ব্যাটিংটা ভালো হয়েছে আজ। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ১৮১ তুলে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহটা তুলে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহরা। ম্যাচটা কত সহজে জেতা যাবে—চোখ ছিল সেটিতেই। বোলাররা বাকি কাজটাও করে দিয়েছেন। ৮৪ রানের বিশাল জয়ে সুপার ১২ রাউন্ড নিশ্চিত করে ফেলেছে বাংলাদেশ। পাপুয়া নিউগিনি গুটিয়ে গেছে ৯৭ রানেই। এটি টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাচ্ছে কিনা, সেটি অবশ্য নির্ভর করছে ওমান–স্কটল্যান্ড ম্যাচের ওপর।
বাংলাদেশের বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি পাপুয়া নিউগিনির অনভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা। সাকিব আল হাসান ৪ ওভার বোলিং করে ৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। চতুর্থ উইকেট তুলে নিয়ে এ মুহূর্তে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট-শিকারি বোলার হিসেবে তিনি ব্রাকেটবন্দী হয়েছেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে। দুজনেরই উইকেট-সংখ্যা ৩৯। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা বোলিংটাও আজ করলেন সাকিব।
বাংলাদেশের ১৮১ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে পাপুয়া নিউগিনির দুই ওপেনার তুলে ফেলেছিলেন ১১ রান। এর পরপরই নামে ধস। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এলবিডব্লু করে ফেরত পাঠান লেগা সিয়াকাকে। এরপর স্কোরবোর্ডে আরও ৩ রান যোগ করতে না করতেই আরও তিন উইকেট হারিয়ে বসে পাপুয়া নিউগিনি। আউট হন—আসাদ ভালা, চার্লস আমিনি ও সিমন আটাই। আমিনি ও আটাইয়ের উইকেট নেন সাকিব আল হাসান, ভালাকে উইকেটের পেছনে নুরুল হাসানের ক্যাচে পরিণত করেন তাসকিন আহমেদ। চার্লস আমিনি আজ দারুণ এক ক্যাচে ফিরিয়েছিলেন সাকিবকে। কিন্তু আমিনিকে সাকিবের বলে যে ক্যাচটিতে ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম, সেটির সঙ্গে আমিনির সেই দুর্দান্ত ক্যাচের ভালোই প্রতিযোগিতা হবে। দুর্দান্ত ছিল সেই ক্যাচটি।
১৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ম্যাচে আর কিছু থাকে না। পাপুয়া নিউগিনিও ঘুরে দাঁড়ানোর মতো কিছু করতে পারেনি। উল্টো নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে তারা। তাদের ব্যাটসম্যানরা যেন বাংলাদেশের বোলিংয়ের সামনে রান নেওয়ার কথাও ভুলে গিয়েছিলেন। তারা ৫ম উইকেট হারিয়েছে ২৪ রানের মাথায়, ২৪ রানেই গেছে ষষ্ঠ উইকেট। সপ্তম উইকেট পড়ে ২৯ রানে। পাপুয়া নিউগিনি কত দ্রুত অলআউট হবে, এমন ভাবনার মধ্যেই চ্যাড সোপার আর কিপলিং ডরিগা যোগ করেন ২৫ রান—পাপুয়া নিউগিনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বনিম্ন রানের লজ্জাটা এড়ায়। কিন্তু ১২ বলে ১১ রান করে চ্যাড সোপার ফেরেন সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হয়ে।
এরপর কাবুয়া ভাগি-মোরেয়া আর ডরিগা আরেকটি ২৫ রানের জুটি গড়ে মুখরক্ষার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কাবুয়া মোরেয়া হন রানআউট। তবে ডরিগা শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে দলের সংগ্রহকে একটা ভদ্রোচিত চেহারা দেন। বাংলাদেশি বোলারদের কিছুটা এলোমেলো বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে ডরিগা ৩৪ বলে ৪৬ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন। তাঁর ব্যাটেই পাপুয়া নিউগিনির সংগ্রহ ৯৭ পর্যন্ত গিয়েছে।
সাকিব ৯ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। তবে মোস্তাফিজ ছিলেন আজ নিষ্প্রভ। ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে উইকেটশূন্য তিনি। সাইফউদ্দিন ২১ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। তাসকিনও ভালো বোলিং করেছেন। তিনিও দুই উইকেট নিয়েছেন ৩.৩ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে। ২০ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান।