ব্রিসবেন—অস্ট্রেলিয়ার এই টেস্ট ভেন্যুর নাম শুনলেই যেন টেস্ট ক্রিকেটারদের বুকে কাঁপন ধরে। উইকেটের বাউন্স ও দর্শক—এই দুই চ্যালেঞ্জ নাকি অনেক টেস্ট ক্রিকেটারেরই ঘুম হারাম করে। আর অস্ট্রেলীয়রা যে এই ভেন্যুতে টেস্ট হারতেই জানে না! সেই ১৯৮৮ সালে ভিভ রিচার্ডসদের ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেই ব্রিসবেনে সর্বশেষ হারের স্বাদ পায় স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। এরপর হয় জয় না হয় ড্র। গত সাত টেস্ট ধরে তো জিতেই চলছে অস্ট্রেলিয়া।
অবিশ্বাস্য রেকর্ডের কারণে প্রতিবছর যেকোনো টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ ব্রিসবেনেই খেলে অস্ট্রেলিয়া। ২০১৭ অ্যাশেজের সময় সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভন বলেছিলেন, সিরিজের প্রথম ম্যাচেই মানসিকভাবে প্রতিপক্ষকে বিপর্যস্ত করার জন্যই স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ব্রিসবেনে প্রথম টেস্ট আয়োজন করে।
দুই বছর আগে ভারতের জোরজবরদস্তিতে এই সংস্কৃতি বদলায়। ২০১৮ সালে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারত অ্যাডিলেডে খেলতে চায়, ব্রিসবেনে নয়। শেষ পর্যন্ত তাই হয়। চার টেস্টের সিরিজে ব্রিসবেন পায়নি একটি টেস্টও। খেলা হয়েছে অ্যাডিলেড, পার্থ, মেলবোর্ন ও সিডনিতে।
এবারও নাকি ব্রিসবেন এড়ানোর সুযোগ খুঁজছে ভারত। ভালো অজুহাতও আছে ভারতের কাছে। ব্রিসবেনে খেলতে হলে কুইন্সল্যান্ড সরকারের করোনাভাইরাস মহামারির নিয়ম অনুযায়ী আরেকবার কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে ভারত দলকে। একই সফরে দুইবার কোয়ারেন্টিন করতে চায় না ভারত। সিরিজের শেষ টেস্টটি ব্রিসবেনের বদলে সিডনিতেই খেলতে চায় সফরকারীরা।
সাবেক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটাররা বিষয়টিকে দেখছেন একটু অন্যভাবে। সাবেক উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ব্র্যাড হাডিন ফক্স ক্রিকেটকে বলছিলেন, ‘ক্রিকেটীয় দিক থেকে যদি দেখি, তাহলে কেন ভারত গ্যাবায় যেতে চাইবে? গ্যাবায় কেউই জেতে না। অস্ট্রেলিয়া সেখানে ভালো খেলে আর কেউই দীর্ঘদিন ধরে সেখানে জয়ের দেখা পাচ্ছে না। এখানে অনেক চলমান ব্যাপার আছে। একটা বিষয় হচ্ছে জৈব সুরক্ষাবলয়। ছেলেরা অনেক দিন ধরে বলয়ে আছে। ওরা হয়তো কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু আপনি টেস্ট ম্যাচ সরাতে পারেন না। আপনি অস্ট্রেলিয়া আসার আগেই জানতেন নিয়ম কী হবে। হ্যাঁ, অনেক দিন ধরেই ওরা কোয়ারেন্টিনে। তবে সেটা কিন্তু সবার জন্যই। অস্ট্রেলিয়া দলকেও নিয়ম মানতে হবে। তারা তো অজুহাত দেখাচ্ছে না। আমার মনে হচ্ছে ওরা গ্যাবায় খেলতে চাচ্ছে না।’
কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের ঘরের ছেলে অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস আরও খোলামেলা মন্তব্য করেছেন। দুইবার বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ইঙ্গিত দিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পেশিশক্তির দিকে, ‘আপনি বিসিসিআইয়ের সঙ্গে লড়েছেন কখনো? তাদের বেশ শক্তিমত্তা আছে। এটা এখন কুইন্সল্যান্ড সরকারের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমার মনে হয় ভারত যা চাইছে তা পাবে।’