খালেদদের আজ অলৌকিক কিছুই করতে হবে
খালেদদের আজ অলৌকিক কিছুই করতে হবে

১০০ রানের কম লক্ষ্য, তবু হেরেছে যে দুদল

৮৪ রানের লক্ষ্য। অ্যান্টিগা টেস্টের তৃতীয় দিনে কাল সেই লক্ষ্য ছুঁতে নেমে ৯ রানেই তৃতীয় উইকেট খোয়াল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩টি উইকেটই পেলেন বাংলাদেশের পেসার খালেদ আহমেদ। সাকিব আল হাসানের দল নিশ্চিত অবিশ্বাস্য কিছু করার স্বপ্নই দেখতে শুরু করেছিল তখন। ১৪৫ বছরের ইতিহাসে এত কম পুঁজি নিয়ে যে টেস্ট জেতেনি কোনো দল।

টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে ১০০ রানের কম লক্ষ্য পেয়েও হারার ঘটনা মাত্র দুটি। টেস্টের আদি যুগে সেই ১৮৮২ সালে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৮৫ রানের লক্ষ্য ছুঁতে নেমে ৭৭ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। ইংলিশদের এই লজ্জাই জন্ম দিয়েছে অ্যাশেজের।

ইংল্যান্ডের দুর্দশা থেকেই জন্ম অ্যাশেজের

সফরের একমাত্র ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে অলআউট মাত্র ৬৩ রানে। ফ্রেড ‘ডেমন’ স্পফোর্থ ৭ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস থামিয়ে দেন ১০১ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৬ রানের উদ্বোধনী জুটির পরও অস্ট্রেলিয়া করতে পারে মাত্র ১২২ রান। ৮৫ রানের লক্ষ্য, আবার দানবও হলেন স্পফোর্থ, এবারও নিলেন ৭ উইকেট। ইংলিশ ক্রিকেটের ‘মৃত্যু’ ঘটিয়ে ইংল্যান্ড অলআউট ৭৭ রানে।

অ্যামব্রোস–ওয়ালশরা অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে

অন্য ঘটনাটি ‘মাত্র’ ২২ বছর আগের। ২০০০ সালে পোর্ট অব স্পেনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯৯ রানের লক্ষ্য ছুঁতে নেমে চতুর্থ ইনিংসে ৬৩ রানে অলআউট জিম্বাবুয়ে।

প্রথম ইনিংসে ১৮৭ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের ১১৩ রান জিম্বাবুয়েকে ৪৯ রানের লিড এনে দেয়। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়া জিম্বাবুইয়ান পেসার হিথ স্ট্রিক দ্বিতীয় ইনিংসে পেলেন ৫ উইকেট, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার অলআউট ১৪৭ রানে। ৯৯ রানের লক্ষ্য ছুঁতে নামা জিম্বাবুইয়ানদের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে যায় ক্যারিবীয় পেস আক্রমণে। ফ্রাঙ্কলিন রোজ (৪), কার্টলি অ্যামব্রোস (৩), কোর্টনি ওয়ালশ (২) ও রেওন কিংরা (১) জিম্বাবুয়েকে ৬৩ রানে অলআউট করে অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।

এবারের আগে ৩২ বার ১০০ রানের কম লক্ষ্য ছুঁতে নেমে ৩২ বারই জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এদের মধ্যে মাত্র দুবার সর্বোচ্চ ৩ উইকেট হারাতে হয়েছিল দলটিকে।

জিম্বাবুয়েকে লজ্জা উপহার দেওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা আবার ১০০ রানের কম লক্ষ্য হেসেখেলেই ছুঁতে ভালোবাসে। এবারের আগে ৩২ বার ১০০ রানের কম লক্ষ্য ছুঁতে নেমে ৩২ বারই জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এদের মধ্যে মাত্র দুবার সর্বোচ্চ ৩ উইকেট হারাতে হয়েছিল দলটিকে। প্রথমবার ১৯৪৮ সালে গায়ানার জর্জটাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ও ১৯৮৯ সালে জ্যামাইকার কিংস্টনে ভারতের বিপক্ষে।

তবে ভারত ও ইংল্যান্ড বাংলাদেশের মতো এত কম রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে পারেনি। ভারতের বিপক্ষে ৫৮ রানের লক্ষ্য ছুঁতে নেমে ৫৪ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ক্যারিবীয়রা ২৬ রানে হারায় প্রথম ৩ উইকেট।

দেখা যাক বাংলাদেশ আজ আরও উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের নতুন কিছু উপহার দিতে পারে কি না। আর ‘অলৌকিক’ কিছু হয়ে গেলে তো নতুন ইতিহাসই রচিত হবে অ্যান্টিগায়।