নির্বাচকদের দল নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বোর্ড সভাপতি।
নির্বাচকদের দল নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বোর্ড সভাপতি।

হারের পর দলকে হুমকি বিসিবি সভাপতির

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশ টেস্টে এখনো ম্যাচ কোনো ড্র করতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে সেটা বদলে যাবে বলে মনে হয়েছিল। পূর্ণ শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুই বছর আগে ধবলধোলাই করেছিল বাংলাদেশ। এবার অনেক দুর্বল এক দল নিয়ে এসেছে উইন্ডিজ। নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশ জিতবে এ সিরিজ। এমনটাই তো ভাবছিলেন দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।

বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মতোই ভাবছিলেন ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান। প্রথম টেস্টে কাইল মেয়ার্স ও এনক্রুমা বোনারের অবিশ্বাস্য সে জুটি বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয় টেস্টে হারের কারণ খুঁজতে অমন কোনো রেকর্ড গড়া কিছু দরকার হচ্ছে না। চার দিনই পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। বোর্ড সভাপতির চোখে দুই টেস্টেই বাজে খেলেছে বাংলাদেশ। আর এমন হারের পর ক্রিকেটারদের দিকে হুংকার ছুড়ে দিয়েছেন নাজমুল। বলে দিয়েছেন এভাবে আর চলতে দেওয়া হবে না।

ঘরের মাঠে স্পিন আক্রমণ দিয়ে প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু উল্টো প্রতিপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। অনভিজ্ঞ ক্রিকেটারে ভরা এক দলের কাছে এভাবে নাস্তানাবুদ হওয়া মেনে নিতে পারছেন না বিসিবি সভাপতি, ‘আমরা অবশ্যই খুবই বাজে ক্রিকেট খেলেছি এটাতে কোনো সন্দেহ নেই। দ্বিতীয় ম্যাচেও আমরা খারাপ খেলেছি, এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। আমরা প্রথম ইনিংসে ৪০০ করে ১৭১ লিড নিই। সেই ম্যাচও আমরা ধরে রাখতে পারি না দেশের মাটিতে। এখানে অনেক বড় সমস্যা। তা–ও আবার এমন না যে স্পিন অভিজ্ঞ ব্যাটিংয়ে ওই রকম একটা দলের সঙ্গে খেলেছি এমনও নয়। তুলনামূলকভাবে একটা নতুন দল। মোটামুটি নতুন একটা দল।’

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের দক্ষতার চেয়েও মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বোর্ড সভাপতি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনারদের কাছে সবাই উইকেট বিলিয়ে এসেছেন। এক যুগ ধরে খেলছেন, এমন ক্রিকেটারদের মধ্যেও এমন আচরণ দেখে হতভম্ব নাজমুল, ‘একটা না, এখানে অনেক সমস্যা। প্রথম ইনিংস দেখে মনে হচ্ছে আমরা ম্যাচটা ছেড়ে দিচ্ছি। আমরা যেভাবে উইকেট দিয়ে এসেছি, এটা আমি কোনো দলের মধ্যে দেখিনি। কোনো দলকে দেখিনি টেস্ট খেলতে গিয়ে একাধিক খেলোয়াড় বারবার এই রকম করে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসছে। সত্যিই খারাপ লেগেছে। একটা ভালো বলে আউট হতেই পারে। কিন্তু যে বলে আউট হয়েছে! যেমন মুশফিকের বলটা ঠিক আছে টার্ন করেছে, বাকি যে বলগুলো আপনি দেখেন আর যেভাবে আউট হয়েছে, এটা অন্তত আশা করা যায় না। কোনোভাবেই আশা করা যায় না।’

এমন কিছু দেখতে হবে ভাবেননি নাজমুল।

এরপরই ক্রিকেটারদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছেন নাজমুল। বলে দিয়েছেন, দলের সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছেন। দল যেভাবে চলছে, সেটা আর দেখতে চান না বোর্ড সভাপতি, ‘এভাবে তো চলতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু হঠাৎ করে এখনই পরিবর্তন করে ফেলব তা না। কিন্তু নিশ্চয় এখন সময় এসেছে জিনিসগুলো দেখার। কারণ, আমাদের আগে এ রকম কখনো হয়নি। আমরা এর আগে অনেক খেলা খেলেছি বাংলাদেশে। হারতে পারি, হারা নিয়ে তো কোনো কথা না। কিন্তু একটা দল আসবে আমরা ঘোষণা করে দেব, “আমরা নিশ্চিত জিতে যাব ২৫০ হলেই যথেষ্ট।” যেখানে ৩৯৫–ও আমরা ঠেকাতে পারব না, পঞ্চম দিনে এসে ডাবল সেঞ্চুরি করে ফেলবে। এগুলো তো গ্রহণযোগ্য না।’