ঝোড়ো ফিফটি করার পথে জেসন রয়ের বাউন্ডারি
ঝোড়ো ফিফটি করার পথে জেসন রয়ের বাউন্ডারি

আইপিএল

সাকিবের বদলি জেসন রয়েই অবশেষে জিতল কলকাতা

প্রথমবার আইপিএলে একই দলে খেলার সুযোগ এসেছিল দুই বাংলাদেশির। লিটন দাস সুযোগটা লুফে নিলেও সাকিব আল হাসান পারিবারিক কারণে সরে দাঁড়ান।

সাকিবের বদলি হিসেবে কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে ভেড়ায় জেসন রয়কে। ৩২ বছর বয়সী এই ইংলিশ ওপেনার কলকাতার হয়ে অভিষেকে করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৪৩। পরের ম্যাচেও দলের সেরা ব্যাটসম্যান রয়। চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে মাত্র ২৬ বলে করেন ৬১। ওই ম্যাচে অবশ্য পাঁচে ব্যাট করতে নামেন তিনি।

ব্যাটিং অর্ডার পাল্টিয়েও অবশ্য লাভ হয়নি। কলকাতা হারতে থাকায় রয়ের দুটি ইনিংসই বৃথা যায়। আজ ওপেনিংয়ে ফিরে আরেকটি ঝোড়ো ফিফটি তুলে নেন রয়। তবে এবার আর আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়নি। উল্টো তাঁর ৫৬ রানের ইনিংসে ম্লান হয়ে গেছে বিরাট কোহলির লড়াকু ফিফটি। কলকাতাও অবশেষে পেয়েছে স্বস্তির জয়।

কোহলির নেতৃত্বে উড়তে থাকা রয়্যাল চ্যাঞ্জেলার্স বেঙ্গালুরুকে ২১ রানে হারিয়েছে কলকাতা। এম. চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে রয়ের ওই ফিফটির পর অধিনায়কোচিত ইনিংস (২১ বলে ৪৮) উপহার দেন নীতীশ রানা। তাতে কলকাতা ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ২০০ রান। জবাবে বেঙ্গালুরু ৮ উইকেট হারিয়ে থামে ১৭৯ রানে।

কোহলি আউট হতেই বেঙ্গালুরুর হার প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়

এর আগে কলকাতা সর্বশেষ কবে জিতেছিল, এতক্ষণে নিশ্চয় মনে করতে পেরেছেন। রিংকু সিংয়ের শেষ পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কার সেই অনন্য কীর্তি গড়ার দিনে। আইপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটান্‌সের বিপক্ষে ওই জয়ের পর সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্‌স, দিল্লি ক্যাপিটালস ও চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হারে শাহরুখ খানের দল। আর এক ম্যাচ হারলেই প্লে অফে ওঠা যখন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ত, ঠিক তখনই ঘুরে দাঁড়াল দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা।

দিল্লির বিপক্ষে নিজের আইপিএল অভিষেকে ব্যাট হাতে মাত্র ৪ রান করেন লিটন। কিপিং ছিল আরও গড়পড়তা মানের। সেটার মাশুল দিতে হচ্ছে তাঁকে। চেন্নাইয়ের পর আজ বেঙ্গালুরুর বিপক্ষেও লিটনকে বসিয়ে রাখে কলকাতা।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা কলকাতার হয়ে আজ রয়ের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন নারায়ণ জগদিশান। রয় শুরু থেকে চালিয়ে খেললেও জগদিশান সুস্থির। তাঁর ২৯ বলে ২৭ রানের ইনিংস টি–টোয়েন্টির দাবি মেটাতে না পারলেও রয়ের সঙ্গে গড়ে তোলা ৮৩ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় কলকাতা।

১০ম ওভারে রয়–জগদিশান দুজনই আউট হলে রানপ্রবাহ কমে যায় কলকাতার। তবে অধিনায়ক রানার ঝোড়ো ৪৮ আর শেষ দিকে রিংকু সিং ও ডেভিড ভিসের ক্যামিওতে ২০০–এর কোটা ছুঁয়ে ফেলে তারা।

শেষ ৫ ওভারে কলকাতার ৬৯ রান তোলার কৃতিত্বটা অবশ্য বেঙ্গালুরুর ফিল্ডারদের। ৫ ও ১৯ রানে থাকতে ‘জীবন’ পান রানা। এরপরেই খোলস ছেড়ে বের হন। প্রথম ১৩ বলে ২০ রান করা রানা পরের ৮ বলে করেন ২৮! মূলত ব্যবধানটা সেখানেই গড়ে দেন।

হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে কলকাতা

ম্যাচ শেষে রানার দেওয়া দুই–দুইটি ক্যাচ ফসকানোকেই বেঙ্গালুরুর হারের কারণ হিসেবে সামনে এনেছেন কোহলি। বলেছেন, ‘আমরা ওদের হাতে ম্যাচ তুলে দিয়েছি।’

সংক্ষিপ্ত স্কোর

কলকাতা নাইট রাইডার্স : ২০ ওভারে ২০০/৫

(রয় ৫৬, রান ৪৮, আইয়ার ৩১; হাসারাঙ্গা ২/২৪, বৈশাখ ২/৪১, সিরাজ ১/৩৩)

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু : ২০ ওভারে ১৭৯/৮

(কোহলি ৫৪, লোমোর ৩৪, কার্তিক ২২; বরুণ ৩/২৭, রাসেল ২/২৯, সুয়াশ ২/৩০)

ফল : কলকাতা নাইট রাইডার্স ২১ রানে জয়ী।