টেস্টে সর্বশেষ দুটি সিরিজে দলে ছিলেন না অফ স্পিনার নাঈম হাসান। মেহেদী হাসান মিরাজ চোট পাওয়ায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দলে ডাক পেয়েছেন এই তরুণ অফ স্পিনার।
আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সেই নাঈমের দিকেই সব মনোযোগ ছিল জাতীয় দলের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথের।
টেস্টে নাঈমের পায়ের তলায় মাটি শক্ত করতে দীর্ঘ সময় তাঁকে নিয়ে কাজ করেছেন হেরাথ। অনুশীলনের একটা সময় হেরাথকে কোচ নন, স্কোরারই মনে হচ্ছিল। নাঈম ওভারের ছয় বলে কত রান দিচ্ছেন, দূরে দাঁড়িয়ে সে হিসাবই করছিলেন হেরাথ।
হিসাবটা ভালোভাবে করতে হেরাথের হাতে ছিল ছয়টি কাগজের কার্ড। জাতীয় দলের ব্যাটসম্যানদের জন্য সাজানো নাঈমের কাল্পনিক ফিল্ডিংয়ে ওভারের প্রতিটি বল থেকে আনুমানিক কত করে রান এল, সেই হিসাবই রাখছিলেন হেরাথ। যেন অনুশীলন নয়, সত্যিকার ম্যাচই চলছিল। আর হেরাথ সেই ম্যাচের স্কোরার!
নাঈমের প্রতি ওভার শেষ হলেই স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসে পড়ে থাকা ছয়টি কার্ডের দিকে তাকিয়ে পুরো ওভারের বিশ্লেষণ করছিলেন হেরাথ। এ ওভারে কত রান এল, কেন এই বল থেকে চার রান এল, কী ধরনের বল করলে চারের জায়গায় রানটা এক অথবা দুই হতে পারত, গুরু-শিষ্যের আলোচনাটা ছিল এসব নিয়েই।
নাঈম যখন পরের ওভারের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন, তখন কার্ডগুলো গুটিয়ে পকেটে পুরে রাখেন হেরাথ। আবার প্রতিটি বল শেষে হেরাথ হয়ে যান নাঈমের স্কোরার। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের অনুশীলনে হেরাথ ও নাঈমের প্রথম দিনটা কেটেছে এভাবেই।
টেস্ট দলে থাকা স্পিনারদের মধ্যে তাইজুল ইসলাম আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। সর্বশেষ চার টেস্টের মধ্যে তিনবার ৫ উইকেট পেয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। অনুশীলনে আজ তাইজুলের বোলিংয়ের প্রশংসাই করেছেন হেরাথ। দারুণ ফ্লাইট, গতি, বাঁক—কী ছিল না তাইজুলের বোলিংয়ে!
নেটে ব্যাটিং করা জাতীয় দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তামিম ইকবালই শুধু তাইজুলের বল স্বাচ্ছন্দ্যে খেলেছেন। বেশ কয়েকবার তাইজুলকে উড়িয়ে ছক্কা মেরেছেন এই বাঁহাতি। দুজনের মধ্যে এ নিয়ে খুনসুটিও হয়েছে বেশ। দুবার লেগ দিয়ে তাইজুলের বলে ছক্কা মারার পর তামিমের প্রশ্ন, ‘দুইটা ছক্কা তো খাইলি। এখনো লেগ সাইডের ফিল্ডার ওপরে রাখবি?’
তাইজুলও নাছোড়বান্দা, ‘হ্যাঁ, ওপরেই রাখব।’ তামিমও হাল ছাড়ার পাত্র নন, ‘ম্যাচে দুই ছক্কা খাওয়ার পর ঠিকই তো ফিল্ডার পেছনে নিবি। ক্যাপ্টেন তোকে ছক্কা খাওয়ার পর ফিল্ডার ওপরে রাখতে দিবে?’ তামিমের কথা শেষ হতে না হতেই তাইজুল মুখে চওড়া হাসি টেনে বললেন, ‘আমিই অধিনায়ক। যা ইচ্ছা তা করব।’
দুজনের এই কথার যুদ্ধ থামে তাইজুলের বলে তামিমের আরও দুই ছক্কায়।