>বল টেম্পারিং কাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফেরা অস্ট্রেলিয়ার ‘কলঙ্কিত ত্রয়ী’ ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ ও ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে নিয়ে ইংলিশ সমর্থকদের খোঁচানো শেষই হচ্ছে না যেন। গতকাল অ্যাশেজে এজবাস্টন টেস্টের তৃতীয় দিনে ওয়ার্নারকে আবারও দুয়ো দিয়েছে ইংলিশ সমর্থকেরা। তবে ব্যাপারটাকে ওয়ার্নার স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন। উল্টো ইংলিশ সমর্থকদের সঙ্গে রসিকতা করেছেন তিনি।
ইংল্যান্ডের কুখ্যাত ‘বার্মি আর্মি’র স্লেজিং থেকে অস্ট্রেলিয়ার ‘কলঙ্কিত ত্রয়ী’ যে রক্ষা পাবে না, সেটা অ্যাশেজ শুরু আগেই বোঝা গিয়েছিল বেশ। আর সেটাই হচ্ছে। বল টেম্পারিং কাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফেরা ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ ও ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে যখনই সুযোগ পাচ্ছে, দুয়ো দিচ্ছে ইংলিশরা। ওয়ার্নাররাও বুঝে গেছেন, দুয়ো শুনে মন খারাপ করে থাকলে বা উল্টো আক্রমণ করে লাভ নেই, বরং ব্যাপারটাকে হালকাভাবে নিলেই নিজের জন্য ভালো। গতকাল এই কৌশলই খাটিয়েছেন ওয়ার্নার। প্যান্টের দুই পকেট খুলে দেখিয়ে দিয়েছেন, পকেটে কিচ্ছুটি নেই!
দেড় বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কেপটাউন টেস্টে অভিনব উপায়ে সিরিশ কাগজ দিয়ে বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারি করে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন এই তিনজন। ওয়ার্নার-স্মিথদের এই কেলেঙ্কারির একটা গালভরা নামও দিয়েছে গণমাধ্যম—‘স্যান্ডপেপার গেট’। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বিশ্বকাপেই ফিরেছিলেন ওয়ার্নার আর স্মিথ, তবে টেস্টে ফিরলেন এই অ্যাশেজ দিয়েই। অ্যাশেজে ফিরেছেন ব্যানক্রফটও। ঐতিহ্যগতভাবে যেখানে অ্যাশেজে একে অপরকে ‘স্লেজ’ করার জন্য বিখ্যাত অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার তিন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে পচানোর এমন সুবর্ণ সুযোগ ইংলিশরা ছাড়বে কেন?
ছাড়েওনি। গত বৃহস্পতিবার ম্যাচ শুরু আগে অস্ট্রেলিয়ার মূল একাদশে স্টিভেন স্মিথের নাম ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে দুয়োধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে এজবাস্টনের চারপাশ। প্রথম ইনিংসে ২ রান করে ওয়ার্নার যখন ফেরত যাচ্ছিলেন, গ্যালারির এক অংশে থাকা ইংলিশ সমর্থকেরা উঠে দাঁড়িয়ে সঙ্গে করে আনা সিরিশ কাগজ দেখাতে থাকে তাঁর দিকে। সমর্থকদের এই কাণ্ড ভিডিও করে আবার টুইট করে ইংল্যান্ড ক্রিকেটও!
কেপটাউন-কাণ্ডের মূল হোতা দেখেই কিনা, ইংলিশদের প্রিয় লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন ওয়ার্নার। ওদিকে স্মিথের ব্যাট তুলনামূলকভাবে বেশি হাসছে দেখে বলে হয়তো স্মিথ অতটা বিদ্রূপের শিকার হচ্ছেন না। এদিকে গতকাল ফিল্ডিং করার সময়েও দুয়োর শিকার হয়েছেন ওয়ার্নার। বাউন্ডারি লাইনের পাশে ফিল্ডিং করছিলেন তিনি। কাছেই ছিল ইংলিশদের গ্যালারি। ব্যস, আর পায় কে! ওয়ার্নারকে কাছাকাছি দেখে সমানে দুয়ো দেওয়া শুরু করে ইংলিশরা, জিজ্ঞেস করে, পকেটে সিরিশ কাগজ আছে কি না। ওয়ার্নারও হাসতে হাসতে দুই পকেট উলটে বের করে দেখিয়ে দেন, আর অনুচ্চারে যেন বলে ওঠেন, ‘কিচ্ছু নেই পকেটে, এই দেখো!’
বাকি অ্যাশেজেও পার্শ্বকাহিনি হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার তিন খেলোয়াড়ের সঙ্গে ইংলিশ দর্শকদের এই ‘স্লেজিং’ চলতে থাকবে—এ কথা বলেই দেওয়া যায়!