>রাজশাহী কিংসের ৭ ম্যাচের তিনটিতেই বসে ছিলেন। যে চার ম্যাচ খেলেছেন, তার তিনটিতে পুরো চার ওভার বোলিং করার সুযোগ পাননি। আজ কামরুলের এক ওভারই হয়তো বদলে দিতে পারে সব।
১৯তম ওভারেই খেলার শেষ টেনে দিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। শেষ ওভারটা তাই করাই হলো না কামরুল ইসলামের। এই একটা আক্ষেপ কামরুলের থাকতেই পারে। আগের ওভারেই ৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন ৪ বলে। আগে উইকেট পেয়েছিলেন আরও একটি। শেষ ওভারটা পেলে ৫ উইকেট হয়তো হয়েই যেত। এবারের বিপিএলে প্রথম সেঞ্চুরির ম্যাচে প্রথম ৫ উইকেটটাও হয়তো দেখা হয়ে যেত। বিপিএলের রেকর্ডের খাতায় ৫ উইকেট নিয়ে নাম লিখিয়েছেন ১১ জন। সংখ্যাটি এক ডজনে নিয়ে যাওয়া হলো না কামরুলের।
এই ব্যক্তিগত অপ্রাপ্তিটুকু বাদ দিলে কামরুলের আর কিছু চাওয়ার নেই। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে অতি জরুরি জয় পেয়েছে তাঁর দল রাজশাহী কিংস। ৩ ওভার বল করে ১০ রানে ৪ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ৪ উইকেটের দুটি আবার তামিম ইকবাল ও শহীদ আফ্রিদির। অন্য প্রান্তে মোস্তাফিজুর রহমান ঠাসা বোলিংয়ে যে চাপটা তৈরি করেছিলেন, সেটার পুরো ফায়দা উশুল করেছেন কামরুল। নিজেও ফাঁসটা আলগা হতে দেননি। তিন ওভারেই ১৩টি ডট। বাউন্ডারি হজম করেছেন মোটে একটি।
এর মধ্যে সবচেয়ে উর্বরা হয়ে এল নিজের তৃতীয় ও ইনিংসে ১৮ নম্বর ওভারটি। মোস্তাফিজের আগের দুই ওভারে নাকাল হওয়া আফ্রিদি মরিয়া হয়ে মারতে গিয়ে প্রথম বলেই ক্যাচ দিলেন। তৃতীয় বলে কাভারে ডসনকে মিরাজের ক্যাচ বানালেন। চতুর্থ বলে সাইফউদ্দিনকে ইভান্সের ক্যাচ বানিয়ে হ্যাটট্রিকের সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। হ্যাটট্রিকটা হলো না। তবে ওই ওভারে বৈধ চারটি ডেলিভারির মধ্যেই তিন ব্যাটসম্যানকে দেখিয়ে দিলেন সাজঘর। ৯ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লা ততক্ষণে খাদের কিনারে। পরের ওভারে মোস্তাফিজুরের বলে মেহেদী হাসান আউট হলে শেষ ওভারটি আর করাই হলো না কামরুলের।
এবারের বিপিএলে তাসকিনের আহমেদের পাশাপাশি বোলার কামরুল ইসলামকে ফিরে পাওয়া বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সুখবর। তাসকিন এরই মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় শীর্ষে চলে গেছেন (৭ ম্যাচে ১৪ উইকেট)। ৪ ম্যাচে ৭ উইকেট নেওয়া কামরুল অনেক পেছনে। তবে যে ৪ ম্যাচে সুযোগ পেয়েছেন, প্রতিবারই নিজের কাজটা ঠিকমতো করেছেন।
ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ১ উইকেট। খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে ৩ ওভারে ১৬ রান। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ২ ওভারের ২২ রান দিয়ে আর বোলিংয়ে ফিরতে পারেননি, তবে ওই ম্যাচে বিস্ফোরণের আভাস দেওয়া ক্রিস গেইল, আর বিস্ফোরণ ঘটাতে ওপেনারের ভূমিকায় নামা মাশরাফি বিন মুর্তজা ছিলেন তাঁর শিকার।
তবু দলের তিন ম্যাচে একাদশে জায়গা পাননি। আজকের ম্যাচটি ব্যক্তিগত অর্জনে আরেকটি জায়গায় কামরুলের প্রাপ্তি হয়ে থাকল। এবার একাদশে নিয়মিত সুযোগ আর পুরো ম্যাচে ৪ ওভার বোলিংয়ের আস্থা, দুটোই হয়তো অর্জন করবেন!