>রিকি পন্টিং মনে করেন, টেস্টের ময়দানে বেন স্টোকসের বীরত্বের চেয়ে দারুণ কিছু তিনি তাঁর চোখের সামনে ঘটতে দেখেননি।
রিকি পন্টিংয়ে নিশ্চয়ই মন খারাপ! ইংল্যান্ডের ৯ উইকেট ফেলে দিয়েও হেডিংলিতে অস্ট্রেলিয়া শেষ পর্যন্ত জিততে পারল না। কিন্তু কোনো বীরের বীরত্বের কাছে তো হেরে যেতেও আনন্দ। পন্টিংয়ের অনুভূতিটাও এমন। বেন স্টোকস কাল যে ইনিংসটি খেলে ইংল্যান্ডকে জেতালেন, তেমন কিছু অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সফল অধিনায়কও টেস্টে আগে কখনো দেখেননি বলেই জানিয়েছেন।
দলের নিশ্চিত হারের সামনে দাঁড়িয়ে এমন অবিচলও থাকা যায়! উল্টোদিকে একের পর এক উইকেট পড়ছে। হারের শঙ্কা কালো মেঘ হয়ে ঘিরে ধরেছে, কিন্তু স্টোকস শেষ পর্যন্ত পাল্টা–আক্রমণ করে গেলেন। কী সে আক্রমণের ধরন! অস্ট্রেলীয় বোলাররা সবাই দিশেহারা, হিসাব-নিকাশ, পরিকল্পনা সবকিছুই ছত্রখান। টেস্ট ক্রিকেটে বীরত্বপূর্ণ ব্যাটিংয়ের ইতিহাস লিখতে গেলে স্টোকসের হেডিংলির ইনিংসটি আনতেই হবে। প্রথম ইনিংসে ৬৭ রানে অলআউট হয়ে টেস্ট জেতার কীর্তিটাই যেখানে ঘটল ১৩১ বছর পর, তার ওপর স্টোকসের বীরত্ব। ৩৫৯ তাড়া করতে নেমে ২৮৬ রানে ৯ উইকেট পড়ে যাওয়ার অনেকেরই স্টেডিয়াম ত্যাগ করার কথা, কিংবা টেলিভিশন বন্ধ করে দেওয়ার কথা। ইন্টারনেটে লাইভ স্কোর দেখতে থাকলে, সেটি বাদ দিয়ে অন্য কিছুতে মনোযোগ দেওয়ার কথা। অনেকে হয়তো তেমন কিছু করেছিলেনও। কিন্তু যাঁরা করেছিলেন, আফসোসটা নিশ্চয়ই এখন তাঁদের কুরে কুরে খাচ্ছে। ইতিহাসের সেরা টেস্ট ইনিংসের মর্যাদা অনেকেই দিচ্ছেন স্টোকসের ১৩৫-কে।
পন্টিং স্টোকসের এই ইনিংসকে দেখছেন টেকনিক্যাল দৃষ্টি দিয়েই, ‘দেখুন, স্টোকসের ইনিংসটিতে কোনো ভুল নেই। গোটা ইনিংসে তাঁকে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। অনেক পরিকল্পনা বদলাতে হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি সিদ্ধান্তই নিখুঁত।’
পন্টিংয়ের সেরা টেস্ট ইনিংস এটিই, ‘আমি নিশ্চিত, আমি টেস্ট ক্রিকেটের ময়দানে এর চেয়ে ভালো কিছু অতীতে দেখিনি। প্রথম ৬৪ বলে ২ রান করেছিল স্টোকস। কিন্তু আমার সব সময় মনে হয়েছে, স্টোকস যদি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে, তাহলে ইংল্যান্ডের জয়ের সম্ভাবনা থাকবে।’
স্টোকসের সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেওয়া আর পাল্টা আক্রমণের ব্যাপারটি পন্টিংয়ের দৃষ্টিতে দুর্দান্ত, ‘তার মারগুলো ছিল দুর্দান্ত। ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য ৭৩ রান দরকার ছিল, তখন সে মেরেছে। সে মেরেছে এমন একটা সময় যখন ইংল্যান্ডের ৯ উইকেট পড়ে গেছে। কোনো সন্দেহ নেই। তার পুরো ইনিংসই ছিল অবিস্মরণীয় ও অসাধারণ। আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না, আমি কী দেখলাম।’