তাঁর বোলিং ঠিক ভয় জাগায় না। ফাস্ট বোলারদের জন্য আদর্শ উচ্চতা কিন্তু বলে সেই গতি নেই, নেই ভয়ংকর বাউন্সারের ছোবলও। তাই প্রতিপক্ষ যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস আক্রমণ নিয়ে ভাবতে বসে, জেসন হোল্ডারের নামটা ঠিক চিন্তা জাগায় না। কিন্তু সেই হোল্ডারই গত ১০০ বছরের সেরা পেস বোলিংয়ের রেকর্ড গড়ে ফেললেন আজ। টেস্টে গত ১০০ বছরের ইতিহাসে এক বছরে অন্তত ৩০ উইকেট পেয়েছেন, এমন পেসারদের মধ্যে হোল্ডারের গড়ই সবচেয়ে কম।
৩০৮ রানে দিন শুরু করা ভারত আজ ৬ উইকেট হারিয়ে আর মাত্র ৫৯ রান তুলতে পেরেছে। কৃতিত্ব ক্যারিবীয় অধিনায়ক হোল্ডারের। প্রথমে আগের দিন গাঁট হয়ে বসে থাকা অজিঙ্কা রাহানেকে ক্যাচ তুলতে বাধ্য করেছেন। তারপর শূন্য হাতে ফিরিয়েছেন আগের টেস্টেই সেঞ্চুরি পাওয়া রবীন্দ্র জাদেজাকে। কুলদীপ যাদবকে বোল্ড করে ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট বুঝে নিলেন। এর মাঝে এ বছরই চারবার! যাদবের উইকেট দিয়ে এ বছর টেস্টে ৩৩ উইকেট পেলেন হোল্ডার। মাত্র ৬ টেস্টেই!
হায়দরাবাদ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংস এখনো চলছে। ভারত মাত্র ৭২ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নামায় উইকেটসংখ্যা খুব বেশি হয়তো বাড়ছে না আর। তবে নভেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশ সফরে সুযোগ মিলবে তাঁর। ক্যারিয়ারের একমাত্র ১০ উইকেট পাওয়ার কীর্তি তো তাঁর বাংলাদেশের বিপক্ষেই।
এর আগে অবশ্য একটি রেকর্ড হয়েছে হোল্ডারের। টেস্টে গত ১০০ বছরের ইতিহাসে এক বছরে অন্তত ৩০ উইকেট পেয়েছেন, এমন পেসারদের মধ্যে হোল্ডারের গড়ই সবচেয়ে কম। এ বছর চলতি টেস্টের প্রথম ইনিংস পর্যন্ত ১১.৮৭ গড়ে একেকটি উইকেট পেয়েছেন উইন্ডিজ অধিনায়ক। এর আগে এ রেকর্ডটি ছিল শোয়েব আখতারের। ২০০৩ সালে মাত্র ৪ টেস্টে ৩০ উইকেট পেতে গড়ে মাত্র ১২.৩৬ রান দিয়েছিলেন পাকিস্তানি স্পিড স্টার। পাকিস্তানি এই পেসার রেকর্ডটা বুঝে নিয়েছিলেন বুদ্ধিদীপ্ত পেস বোলিংয়ের শেষ কথা রিচার্ড হ্যাডলির কাছ থেকে। ১৯৮৪ সালে ১০ টেস্টে ৩৫ উইকেট পেতে কিউই কিংবদন্তির উইকেটপ্রতি খরচ হয়েছিল মাত্র ১৩.২০ রান।
টেস্ট ইতিহাসে এক বছরে সবচেয়ে কিপটে বোলিং করে ৩০ উইকেট পাওয়ার রেকর্ড সম্ভবত আধুনিক জগতে আর ভাঙা সম্ভব নয়। ১৮৮৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার চার্লি টার্নারের ৩৩ উইকেট পেতে ১০.৫৪ রান দেওয়ার রেকর্ডের ধারে কাছে তবু হোল্ডার যেতে পেরেছেন। কিন্তু ১৮৯৬ সালে জর্জ লোহম্যানের ৬.৭১ গড়ে ৩৮ উইকেটের রেকর্ড ভাঙা? এ আশা করা একটু কঠিনই। এক এক উইকেট পেতে মাত্র ৬.৭১ রান, ভাবা যায়?