স্বীকৃত বোলারকে চাই, সঙ্গে পার্টটাইমার যারা আছে। ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের ম্যাচ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত, বোলিংয়ে অপশন না থাকলে কী হয়।

হোবার্টের উইকেট ম্যাচের কোনো একটা ভাগে ব্যাটিংয়ের জন্য মোটামুটি সহায়ক মনে হয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের ম্যাচেও দেখেছি। বল ব্যাটে আসছিল। কাল যদি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আয়ারল্যান্ড পরে ব্যাটিং করত, তাহলে অমন কিছু হতে পারত। সে ক্ষেত্রে টসটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

প্রস্তুত হচ্ছেন সৌম্য

নেদারল্যান্ডসের ব্যাটিংকে যথেষ্ট পেশাদার মনে হয়েছে। ইংল্যান্ডে খেলে ওরা। ম্যাক্স ও’ডাউড বেশ হিসাব করে খেলে। বাস ডি লিডি ভালো অলরাউন্ডার। তাদের বোলিং আক্রমণ নিয়ে বেশ মুগ্ধ আমি।

পল ফন মিকিরানকে ওদের সেরা বোলার মনে হয়েছে, উচ্চতা ও গতি আছে। ফ্রেড ক্লাসেন বল সেভাবে ভেতরে আনে না যদিও। টম প্রিঙ্গল তো পাওয়ারপ্লেতেও করে। টার্ন করানোর সামর্থ্য দেখেছি। ওদের বোলিংয়ে বৈচিত্র্য আছে। ফিল্ডিংয়ে বেশ অ্যাথলেটিক। লম্বা হওয়ার কারণে রানিং বিটুইন দ্য উইকেটেও ভালো ওরা।

আমাদের যথেষ্ট ভালো ব্যাটসম্যান আছে। সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে পেলে বড় ব্যবধানে জেতার আশা করি। তবে বিপরীত পরিস্থিতিতে যদি পড়ি, কঠিন কন্ডিশনে ব্যাটিং বা বোলিং করতে হলে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। গতকাল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ একটা শিক্ষা। কীভাবে ধৈর্য ধরলে পরিস্থিতির আলোকে ভালো ক্রিকেট খেলা যায়। কী দরকার, পরিস্থিতিই বলবে।

উইকেট যদি আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে না দেয়, রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করার জন্য মন দিতে হবে তখন। আমার বিশ্বাস, নেদারল্যান্ডস আমাদের বিপক্ষে ভালো একটা সুযোগ দেখছে গ্রুপে অন্য দলগুলোর তুলনায়। টুর্নামেন্টের শুরুতে মোমেন্টাম ধরাটা তো গুরুত্বপূর্ণ।

অনুশীলনে লিটন–মোসাদ্দেক–মিরাজ

শেষ একটি কথা। গতকাল সাকিবের সংবাদ সম্মেলন দেখে মনে হলো, ব্রিসবেনের বিচ্ছিন্ন ঘটনার প্রভাব হয়তো যায়নি। ঠান্ডা মাথায় কিছু সামলানো না গেলে মাঠেও সেটির প্রভাব থাকতে পারে।

ব্যাটিং করতে গেলে যেমন বিভিন্ন বল খেলতে হয়, সংবাদ সম্মেলনেও তো প্রশ্ন নানা রকম হবে। তবে এ ক্ষেত্রে অধিনায়ক বলে দলের প্রতিনিধি হিসেবে তাকে আরেকটু বিনয়ী হতে হবে। একইভাবে সাংবাদিক ভাইদেরও অত প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত হবে না।