ওয়ানডেতে এর আগেও দুটি সেঞ্চুরি করেছেন হারমানপ্রীত কৌর। কিন্তু পরশুরটি বলতে গেলে তাঁকে রাতারাতি বিখ্যাত করে দিয়েছে। ভারত ও ভারতের বাইরে কস্মিনকালেও তাঁর নাম যাঁরা শোনেননি, তাঁরাও এখন জানেন কৌর নামে একজন ব্যাটার আছেন ভারতের নারী দলে। উইকেটে যাঁর আগ্রাসন ঠিক বিরাট কোহলির মতো, জোরে বলে মারেন বীরেন্দর শেবাগের মতো!
হারমানপ্রীত কৌরের বোন হেমজিত কৌরের দাবি, ‘হারমানের চিন্তাটা সব সময়ই ইতিবাচক। মাঠে সে সব সময় কোহলির মতো, ঠিক তার মতোই আগ্রাসন। তবে মাঠের বাইরে সে খুবই শান্ত, ধীর। ছোটবেলা থেকেই বীরেন্দর শেবাগকে আদর্শ মেনে বড় হয়েছে সে। ব্যাটিংটাও সে করে শেবাগের মতো।’
পরশু মহিলা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কৌর খেলেছেন ১৭১ রানের হার না-মানা ইনিংস। ইংল্যান্ডের ডার্বিশায়ারে ১১৫ বলের তাঁর এই ইনিংসটি চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে ছিটকে ফেলে টুর্নামেন্টের ফাইনালে তুলে দিয়েছে ভারতকে। ২০টি চার ও ৭টি ছয়ে সাজানো এই ইনিংসটির সঙ্গে কেউ কেউ তুলনা করছেন ১৯৮৩ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কপিল দেবের খেলা অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংসটির সঙ্গে। ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে তো বলেই দিলেন, ‘এই ইনিংসটি পুরোপুরি টানব্রিজ ওয়েলসে খেলা কপিলের সেই ইনিংসের মতো।’
তিরাশির বিশ্বকাপে ৯ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর মাঠে নেমে ঝড় তুলেছিলেন কপিল। কৌর ব্যাটিংয়ে নামার সময় ভারতের অবস্থা অবশ্য এতটা খারাপ ছিল না। তবে ৩৫ রানে ২ উইকেট খুইয়ে অস্বস্তিতেই পড়ে গিয়েছিল ভারত। আর বৃষ্টিবিঘ্নিত ৪২ ওভারের ম্যাচে যখন শেষ হলো ভারতীয় ইনিংস—রান ২৮১! এক অর্ধেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ম্যাচ, দেখার বাকি ছিল চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া কত রানে হারে সেটাই।
কপিল দেব অবশ্য কৌরের ইনিংসটির সঙ্গে নিজেরটিকে মিলিয়ে দেখেননি। শুধু জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এমন ইনিংস খেলতে দেখে গর্বে বুক ভরে যায়। শচীন টেন্ডুলকারের প্রশংসা, ‘অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করেছে সে!’ বিরাট কোহলিদের কোচ রবি শাস্ত্রী হারমানপ্রীতের উদ্দেশে টুইট করেছেন, ‘হারমানপ্রীত তুমি রকস্টার। এককথায় অসাধারণ।’ কোহলির টুইট, ‘কী ইনিংসটাই না খেলল হারমানপ্রীত।’ শেবাগ লিখেছেন, ‘আজীবন মনে রাখার মতো ইনিংস।’
৫০ ওভার থেকে ম্যাচটি ৪২ ওভারে নেমে না এলে হয়তো ডাবল সেঞ্চুরিটাও পেয়ে যেতেন কৌর। এই আক্ষেপ যদি থেকেও থাকে, আগামীকাল ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ট্রফি জিতে সেটি মুছে ফেলতে চাইবেন পাঞ্জাবের ২৮ বছর বয়সী এই মেয়ে। পারবেন কৌর? এএফপি, আইএএনএস।