শেষ ওভারের আগে ফরচুন বরিশালের পেসার কামরুল ইসলামের বোলিং ফিগার ছিল ৩ ওভারে ৩৯ রান। নামের পাশে কোনো উইকেট নেই। পুরো ইনিংসে মনে রাখার মতো কিছুই করেননি এই ডানহাতি পেসার।
কিন্তু সেই কামরুলই শেষ ওভারের এসে প্রথম তিন বলে নিলেন মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর ৩ উইকেট। পরের বলে চার খরচা করে পঞ্চম বলে আবার উইকেট। শেষ বলে ছক্কা। কামরুলের এক ওভারে কত ঘটনাই না ঘটল!
শেষ ওভারের আগে রাজশাহীর রান ছিল ৩ উইকেটে ২১০। ক্রিজে থাকা সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন আছেন ছক্কার নেশার। আরেক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান মাত্রই তাসকিন আহমেদকে উড়িয়েছেন ছক্কায়। কামরুলের ওভার শেষে রানটা অন্তত ২৩০-এ নিতে চাইতেই পারেন রাজশাহীর দুই ব্যাটসম্যান।
ডেথ ওভারে সাধারণত কামরুল বেশ ধারাবাহিক বোলার। ইয়র্কার দেওয়ার সামর্থ্যের কারণেই বাকিদের থেকে আলাদা এই ডানহাতি পেসার। কিন্তু আজ বরিশালের বাকি বোলারদের মতো তাঁর দিনটাও খারাপ গেল।
প্রথম ৩ ওভারে এলোমেলো লাইন-লেংথে প্রচুর রান খরচা করেন। শেষ ওভারেও একই ঘটনা ঘটবে, অনেকে সেটিই ধরে নিয়েছিল।
কিন্তু ঘটল উল্টোটা। মারতে গিয়ে একে একে উইকেট দিলেন রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা। ফুল লেংথের বলে যেমন কামরুলকে ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে লং অফ বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন নুরুল হাসান।
পরের বলটি করেন বাঁহাতি নাজমুলের শরীরের দিকে। সরে গিয়ে কাভার ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন কাভারে দাঁড়িয়ে থাকা কাভার ফিল্ডারকে। দুটি উইকেটের কোনো উদ্যাপন করেননি কামরুল ও বরিশালের ফিল্ডাররা।
হ্যাটট্রিক বলের বাড়তি আগ্রহও দেখা গেল না। ফরহাদ রেজা ঠিক নুরুলের মতো লং অফে ক্যাচ দিয়ে আউট হন।
কামরুলের ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক, কিন্তু তবু কোনো উদ্যাপন নেই। এটি ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে পঞ্চম হ্যাটট্রিক। এর আগে আল আমিন হোসেন দুবার হ্যাটট্রিক করেন।
পেসার মানিক খান ও স্পিনার আলিস আল ইসলামের হ্যাটট্রিক আছে ঘরোয়া ক্রিকেটে। পঞ্চম বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক তালিকায় যোগ দিলেন কামরুল।
কামরুলের ব্যক্তিগত অর্জনের দিনে অবশ্য বেশি স্মরণীয় হয়ে থাকার কথা রাজশাহীর ব্যাটিং।
নাজমুলের ১০৯ ও আনিসুলের ৬৯ রানে রাজশাহী করে ৭ উইকেটে ২২০ রান। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে বিশাল রান তাড়া করতে হবে তামিম ইকবালদের।
ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক:
আল আমিন হোসেন (বিসিবি একাদশ)—প্রতিপক্ষ আবাহনী লিমিটেড (২০১৩)।
আল আমিন হোসেন (বরিশাল বুলস)—প্রতিপক্ষ সিলেট সুপারস্টারস (২০১৫)।
আলিস আল ইসলাম (ঢাকা ডায়নামাইটস)—প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্স (২০১৯)।
মানিক খান (প্রাইম দোলেশ্বর)—বিকেএসপি (২০১৮)।
কামরুল ইসলাম রাব্বি (ফরচুন বরিশাল)—প্রতিপক্ষ মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী (২০২০)।